মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ০০:০০ টা

পটুয়াখালীতে তরমুজের নতুন জাত

সঞ্জয় দাস লিটু, পটুয়াখালী

পটুয়াখালীতে তরমুজের নতুন জাত

গ্রীষ্মের তপ্ত রোদে এক ফালি সুস্বাদু তরমুজ শীতল পরশ এনে দেয় মানুষের প্রাণে। বাঙালির পছন্দের রসালো এ ফলটি সবার কাছেই অতি প্রিয়। দেশের দক্ষিণ উপকূলে কৃষকের লাভজনক এ ফলটি চাষে প্রতি বছর প্রচুর অর্থ ব্যয় হয় বীজ সংগ্রহে। তরমুজের বীজ বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। এ বাবদ বছরে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়। আর এসব বীজ হাইব্রিড হওয়ায় উৎপাদিত ফল থেকে বীজ সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। এ ছাড়া প্রতি বছর আলাদা জাতের বীজ আমদানির ফলে এর অঙ্কুরোদ্গম, ফসল পরিচর্যা করতে কৃষককে বিভিন্ন সময় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। তবে দেশের এলাকাসহিষ্ণু তরমুজের নিজস্ব জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে পটুয়াখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র। ইতোমধ্যে লাল ও হলুদ রঙের দুটি জাতের সফলতাও মিলেছে তাদের গবেষণায়। মাঠ পর্যায়ে সফলতার পর দুটি জাতের অনুমোদনের অপেক্ষায় গবেষকরা। পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার লেবুখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, দেশের কৃষকের চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর চীন, ভারত, জাপান ও মালয়েশিয়া থেকে তরমুজের হাইব্রিড বীজ সংগ্রহ করতে হয়। বিভিন্ন কোম্পানি এসব হাইব্রিড বীজ নানা নামে সংগ্রহ করে। ফলে উৎপাদিত তরমুজের জাতের মান ও ধারাবাহিকতা থাকে না। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্র, লেবুখালী চিন্তা করে কীভাবে তরমুজের নিজস্ব জাত উদ্ভাবন করা যায়। এজন্য ২০১৫ সাল থেকে গবেষণা চালানো হয়। গবেষণার ফলে তরমুজের দুটি জাত উদ্ভাবন করা হয়। জাত দুটি ওপেন পলিনেটেড ভ্যারাইটি (পরাগায়ন) হওয়ায় কৃষক এ থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারবে এবং অঙ্কুরোদ্গম হবে। ফলে কৃষককে প্রতি বছর বীজ কিনতে হবে না। অনেক সময় আমদানি বীজ অঙ্কুরোদ্গম হয় না। তখন কৃষক ক্ষতির সম্মুখীন হন। শুধু গ্রীষ্মকালেই নয়, এ জাত দুটি সারা বছর আবাদ করা যাবে। লেবুখালী আঞ্চলিক উদ্যানতত্ত্ব গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. ইদ্রিস আলী হাওলাদার জানান, উদ্ভাবিত হলুদ ও লাল তরমুজের বীজ পরাগায়ন হওয়ায় এর বীজ কৃষক সরাসরি সংরক্ষণ করতে পারবেন এবং বীজ থেকে সহজেই চারা বের হয়ে আসবে। বছরে তিনবার এ তরমুজ আবাদ করতে পারবেন কৃষক। ফলে কৃষক আর্থিকভাবে বেশি লাভবান হবেন। ভালো বীজের নিশ্চয়তা থাকবে। প্রতি বছর বীজ আমদানিতে ব্যয় হয় প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। জাত দুটি অনুমোদন পেলে বিদেশ থেকে আর বীজ আমদানি করতে হবে না।

সর্বশেষ খবর