সোমবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা

রুশ হামলায় মার্কিন ও ইউরোপীয় অস্ত্রের চালান ধ্বংস

প্রতিদিন ডেস্ক

ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর হামলায় মার্কিন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে পাঠানো একটি বিশাল অস্ত্রের চালান ধ্বংস হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সূত্র : রয়টার্স, বিবিসি, আলজাজিরা, সিএনএন, স্পুটনিক।

গতকাল রুশ সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে জানানো হয়েছে, তারা গত শনিবার ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর উপকূলবর্তী ওডেসা শহরের একটি টার্মিনালে হামলা চালায়। এতে সেখানে মার্কিন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে পাঠানো বিশাল অস্ত্রের চালান ধ্বংস হয়েছে। সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর  কোনাশেনকভ বলেন, বিমান থেকে দূরপাল্লার হাই প্রিসিশন ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার মাধ্যমে ইউক্রেনের বন্দরনগরী ওডেসার লজিস্টিক টার্মিনালে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ থেকে পাঠানো অস্ত্রের চালান ধ্বংস করা হয়। অন্যদিকে ইউক্রেন সরকার দাবি করছে, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার দুটি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। তবে আরও চারটি ক্ষেপণাস্ত্র একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তু ও কয়েকটি আবাসিক ভবনে আঘাত হেনেছে। সংবাদ সূত্রগুলো বলছে, ইউক্রেনের সেনারা রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করার জন্য যে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তার আঘাতে এসব বেসামরিক ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিনা- তা পরিষ্কার নয়।

ইউক্রেন সফরে মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী : মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের গতকাল ইউক্রেন সফরে যাওয়ার কথা। গণমাধ্যমকে গতকালই এ খবর জানান ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে দুই মার্কিন মন্ত্রী ইউক্রেনে পৌঁছেছেন কিনা- তা তাৎক্ষণিকভাবে গতকাল জানা যায়নি। এর আগের খবরে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ছাড়াও দুই মার্কিন কর্মকর্তার ইউক্রেন সফরের খবর নিশ্চিত করে ওয়াশিংটন। খবরে বলা হয়, রাজধানী কিয়েভের পরিস্থিতি আগের চেয়ে কিছুটা স্বাভাবিক। ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন জানাতে অনেকেই দেশটিতে সফর করছেন। অ্যান্টনি ব্লিনকেন ও লয়েড অস্টিনের এই সফরকে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে ইউক্রেন সরকার। এদিকে এই পরিস্থিতিতে আবারও রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, তুরস্কে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা নির্ভর করছে পুতিনের ওপর।

জাতিসংঘ মহাসচিবের ওপর খেপেছেন জেলেনস্কি : কিয়েভ সফরের আগে মস্কো সফরের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের ওপর দারুণ খেপেছেন ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ‘যুদ্ধ চলছে ইউক্রেনে। সুতরাং এখানেই আগে সফর করা উচিত তার। দখলদারিত্বের পরিণতি দেখতে হলে আগে কিয়েভেই আসতে হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মস্কোর রাস্তায় তো লাশ নেই। তাই জাতিসংঘ প্রধানের সেখানে যাওয়া অযৌক্তিক।’

জানা গেছে, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রাশিয়া ও ইউক্রেনের যাওয়ার আগে তুরস্ক সফর করবেন। জাতিসংঘের বিবৃতি অনুযায়ী, গুতেরেস আজ সোমবার তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা যাবেন।  সেখানে তিনি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে দেখা করবেন। তুরস্ক থেকে তিনি মঙ্গলবার মস্কো যাবেন। সেখানে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর জাতিসংঘের মহাসচিব রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে ওয়ার্কিং লাঞ্চ (মধ্যাহ্নভোজ) করবেন। আগামী বৃহস্পতিবার কিয়েভে যাবেন জাতিসংঘ মহাসচিব। সেখানে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবার সঙ্গে দেখা করবেন।

তদন্তে নেমেছে রাশিয়া : ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলে যুক্তরাজ্যের বিশেষায়িত বাহিনীর স্পেশাল এয়ার ফোর্সের (এসএএস) নাশকতাবিষয়ক বিশেষজ্ঞদের মোতায়েন করা হয়েছে কি না- তা তদন্ত করছে রাশিয়া। রাশিয়ার শীর্ষ রাষ্ট্রীয় তদন্তকারী সংস্থা গত শনিবার জানায়, পশ্চিম ইউক্রেনের লাভিভ অঞ্চলে এসএএস সদস্যদের পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে রুশ গণমাধ্যম। এসব অভিযোগ খতিয়ে  দেখছে তদন্তকারী সংস্থাটি।

রুশ বার্তা সংস্থা আরআইএ নভোস্তি এক রুশ নিরাপত্তা সূত্রকে উদ্ধৃত করে বলছে, বিশেষ অভিযান, নজরদারি ও নাশকতা দমনের জন্য প্রশিক্ষিত বিশেষ সামরিক বাহিনী এসএএস-এর প্রায় ২০ জন সদস্য ইউক্রেনে কাজ করছে।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে রুশ তদন্ত কমিটি বলেছে, ইউক্রেনের বিশেষ বাহিনীকে নাশকতা চালানোর জন্য সহায়তা করতে পাঠানো ব্রিটিশ বাহিনী সম্পর্কে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর কাজ করবে তারা। তবে ইউক্রেনে এসএএস-সদস্যরা জড়িত থাকলে এর প্রতিক্রিয়ায় তদন্ত কমিটি কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে- তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। অন্যদিকে রুশ তদন্তের বিষয়ে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর