সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

টার্গেট ছাড়িয়েছে রপ্তানি আয়

আগস্টে প্রবৃদ্ধি ৩৬ শতাংশ

রুকনুজ্জামান অঞ্জন

টার্গেট ছাড়িয়েছে রপ্তানি আয়

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতিতে শঙ্কা থাকলেও দেশের রপ্তানি আয়ে সুবাতাস বইছে। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে যেখানে রপ্তানি আয়ে ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল, আগস্টে সেই প্রবৃদ্ধি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়ে ৩৬ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্টে রপ্তানি আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬০ কোটি মার্কিন ডলার প্রায়। গত বছরের একই মাসে রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ছিল ৩৩৮ কোটি মার্কিন ডলার। দেখা যাচ্ছে, গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছরের আগস্টে প্রায় ১২২ কোটি মার্কিন ডলার বেশি আয় এসেছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি আয়ের যে টার্গেট নির্ধারণ করেছে সরকার, আগস্টের আয় সেই টার্গেট ছাড়িয়ে গেছে। চলতি অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসের জন্য ৪৩০ কোটি মার্কিন ডলার রপ্তানি আয়ের টার্গেট ছিল। এর চেয়ে প্রায় ৭ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি রপ্তানি আয় অর্জিত হয়েছে।

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, করোনা মহামারির পর ইউক্রেন যুদ্ধ দেশের রপ্তানি খাতে বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করেছে। সেই ঝুঁকি মোকাবিলা করে আগস্টে রপ্তানি আয়         আমাদের টার্গেট ছাড়িয়ে গেছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি চামড়া ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বৃদ্ধি বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে আয় বাড়াতে। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, আগস্টে যেসব পণ্যে রপ্তানি আয় বেড়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- নিট পোশাক (২০ শতাংশ), ওভেন পোশাক (৩৪ শতাংশ), হোম টেক্সটাইল (৫৩ শতাংশ), কপার ওয়্যার ৬৬ শতাংশ, স্পেশাল টেক্সটাইল (৭৩ শতাংশ), প্লাস্টিক পণ্য (৬০ শতাংশ), চামড়ার জুতা (৩০ শতাংশ), কাঁচা পাচ (৬৩ শতাংশ), প্রকৌশল যন্ত্র (১৪৬ শতাংশ), ইলেকট্রনিক্স পণ্য (৫২ শতাংশ), জুট ইয়ারন অ্যান্ড টোয়াইন (১৪ শতাংশ) এবং চামড়াজাত পণ্য (২৫ শতাংশ)।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে ১৯ ধরনের পণ্যে রপ্তানি বাড়লেও অন্তত ১৮ ধরনের পণ্যে রপ্তানি আয় হ্রাস পেয়েছিল। আগস্টে ২৬ ধরনের পণ্যে রপ্তানি আয় বেড়েছে। আর কমেছে ১১ ধরনের পণ্যে রপ্তানি। এর মধ্যে জুলাইয়ে কমলেও আগস্টে বেড়েছে এমন পণ্যের মধ্যে রয়েছে শুকনো খাবার, চা, বাইসাইকেল, টেরি টাওয়েল ও সিরামিক পণ্য। আর রপ্তানি কমেছে শাক-সবজি, ওষুধ, ফলমূল, হ্যান্ডিক্রাফট, ফার্নিচার, চিংড়ি, কার্পেট ও রাবার পণ্যের।   

ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উন্নত দেশগুলোর অর্থনীতিতে স্থবিরতা বিরাজ করছে। জ্বালানি সংকট ও অতিরিক্ত মূল্যস্ফীতি ইউরোপ-আমেরিকার মতো দেশগুলোর মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়ে দিচ্ছে। খাদ্যপণ্যে ব্যয় বাড়ার কারণে অনেকে পোশাকের মতো পণ্য কেনা কমিয়ে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে তৈরি পোশাকনির্ভর দেশের রপ্তানি আয়ে কিছু ঝুঁকি রয়েছে। তবে দেশের শিল্প খাত এই ঝুঁকি মোকাবিলার সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে মনে করেন ইপিবির এই প্রধান নির্বাহী। এই ঝুঁকি মোকাবিলা করে রপ্তানি আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

সর্বশেষ খবর