মঙ্গলবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

নতুন নিয়ম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

আকতারুজ্জামান

নতুন নিয়ম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন বছরে বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়-প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি সেমিস্টার বৈষম্য কমাতে চালু হবে সর্বজনীন ‘টু সেমিস্টার সিস্টেম’। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরির লক্ষ্যে আগামী জানুয়ারি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু হবে আউটকাম বেজড নতুন কারিকুলাম। স্বতন্ত্র গ্রেডিং পদ্ধতি ছাড়াও আগামী বছর থেকে নতুন কিছু সিদ্ধান্ত আসছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তথ্যমতে, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক প্রণীত ‘রিভাইজড আউটকাম বেজড এডুকেশন কারিকুলাম টেমপ্লেট’ অনুসরণ করে কারিকুলাম আপডেট করতে নির্দেশনা দেওয়া হয় গত ২৫ মে। জুনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে প্রস্তাবিত কারিকুলাম জমা দিতে বলা হয়। পরে কারিকুলাম জমা দেওয়ার তারিখ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। নির্দেশনা মেনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের প্রস্তাবিত কারিকুলাম ইউজিসিতে জমা দিয়েছে। ইউজিসি সূত্র জানায়, জমা হওয়া কারিকুলাম বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নিরীক্ষা কার্যক্রম শেষে শিগগিরই এই হালনাগাদকৃত কারিকুলাম অনুমোদন দেওয়া হবে।

আর যেসব বিশ্ববিদ্যালয় কারিকুলাম আপডেট করবে না-আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ থাকবে। কারণ, বাধ্যতামূলকভাবে প্রতি চার বছর পর পর কারিকুলাম আপডেট করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে।

মঞ্জুরি কমিশন সূত্র বলছে, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কাছে টাকা আদায় করতেই বছরে তিনটি সেমিস্টার চালু রেখেছে। কারণ, প্রতি সেমিস্টারেই নতুন করে ভর্তি হতে হয়। আসলে প্রতি চার মাসে সেমিস্টার হলে এক সেমিস্টারের পাঠ ভালোভাবে রপ্ত করার আগেই আরেকটি সেমিস্টার চলে আসে। এভাবে পাস করে চাকরির বাজারে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ে। আবার প্রতি সেমিস্টারে শিক্ষার্থীকে নতুন করে ভর্তি হতে হয় বিপুল অঙ্কের টাকা দিয়ে। সেমিস্টার বেশি হলে শিক্ষার্থীদের শেখার সুযোগ যেমন কম থাকে, এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি করার সুযোগও কম পায় ছাত্র-ছাত্রীরা। তাই সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আগামী জানুয়ারি থেকে দুই সেমিস্টার পদ্ধতি চালু করতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বেঁধে দেওয়া অভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতিও মানছে না একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়। নিয়মানুযায়ী ৮০ নম্বরের বেশি পেলে ‘এ প্লাস’ দেওয়ার কথা থাকলেও অনেকে এ পদ্ধতি মানছে না। তাই তাদের সতর্ক করা হয়েছে। ভিন্ন ভিন্ন গ্রেডিং পদ্ধতি অনুসরণ করায় শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ প্রতিবেদককে বলেন, আউটকাম বেজড এডুকেশন সিস্টেম বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল কোয়ালিফিকেশন ফ্রেমওয়ার্কের (বিএনকিউএফ) শর্ত। আর অ্যাক্রেডিটেশন সনদ না থাকলে ভবিষ্যতে বিশ্ববিদ্যালয় চালুও করা যাবে না। তাই এ সিস্টেম চালু করতে হবে। তাছাড়া সর্বজনীন পদ্ধতি হচ্ছে ৮০ নম্বরের ওপরে এ প্লাস, কিন্তু কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ৯০ নম্বরের ওপরে না পেলে এ প্লাস দিচ্ছে না। অন্য গ্রেডগুলোতেও বৈষম্য রয়েছে। এটা নিরসনকল্পে আগেও চিঠি দেওয়া হয়েছিল, ফের সতর্ক করা হয়েছে। নতুন বছরে এ সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। এসব সিদ্ধান্ত চালু হলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।

 

সর্বশেষ খবর