বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

দেশব্যাপী ইউপি নির্বাচন

ফেব্রুয়ারির শুরুতে তফসিল, মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম ধাপের ভোট, এবার ৪ হাজারের বেশি ইউপিতে ধাপে ধাপে ভোট

গোলাম রাব্বানী

দেশব্যাপী ইউপি নির্বাচন

দেশব্যাপী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন শুরু হচ্ছে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে। দলীয় প্রতীকে এবারও ভোট হবে ইউনিয়ন পরিষদে। তৃণমূলের এ নির্বাচনে লড়াই হবে নৌকা-ধানের শীষের। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই ইউপি নির্বাচনে হাওয়া বইছে দেশব্যাপী। গ্রামগঞ্জের চায়ের আড্ডায় চলছে নির্বাচনী আলাপ-আলোচনা। এ নির্বাচনে ব্যালট পেপারের পাশাপাশি ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাংবিধানিক এই সংস্থাটি। এর মধ্যে উপজেলা সদরের পাশের ইউপিতে ইভিএম ব্যবহারের চিন্তা করা হচ্ছে। সারা দেশে নির্বাচন উপযোগী ইউপি রয়েছে ৪ হাজারের বেশি। এবারও কয়েক ধাপে এ ভোট উৎসব শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছে, আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুতে এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। এ জন্য চলছে জোরপ্রস্তুতি। এক্ষেত্রে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রথম ধাপে প্রায় ৭৫০ ইউপিতে ভোট গ্রহণ হবে। প্রথম ধাপের ভোট গ্রহণের জন্য ১১, ১৩, ১৫ ও ১৮ মার্চ সম্ভাব্য তারিখ চিন্তা করা হচ্ছে। আর দ্বিতীয় ধাপের ভোট গ্রহণ হবে মার্চের শেষ দিকে। মার্চের ২৮, ২৯ ও ৩০ মার্চ ভোট গ্রহণ হতে পারে। এদিকে চলতি সপ্তাহে এ নির্বাচনের বাজেটও চূড়ান্ত হবে। এক্ষেত্রে ইভিএম ও ব্যালট পেপারে ভোটের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর বলেন, ‘আগামী মার্চে ২১ তারিখে বেশ কিছু ইউপির মেয়াদ শেষ হবে। এর ৪৫ দিন আগেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার চিন্তা করা হচ্ছে। এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যালট ও ইভিএমে দুই পদ্ধতিতেই ভোট গ্রহণ হবে।’ সেই হিসাবে ফেব্রুয়ারির শুরুতে এ নির্বাচনের তফসিল হতে পারে।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথম ধাপের ভোট মার্চের মাঝামাঝি হতে পারে। দ্বিতীয় ধাপের ভোট মার্চের শেষে এবং এর পর এপ্রিলের মাঝামাঝিতে রোজা শুরু হবে। তৃতীয় ধাপের ভোট হতে পারে মে ও অথবা জুনের শুরুতে। এ জন্য ফেব্রুয়ারির শুরুতে প্রথম ধাপের তফসিল ঘোষণা করবে কমিশন। এবার দলীয় প্রতীকে ব্যালট পেপারের পাশাপাশি উপজেলা সদরের ইউপিগুলোতে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পরিকল্পনাও রয়েছে। আইন অনুযায়ী আগামী ২১ মার্চের মধ্যে প্রথম ধাপের নির্বাচন করতে হবে কমিশনকে।

ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইনে পরিষদের মেয়াদের বিষয়ে বলা হয়েছে- “কোন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যগণ, ...সংশ্লিষ্ট পরিষদের প্রথম সভা অনুষ্ঠানের তারিখ হতে পাঁচ বছর সময়ের জন্য উক্ত পদে অধিষ্ঠিত থাকবেন।” পরিষদের নির্বাচনের বিষয়ে বলা হয়েছে- “পরিষদ গঠনের জন্য কোন সাধারণ নির্বাচন ওই পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ হতে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার  ১৮০ দিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে।’ আইনে উল্লেখ রয়েছে- “দৈব-দুর্বিপাকজনিত বা অন্যবধি কোন কারণে নির্ধারিত ৫ বছর মেয়াদের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব না হলে, সরকার লিখিত আদেশ দ্বারা, নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত কিংবা অনধিক ৯০ দিন পর্যন্ত, যা আগে ঘটবে, সংশ্লিষ্ট পরিষদকে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ক্ষমতা দিতে পারে।’ উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে মোট ছয় ধাপে ৪ হাজার ২৭৯ ইউনিয়নে ভোট আয়োজন করে কমিশন।

 

প্রথম ধাপে ৭৫২ ইউপির ভোট হয় ২২ মার্চ। এর পর ৩১ মার্চ ৭১০টি ইউপি, ২৩ এপ্রিল ৭১১টি ইউপি, ৭ মে ৭২৮টি ইউপি, ২৮ মে ৭১৪টি ইউপি এবং ৪ জুন ৬৬০টি ইউপিতে ভোট হয়। তবে এবার ইউপি সংখ্যাও কিছু বেড়েছে। ইসি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে দেশে ৪ হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। তবে ২০০ ইউপিতে মামলা জটিলতার কারণে নির্বাচন আটকে আছে। এ ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ও কিছু ইউপিতে     সাধারণ নির্বাচন হওয়ায় ৪ হাজার ১০০ ইউপিতে ধাপে ধাপে করতে হবে। ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে কমিশন। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তফসিল দেওয়া শুরু হবে। নির্বাচন চলবে বছর জুড়েই। গতবারের মতো আসন্ন ইউপির ভোটও হবে দলীয় প্রতীকে। চেয়ারম্যান বা মেম্বার প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক নয়।

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর