বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা

একদিকে সংস্কার অন্যদিকে ভাঙাচোরা

----- জামাত খান

একদিকে সংস্কার অন্যদিকে ভাঙাচোরা

সবুজ নগরী ছিল একসময়। এখন সেই নগরী ধূলিময়। শব্দের যন্ত্রণা বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সেগুলো রুখতে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মশার দাপটে নগরবাসী অতিষ্ঠ। রাস্তাঘাটে অনিয়ন্ত্রিত রিকশা ও অটোরিকশার    দৌরাত্ম্য, ফুটপাত দখল, যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রীর স্তূপ- এতে নগরবাসীর ভোগান্তির শেষ নেই। অনেক উন্নয়ন প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়ে থাকলেও এগুলোর বাস্তবায়নে সিটি করপোরেশন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।

নগরী তার সৌন্দর্য আগের চেয়ে হারিয়েছে। কারণ এখন যেখানে-সেখানে নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হচ্ছে। পদ্মাপাড়ের সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে। ইচ্ছামতো দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে। যে যেভাবে পারছে পদ্মাপাড় দখল করছে। অটোরিকশার যানজট আর মশার কারণে নগরজীবন এখন ওষ্ঠাগত। এসব থেকে মানুষ রেহাই পেতে চায়। নগরপিতা এগুলো দিতে ব্যর্থ হলে তার অন্য উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলোও ভেস্তে যাবে। নাগরিকরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরা করতে চান। পড়াশোনা শেষ করে একটা কর্মসংস্থান চান। কিন্তু এখন রাজশাহীর যা অবস্থা তাতে কোনোটিই ঠিকভাবে হচ্ছে না। দিন দিন যানজট বাড়ছে। গ্যাস থাকলেও শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে না। ‘হবে, হচ্ছে’ এমন আশ্বাসে কেটে যাচ্ছে সময়।

সড়কবাতি আর গাছ লাগিয়ে সড়কের সৌন্দর্য বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু সেই সড়কে এখনো ময়লার স্তূপ পড়ে থাকে। অল্প পানিতে খোদ মেয়রের বাড়ির এলাকা ডুবে থাকে। এক দশক ধরে এ অবস্থা দেখছি। কাজ চলছে, আর হবে না- এমন আশ্বাসে আর কত দিন কাটবে! তরুণ প্রজন্মের জন্য এই নগরীতে কোনো সুবিধাই রাখা হয়নি। বর্তমান মেয়র আগের মেয়াদে ওয়াইফাই জোন চালু করেছিলেন। সেই জোন এখন কোথায়? যন্ত্রপাতি বসাতে যে টাকা অপচয় করা হলো, সেগুলো তো জনগণের টাকা। এর কোনো জবাব নেই। একদিকে সংস্কার, অন্যদিকে ভাঙাচোরা- এভাবেই চলছে নগরীর উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। এক বছর আগে যে কাজ করা হয়েছে, সেই কাজ আবার করা হচ্ছে। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় বছর বছর একই কাজ করতে গিয়ে যেমন অর্থের অপচয় হচ্ছে, তেমনি নাগরিক ভোগান্তি কমছে না। উন্নয়ন করতে হলে তাই পরিকল্পনা করতে হবে আগে।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ

সর্বশেষ খবর