শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০০:০০ টা

শ্রীপুরে কেমিক্যাল কারখানায় আগুন

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ এলাকায় একটি কেমিক্যাল কারখানায় আগুনের ঘটনায় একজন দগ্ধ হয়ে মারা গেছেন। এ ছাড়া ১৬ জন আহত হয়েছেন। গতকাল বিকাল পৌনে ৫টায় আজিজ কেমিক্যাল গ্রুপের এএসএম কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ কোম্পানি লিমিটেড কারখানার সাততলা ভবনে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত ব্যক্তির নাম আলমগীর হোসেন (৩৫)। এ ঘটনায় দগ্ধ ইসাহাক আলীসহ ছয়জনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও একজনকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর নয়জন আল হেরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আগুনের ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে গাজীপুর জেলা প্রশাসন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানায়, ঘটনার সময় বিকট শব্দে কারখানার আশপাশের কমপক্ষে অর্ধশতাধিক বহুতল ভবনের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। বিভিন্ন ভবনের লোকজন জানালার ভাঙা কাচের আঘাতে আহত হয়েছেন। বিকট শব্দের সঙ্গে সঙ্গে কালো ধোঁয়া ও আগুন পুরো ভবনটিতে ছড়িয়ে পড়ে। ঝাঁজালো গন্ধে আশপাশের পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে ওঠে। পথচারীরা নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে ছোটাছুটি শুরু করেন। শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মিয়া রাজ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কারখানার সাততলা ভবনের পুরোটিতেই কেমিক্যাল উৎপাদন ও সংরক্ষণ করা হতো। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের সংরক্ষিত স্টোরেজ বিস্ফোরণ হয়ে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ওই ভবনের প্রত্যেক তলায় নানা ধরনের কেমিক্যাল সংরক্ষণ করা হতো। অগ্নিকান্ডের সময় কমপক্ষে ২২ জন শ্রমিক ওই ভবনে ছিল বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। শ্রীপুর, গাজীপুর, টঙ্গী, ভালুকার আটটি ইউনিট চেষ্টা চালিয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও নানা ধরনের দাহ্য রাসায়নিক পদার্থ থাকার কারণে আগুন নেভাতে বিলম্ব হচ্ছে। আগুন লাগার প্রকৃত কারণ ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে কি না তাৎক্ষণিক নিরূপণ করা যায়নি।

মাওনা চৌরাস্তা এলাকার আল হেরা হাসপাতালের চিকিৎসক রেজবাউল হাসান জানান, ওই কারখানা থেকে ১৬ জনকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত ইসতিয়াক আলী (৫০), আশরাফুল ইসলাম (৩০), মনির হোসেন (৩৫), আমিনুল ইসলাম (৩৮), সুজাউল হক (৩৩) এবং সিলবেসতাকে (২৫) ময়মনসিংহ মেডকেল কলেজ হাসাপাতাল এবং জামিল ভূঁইয়া (৪১), আকতার উজ্জামান (২৫), শাওন (৩০), নাঈম ইসলাম (২০), রুকনুজ্জামান (২১), টুটন মিয়া (৪৮), আবির হোসেন (২১), ওয়াসিম (৪০) এবং স্বপন মিয়াকে (২৫) আল হেরা হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রাখা হয়েছে। একজনকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। তার পরিচয় জানা যায়নি।

কারখানার মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা সোহেল রানা জানান, শুনেছি পাঁচ থেকে ছয়জনের মতো আহত হয়েছেন। অগ্নিকান্ডের পর আহতদের কাউকে দেখা যায়নি। কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ খবর