মঙ্গলবার, ৩০ আগস্ট, ২০২২ ০০:০০ টা
অষ্টম কলাম । খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

ভিসির ৯ স্বজন ও ৭৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বজনপ্রীতি-অনিয়মের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য (ভিসি) শহীদুর রহমান খানের ছেলে, মেয়ে, শ্যালক-শ্যালিকার ছেলে ও ভাতিজাসহ ৯ জনের নিয়োগ বাতিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ‘বিষয় বিশেষজ্ঞ’ ছাড়া বাছাই বোর্ড গঠন করে ২০টি বিষয়ে দেওয়া ৭৩ শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করতে বলা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহমুদুল আলমের সাক্ষরকরা চিঠিতে এ বিষয়ে উপাচার্যকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন। জানা যায়, ১১ সেপ্টেম্বর উপাচার্য শহীদুর রহমানের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার বিদায়ের প্রাক্কালে ২৫ আগষ্ট নিয়োগ বাতিল করার নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে উপাচার্য হিসেবে শহীদুর রহমানকে নিয়োগের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রম শুরু হয়। ২০২০ সালে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের পাঁচ সদস্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। পরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। তদন্ত প্রতিবেদনে জানা যায়, অনিয়ম- স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে উপাচার্যের ছেলে শফিউর রহমান খান ও শ্যালক জসীম উদ্দীনকে শাখা কর্মকর্তা পদে, চার ভাতিজার মধ্যে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা পদে মুরাদ বিল্লাহ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে সুলতান মাহমুদ, ল্যাব টেকনিশিয়ান পদে ইমরান হোসেন, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মিজানুর রহমান, শ্যালিকার ছেলে সায়ফুল্লাহ হককে সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ), ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পদে আত্মীয় নিজামউদ্দিন ও উপাচার্যের মেয়ে ইসরাত খানকে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উপাচার্যের স্ত্রী ফেরদৌসী বেগমকে সরাসরি অধ্যাপক পদে নিয়োগের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি ২০২০ সালে ১৩ এপ্রিল মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ বিভাগের অধ্যাপক পদে আবেদন করেন। তবে এ নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত করে দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিষ্ট্রার খন্দকার মাজহারুল আনোয়ার জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী, অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক নিয়োগে বাছাই বোর্ডে বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ সদস্য থাকার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সহকারী অধ্যাপক ও প্রভাষক নিয়োগে এ নিয়ম নেই। নিয়োগ বোর্ডে বিষয় বিশেষজ্ঞ সদস্য না থাকায় ৭৩ জন শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল করতে বলা হয়েছে, তারা সবাই সহকারী অধ্যাপক বা প্রভাষক পদে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ফলে এক্ষেত্রে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি। অপরদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে আরও কয়েকটি বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এরমধ্যে শিক্ষক নিয়োগে নীতিমালা যুগোপযোগী করা, ভবিষ্যতে স্বজনপ্রীতি মাধ্যমে নিয়োগ বা বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞ ছাড়া বাছাই বোর্ড গঠন না করাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর