সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

দখল-দূষণের কবলে নেত্রকোনার সেই মগড়া

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

দখল-দূষণের কবলে নেত্রকোনার সেই মগড়া

এক সময়ের কালিগঞ্জ বাজার থেকে আজকের নেত্রকোনা শহরের জন্য যে নদীর অবদান। সেটি আজ দূষণে আর দখলে মৃত প্রায়। এক সময়ের খরস্রোতা মগড়ার অববাহিকায় গড়ে ওঠা আজকের নেত্রকোনা শহর বড় হলেও দিনে দিনে মরে যাচ্ছে মগড়া। অযত্ন আর অবহেলায় বিলীনের পথে। প্রতি বছর নদী রক্ষায় নানা উদ্যোগের কথা জানালেও বাস্তবে তার খোঁজ মেলে না। শহরকে প্যাঁচিয়ে রাখা মগড়া নদীর ঘাটগুলো দখল হয়ে ময়লা আবর্জনার ভাগাড় হয়েছে। ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে পানি। তবে ঘাটগুলো অবমুক্ত করলেই মানুষের ব্যবহার উপযোগী হয়ে আবারও ফিরবে নদীর নাব্য এমন দাবি এলাকাবাসীর।

জানা গেছে, মগড়া নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা ব্যবসায়িক কালিগঞ্জ বাজারে বড় বড়  নৌকা, লঞ্চ, স্টিমার আসত দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। আর সেই ব্যবসার প্রসারে আজকের গড়ে ওঠা শহরের নাম নেত্রকোনা। পুরো শহরজুড়ে প্যাঁচিয়ে থাকা খরস্রোতা নদীতে এখন নেই পানি। চলে না নৌকা। এমনকি ভরা বর্ষায়ও না। নদীর ঘাটগুলো মানুষের দৈনন্দিন কাজেরও বড় মাধ্যম ছিল। শহরের ৬ কিলোমিটার জুড়ে প্রায় অর্ধশত ঘাটে গোসল থেকে শুরু করে ধোপাদের কাপড় ধোয়ার ব্যবসা, সেচকাজসহ সব চলত এই মগড়ার পানি দিয়ে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সাবেক পৌর মেয়র প্রশান্ত কুমার রায় প্রথমে বাজার ঘাটে একটি শৌচাগার করেছিলেন। সেখানে টোকেন রাখার ঘরটিতে ওষুধের দোকান ভাড়া দেওয়া হয়েছে। এভাবেই বিভিন্ন ঘাট ধীরে ধীরে ব্যবসায়ীদের দখলে চলে যায়। যা উদ্ধারে নেই কোনো উদ্যোগ। যে কারণে আর ব্যবহারের উপযুক্ত নেই সেই ঘাটগুলো। দোকানপাট করে কেউ কেউ ব্যবসা চালাচ্ছেন। আবার কোনোটায় পূজা এলে পরিষ্কার করে পূজা উদযাপন হয়। কোথাও কোথাও আশপাশের স্থানীয়রা দুর্গন্ধ থেকে বাঁচতে নেট দিয়ে আটকে দিয়েছেন। বর্তমানে কালিমন্দিরের সামনের একটি ঘাট ছাড়া সবগুলো দখলে আর দূষণে ভরপুর হয়ে আছে। নেত্রকোনা পৌর সভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম খান নানাভাবে ঘাটসহ নদী দখলের কথা স্বীকার করে জানান, রাতের আঁধারে কিছু মানুষ নদীতে ময়লা ফেলে দিচ্ছে। তারা ময়লাগুলো ডাস্টবিনে ফেললেই নদী দূষিত হয় না। ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ল্যান্ডফিলিং স্টেশন করেছি। সেখানে প্রতিদিন ১০/১৫ ট্রাক ময়লা সরিয়ে নিচ্ছি। ৪৮ কোটি টাকার ডিপিপি পাঠানো আছে সেটি পাস হয়ে গেলে যত বড় দখলদারই থাকুক উচ্ছেদ করে নদীর সৌন্দর্য বর্ধন করা হবে। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানান, মগড়া নদীটি জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি নদী। যে পয়েন্টগুলোতে অবৈধ দখল আছে আমরা চিহ্নিত করছি। কাজ করা হচ্ছে দখলমুক্ত করার।

 

সর্বশেষ খবর