শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা

আজীবন বহিষ্কার বুয়েটের ২৬ ছাত্র

বিভিন্ন মেয়াদে আরও ছয়জন

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়-বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যা ঘটনায় ২৬ ছাত্রকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করেছে বুয়েট কর্তৃপক্ষ। একই ঘটনায় জড়িত থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে আরও ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আবরারের পরিবার। তবে এ মামলার দ্রুত বিচার তারা আশা করছে।

গত বৃহস্পতিবার রাতে বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদফতরের পরিচালক ও বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনের সদস্যসচিব অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ সিদ্ধান্তের  কথা জানানো হয়। স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃত ২৬ জনের মধ্যে ২৫ জনই পুলিশের অভিযোগপত্র অনুযায়ী অভিযুক্ত। এর বাইরে বিশ^বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একজনকে আজীবন ও ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করা হয়।

স্থায়ীভাবে বহিষ্কৃতরা হলেন- মেহেদী হাসান রবিন, অনীক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মো. মনিরুজ্জামান মনির, মেহেদী হাসান রাসেল, মেফতাহুল ইসলাম (জিয়ন), মো. মুজাহিদুর রহমান, এহতেশামুল রাব্বী (তানিম), খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম (তানভীর), মুনতাসির আল জেমি, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মো. শামীম বিল্লাহ, মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম, হোসাইন মোহাম্মদ তোহা, মুজতবা রাফিদ, মো. মিজানুর রহমান, মো, আশিকুল ইসলাম, এস এম মাহমুদ, ইশতিয়াক আহমেদ (মুন্না), অমিত সাহা, মো. মাজেদুর রহমান, মো. শামসুল আরেফিন, মোয়াজ আবু হোরায়রা, মো. আকাশ হোসেন, মো. মোর্শেদ-উজ-জামান ম ল ও মুহতাসিম ফুয়াদ। বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তিপ্রাপ্তরা হলেনÑ আবু নওশাদ সাকিব, মো. সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ গালিব, মো. শাওন মিয়া, সাখাওয়াত ইকবাল অভি ও মো. ইসমাইল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন বলেন, ‘বুয়েট প্রশাসন ওদের ছাত্রত্ব চিরতরে বাতিল করেছে, তাতে আমি সন্তুষ্ট। বুয়েট প্রশাসন, পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমসহ সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। এখন যেন হত্যা মামলার দ্রুত রায়ের পর শাস্তি কার্যকর হয় সেটাই দাবি।’ উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নৃশংসতার শিকার হন বুয়েটের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ানিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ। এর পর থেকে বেশ কয়েকটি দাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা থেকে বিরত রয়েছেন বুয়েটের শিক্ষার্থীরা। মাঠের আনুষ্ঠানিক আন্দোলন থেকে সরে গেলে সর্বশেষ ২ নভেম্বর শিক্ষকদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিন দফা জানিয়ে নিজেদের অবস্থান অব্যাহত রেখেছেন তারা। দাবিগুলো হলোÑ হত্যা মামলার চার্জশিটের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা; আহসান উল্লাহ, তিতুমীর ও সোহরাওয়ার্দী হলের র‌্যাগের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তিদান এবং সাংগঠনিক ছাত্র রাজনীতি ও র‌্যাগের জন্য শাস্তির নীতিমালা করে একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেট থেকে অনুমোদন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ডিন্যান্সে অন্তর্ভুক্তকরণ। এসব দাবি পূরণ হওয়াসাপেক্ষে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের কথা বলেন তারা। ওই বৈঠকের বেশ কিছু সময় চলে যাওয়ার পরও এসব দাবির বিষয়ে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় প্রশাসনের গাফিলতির অভিযোগ আনেন শিক্ষার্থীরা। ১৮ নভেম্বর উভয় পক্ষের এক বৈঠকে দাবি পূরণে তিন সপ্তাহ সময় নেয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। এর পরই বৃহস্পতিবার মোট ৩২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হলো।

সর্বশেষ খবর