বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন, ২০২২ ০০:০০ টা

মুহূর্তে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হলো আফগানিস্তান

মৃত্যু সহস্রাধিক, ক্ষয়ক্ষতি বেশি পাহাড়ে

প্রতিদিন ডেস্ক

মুহূর্তে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হলো আফগানিস্তান

আফগানিস্তানে শক্তিশালী ভূমিকম্পে মুহূর্তেই ধ্বংস হয়ে গেছে পার্বত্য অঞ্চলের গ্রামের পর গ্রাম। গতকাল ভোররাতের এ ভূমিকম্প প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে প্রকম্পিত করেছে। মাটির ৫১ কিলোমিটার গভীরেও কম্পন হয়েছে। ফলে কেঁপে উঠে প্রতিবেশী পাকিস্তান ও ভারতের কিছু অঞ্চলও। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ভূমিকম্পে সহস্রাধিক আফগান নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আহতর সংখ্যা কয়েক হাজার। তবে বিধ্বস্ত এলাকাগুলো দুর্গম হওয়ায় গতকাল সারা দিনেও উদ্ধারকারী দলসহ হেলিকপ্টার সব জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। ফলে হতাহতের পূর্ণাঙ্গ তথ্যও পাওয়া যায়নি। সূত্র : রয়টার্স, আল জাজিরা, ডন, বিবিসি।

খবরে বলা হয়, দেশটিতে সাত বছরের মধ্যে হওয়া সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্প ছিল এটি। ৬ দশমিক ১ মাত্রার এ ভূমিকম্পে পাকতিয়া প্রদেশে ব্যাপকভাবে ভূমিধসে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পাহাড়ি গ্রামের পর গ্রাম। হতাহতের সংখ্যা কেবলই বাড়ছিল। আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন আইয়ুবি বলেন, পাহাড়ি এলাকাগুলো থেকে হতাহতের প্রকৃত তথ্য পেতে সময় লাগবে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য পেলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। বিধ্বস্ত এলাকাগুলোয় উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার মোতায়েন করা হয়েছে। তালেবান সরকারের পক্ষ থেকে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা সরঞ্জাম ও খাবার পাঠানো হয়েছে।

মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিসি) জানিয়েছে, স্থানীয় সময় গতকাল ভোরে এই ভূমিকম্প হয়। আফগানিস্তানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ খোস্তের রাজধানী শহর খোস্ত থেকে আনুমানিক ৪৪ কিলোমিটার দূরে ছিল ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল। জায়গাটি পাকিস্তানের সীমান্তসংলগ্ন। পাকিস্তানের গণমাধ্যম জানিয়েছে, ইসলামাবাদেও হাল্কা কম্পন হয়েছে। তবে লাহোর, মুলতান,  কোয়েটায় ভূমিকম্পের তীব্রতা ভালো ছিল। কম্পন অনুভূত হওয়ার পর সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে পড়েন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি। রিখটার স্কেলে পাকিস্তানে ভূমিকম্পের যার তীব্রতা ছিল পাঁচ। এ ছাড়া ভারতের সামান্য অংশে কম্পন অনুভূত হয়েছে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও আফগান সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি-ভিডিওতে ভূমিকম্পে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ, ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া বাড়িঘর ও স্ট্রেচারে আহত ব্যক্তিদের নিয়ে ছোটাছুটি করতে দেখা গেছে। আরেক খবরে বলা হয়, ভূমিকম্পটি আঘাত হানায় সময় বেশির ভাগ মানুষই ঘুমিয়ে ছিলেন। ফলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধসে পড়া বাড়িঘরের নিচে চাপা পড়ে প্রাণ হারান অনেকে। পাকতিয়া প্রদেশের একজন স্থানীয় সাংবাদিক জানান, প্রত্যেকটা রাস্তায়ই লোকজন প্রিয়জনের মৃত্যুর জন্য শোক করছেন। ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। আরেক সাংবাদিক জানান, ভূমিকম্পের পর অনেক এলাকার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, কারণ মোবাইল ফোনের টাওয়ারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর