বুধবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

সর্বোচ্চ ৮৪০৭ শনাক্ত মৃত্যু ১০

এত দ্রুত সংক্রমণ বাড়েনি কখনো, শনাক্তের হার প্রতিদিন বাড়ছে ৩ শতাংশের বেশি, হাসপাতালে ভর্তি সবাই ডেল্টায় আক্রান্ত - বিএসএমএমইউ

নিজস্ব প্রতিবেদক

সর্বোচ্চ ৮৪০৭ শনাক্ত মৃত্যু ১০

করোনা মহামারির ২২ মাসেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত সংক্রমণ বাড়ছে এখন। গত তিন দিন ধরে প্রতিদিনই ৩ শতাংশের বেশি বাড়ছে শনাক্তের হার, যা আগে কখনো ঘটেনি। এক দিনের ব্যবধানে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩.১০ শতাংশ বেড়ে শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ২৩.৯৮ শতাংশে, যা ১৬২ দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে আট হাজার ৪০৭ জন, যা পাঁচ মাসের মধ্যে এক দিনে সর্বাধিক রোগী শনাক্তের রেকর্ড। অথচ গত মাসের অধিকাংশ দিন দৈনিক তিন শ’র কম রোগী শনাক্ত হয়। এদিকে হালকা উপসর্গ বা সন্দেহ থেকে নমুনা পরীক্ষা করেও সংক্রমণ শনাক্ত হচ্ছে অনেকের। গত এক সপ্তাহে অন্তত এক ডজন মানুষের সঙ্গে কথা হয়েছে যারা হালকা উপসর্গ বা তেমন কোনো উপসর্গ না থাকার পরও  দাফতরিক প্রয়োজনে পরীক্ষা করায় করোনা পজেটিভ বলে শনাক্ত হয়েছেন। তাদের অনেকেই বিদেশ যাওয়ার জন্য পরীক্ষা করান। করোনা পজেটিভ হওয়ায় পিছিয়ে গেছে বিদেশযাত্রা।

এদিকে সংক্রমণের পাশাপাশি বাড়ছে মৃত্যুও। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ১০ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। আগের দিনও ১০ জন মারা যান। গত তিন দিনে মারা গেছেন ২৮ জন। গড়ে প্রতিদিন ৯ জনের বেশি মারা গেছেন। অথচ আগের ১৫ দিনে মোট মারা যান ৬৪ জন। দৈনিক গড় মৃত্যু ছিল পাঁচজনের কম।

সরকারের তথ্যানুযায়ী, গত ১ জানুয়ারি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার ছিল মাত্র ২.৪৩ শতাংশ। টানা বেড়ে ১৫ জানুয়ারি হয় ১৪.৩৫ শতাংশ। ১৪ দিনে বাড়ে ১১.৯২ শতাংশ। অথচ গত তিন দিনেই বেড়েছে ৯.৬৩ শতাংশ। ১৫ জানুয়ারির তুলনায় ১৬ জানুয়ারি শনাক্তের হার বাড়ে ৩.৪৭ শতাংশ। ১৭ জানুয়ারি বাড়ে আরও ৩.০৬ শতাংশ। ১৮ জানুয়ারি আরও ৩.১০ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২৩.৯৮ শতাংশে। এ তিন দিনের প্রতিদিনই দেড় হাজারের মতো বেড়েছে নতুন রোগী শনাক্তের সংখ্যা।

গত ২৪ ঘণ্টায় মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় ৩৫ হাজার ৫৪ জনের। গতকাল পর্যন্ত দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ১৬ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৪ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ২৮ হাজার ১৬৪ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৫ লাখ ৫৩ হাজার ৭৯৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৪৭৫ জন। সুস্থতার চেয়ে ১৭ গুণের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়। রোগী বাড়ায় হাসপাতালে চাপ বাড়ছে। গত এক দিনে মৃতদের সাতজনই ঢাকা বিভাগে মারা যান। একজন করে মারা যান চট্টগ্রাম, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগে। সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

হাসপাতালে ভর্তি সবাই ডেল্টায় আক্রান্ত : করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এমন কোনো রোগীর জিনোম সিকোয়েন্সিং করে গত এক মাসে ওমিক্রন শনাক্ত হয়নি। গতকাল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের থেকে সংগৃহীত নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে শতভাগ রোগীর ক্ষেত্রে ডেল্টা ধরন শনাক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত করোনার ৯৬টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করা হয়। এসব নমুনা হাসপাতালে ভর্তি রোগী, হাসপাতালের আউটডোরে আসা রোগী ও বিভিন্ন জেলা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব নমুনার ২০ শতাংশ ক্ষেত্রে ওমিক্রন ধরন শনাক্ত হয়েছে। তবে এর কোনোটি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নমুনা নয়।

সর্বশেষ খবর