শনিবার, ২০ মার্চ, ২০২১ ০০:০০ টা

২০ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষারও সুযোগ পাবেন না অনেক মেধাবী

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় নির্দিষ্টসংখ্যক ভর্তিচ্ছুকে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে

আকতারুজ্জামান

দেশের ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) ধারার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হবে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযোগ্য মোট আসন সংখ্যার বিপরীতে নির্দিষ্টসংখ্যক ভর্তিচ্ছুকে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে। সে হিসাবে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফল করেও ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে পাবে না তাদের মেধা যাচাইয়ের সুযোগ। এ নিয়ে সারা দেশে অনেক ভর্তিচ্ছুর দিন কাটছে দুশ্চিন্তায়। করোনা সংক্রমণের কারণে পরীক্ষা ছাড়া জেএসসি ও এসএসসি/সমমানের ফলাফলের মাধ্যমে মূল্যায়ন করায় গত বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থী ১৩ লাখ ৬৭ হাজার ৩৭৭ জন ছাত্র-ছাত্রীকেই অটোপাস দিয়েছে সরকার। এদের মধ্যে জিপিএ ৫ পেয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ৮০৭ জন। জিপিএ ৪ থেকে জিপিএ ৫ এর নিচে পেয়েছে এমন শিক্ষার্থী রয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৭৪০ জন। জিএসটি গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কমিটি সূত্রে জানা গেছে, গুচ্ছভুক্ত এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে প্রায় ২০ হাজার। সারা দেশে গত বছর এইচএসসি ও সমমানে প্রায় ১৪ লাখ শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হলেও এসব আসনে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করতে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে মাত্র সাড়ে ৪ লাখ ভর্তিচ্ছুকে। সে হিসাবে ৯ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায়ই অংশ নিতে পারবে না। ভর্তি হওয়ার পরীক্ষায় কে অংশ নিতে পারবে, আর কে পারবে না এ নিয়ে সংশয়-হতাশা বিরাজ করছে ভর্তিচ্ছু ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে। কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করা উম্মে হাবিবা ইউশা বলেন, করোনার কারণে এইচএসসিতে পরীক্ষা না নিয়ে অটোপাস দেওয়া হয়েছে। মেধা যাচাইয়ের সুযোগ পাইনি। এসএসসি-এইচএসসি মিলে আমার জিপিএ ৯ দশমিক ১৭। কিন্তু গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষায় নির্দিষ্টসংখ্যক পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে। আমি ভালো ফল করেও এ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারব কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছি। আমি চাই মোট জিপিএ ৮ বা তার বেশি পাওয়া সব শিক্ষার্থীকে ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ দেওয়া হোক। এইচএসসিতে মেধা যাচাই হয়নি। অন্তত

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় জিপিএ নয় মেধার যাচাই হোক। সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গুচ্ছভুক্ত ভর্তি কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ গতকাল বলেন, গুচ্ছভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০ হাজার আসন রয়েছে। এ আসনের সাড়ে ২২ গুণ হিসেবে সাড়ে ৪ লাখ ভর্তিচ্ছুকে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে। ভর্তিযোগ্য আসন কম থাকা, ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার অবকাঠামো স্বল্পতাসহ নানা কারণে নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে। তবে পরীক্ষার সুযোগ না পেয়ে কোনো মেধাবী এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে কিনা এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি। জিএসটি গুচ্ছভুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সমন্বয়ে গঠিত কোর কমিটির তৃতীয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রাথমিক আবেদন শুরু হবে ১ এপ্রিল। আবেদন চলবে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। ২০১৯ বা ২০২০ সালে এইচএসসি/সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণরাই কেবল আবেদন করতে পারবে। ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের মধ্যে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে বিজ্ঞান শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৮, বাণিজ্য শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৭ দশমিক ৫ এবং মানবিক শাখার জন্য ন্যূনতম জিপিএ ৭ থাকতে হবে। তবে এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষার প্রত্যেকটিতে ন্যূনতম জিপিএ ৩ দশমিক ৫ থাকতে হবে। এমন জিপিএ পেলে ভর্তিচ্ছুরা শুধু প্রাথমিক আবেদনের সুযোগ পাবেন। মেধার ভিত্তিতে নির্দিষ্টসংখ্যক শিক্ষার্থীকে পরীক্ষার জন্য চূড়ান্ত আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য যোগ্য শিক্ষার্থীদের ২৩ এপ্রিল মেসেজের মাধ্যমে জানানো হবে। চূড়ান্ত যোগ্যদের আগামী ২৪ এপ্রিল থেকে ২০ মের মধ্যে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত আবেদন করতে হবে।

সর্বশেষ খবর