রবিবার, ২২ মে, ২০২২ ০০:০০ টা

নিঃসঙ্গ এক উটপাখি

আবার ডিম দিলেও পুরুষ সঙ্গীর অভাবে বাচ্চা ফুটছে না

নিজস্ব প্রতিবেদক রংপুর

নিঃসঙ্গ এক উটপাখি

রংপুর চিড়িয়াখানায় দুই বছর থেকে সঙ্গী হারিয়ে নিঃসঙ্গ অবস্থায় রয়েছে মেয়ে উটপাখিটি। একটি খাঁচায় বিষণ্নভাবে পাখিটি ডিম পাড়লেও পুরুষ সঙ্গীর অভাবে বাচ্চা ফুটছে না। গতকাল একটি ডিম দিয়েছে পাখিটি।  গত কয়েক দিনে পাখিটি তিনটি ডিম দিয়েছে। গত  দুই  বছরে পাখিটি  ১০-১২টি ডিম দিয়েছে। কিন্তু বংশবিস্তার করতে পারেনি    সঙ্গীর অভাবে। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ ডিম ভেঙে শুধু খোসা সংরক্ষণে রাখছে। এটাই এখন চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের কাজ। তবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ বলছে- উটপাখির পুরুষ সঙ্গী চেয়ে ঢাকা চিড়িয়াখানায় একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও সেখান থেকে কোনো প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি। সচেতন অনেকেই মনে করছেন- উটপাখিটির বংশবিস্তারের জন্য খুব দ্রুত একটি পুরুষ সঙ্গী আনা প্রয়োজন। রংপুর চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গেছে, প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে ঢাকা চিড়িয়াখানা থেকে ৬ মাস বয়সী একটি পুরুষ এবং একটি মেয়ে উটপাখি  আনা হয়। দেড় বছর একসঙ্গে থাকার পর পুরুষ সঙ্গীটি দুই বছর আগে মারা যায়। তখন থেকেই বিষণ্ন মনে খাঁচায় এক একা দিন কাটছে পাখিটির। গত দুই বছরে এক ডজনের বেশি ডিম দিলেও পুরুষ সঙ্গী না থাকায় বাচ্চা  ফোটেনি। এই প্রজাতির পাখি সম্পর্কে জানা গেছে, মূলত আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির দক্ষিণের তৃণভূমি উটপাখির মূল বিচরণস্থল। বিশ্বের অনেক স্থানে উটপাখি পালন একটি লাভজনক ব্যবসা। বিশ্ব বাজারে এর চামড়া, মাংস, পালক ইত্যাদির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এই পাখি পোকা-মাকড় খায়। উড়তে না পারলেও ৭০ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে। অঞ্চলভেদে প্রজননে ভিন্নতা রয়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে একটি পুরুষ তার নিজস্ব এলাকা দখল করে দুই থেকে সাতটি স্ত্রী উটপাখির সঙ্গে থাকে এবং বংশবিস্তার করে। উটপাখির গড় উচ্চতা প্রায় ৩ মিটার। দেহের ওজন ১৫০ কেজিরও বেশি হতে পারে। এদের আছে বিশাল দুটি পাখা। পুরোটা মেলে ধরলে এর দৈর্ঘ্য হয় প্রায় ৭ ফুট। পুরুষ উটপাখির পাখার রং কালো হয় এবং সঙ্গে থাকে সাদা লেজ। স্ত্রী উটপাখির পাখার রং ধূসর বাদামি। উটপাখি ৫০ থেকে ৭০ বছর উৎপাদনক্ষম থাকে এবং এরা ৮০ থেকে ১০০ বছর পর্যন্ত বাঁচে। রংপুর চিড়িয়াখানার উটপাখিটি সঙ্গী ছাড়া কত বছর বাঁচবে এটাই এখন দেখার বিষয়। কারণ এর সঙ্গী মাত্র দুই বছর বয়সে মারা গেছে।

রংপুর চিড়িয়াখানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. শাহাদৎ হোসেন জানান, পাখিটি ডিম দিয়েছিল। কিন্তু পুরুষ সঙ্গী না থাকায় ডিমগুলো ফোটেনি। তাই ডিমের ভিতরের অংশ ফেলে দিয়ে শুধু খোসা সংরক্ষণে রাখা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর