সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

সিলেটের যুবক জিম্মি আসামে খালাস মুক্তিপণে

কলকাতা প্রতিনিধি

ভারতের আসামে বাংলাদেশের সিলেটের আলমগীর নামে এক যুবককে জিম্মি করার খবর পাওয়া গেছে। পরে মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দিয়ে তিনি খালাস পেয়েছেন বলে জানা গেছে। সিলেট জেলার গোয়াইনঘাট থানার ২ নম্বর পশ্চিম জাফলং ভাদেশ্বর গ্রামের বাসিন্দা আলমগীরের ফেসবুকে পরিচয় হয় আসামের নওগাঁও জেলার রূপহীহাট এলাকার বাসিন্দা আজমল হোসেনের সঙ্গে। এরপর বন্ধুত্ব। আজমল বন্ধু আলমগীরের সঙ্গে তার মায়ের পরিচয় করিয়ে দেন। আজমলের মা আলমগীরকে তার ছেলে বলে সম্বোধন করতে থাকেন। আজমলও আলমগীরকে ভাই বলে ডাকতে শুরু করেন। এরপর আলমগীরকে আসামে আসার দাওয়াত জানান আজমল এবং তার মা। বৈধ পাসপোর্ট, ভিসা নিয়ে গত ৯ জানুয়ারি মেঘালয়ের ডাউকি স্থলবন্দর দিয়ে আলমগীর ভারতে আসেন। আসামের রাজধানী গুয়াহাটির জোড়া-বাট এলাকায় প্রবেশ করেন তিনি। সেখানে আগে থেকেই অপেক্ষা করছিলেন আজমলের মা। গাড়িতে করে সেখান থেকে আলমগীরকে বাড়িতে নিয়ে আসেন ওই নারী।

ভারতে ঢোকার আগেই আলমগীরের হাতে ভুয়া ভারতীয় ভোটার সচিত্র পরিচয়পত্র পাঠিয়ে দেন আজমল। ওই বাড়িতে ওঠার পর কয়েক দিন পরিবারের সদস্যদের আচরণ স্বাভাবিক ছিল। এরপর তারা রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন। আলমগীরকে টানা দুই সপ্তাহ একটি ঘরে আটকে রাখেন। এ সময় তার ওপর চলে নানা নির্যাতন। হুমকি দেওয়া হয় প্রাণে মেরে ফেলার। মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। উপায় না দেখে আলমগীর বিষয়টি তার মা-বাবাকে জানান। তারা জায়গা-জমি বিক্রি করে ৪ লাখ ১০ হাজার টাকা পাঠান। যেটি ভারতীয় মুদ্রায় ৩ লাখ রুপি। আজমলের হাতে এ অর্থ তুলে দেওয়ার পরই মেলে মুক্তি।

 আলমগীর মুক্ত হয়ে রূপহীহাট গ্রামের বাসিন্দা এবং আজমলের বোনের স্বামী ব্যবসায়ী আরাফাতকে বিষয়টি জানান। পরে তিনি রূপহীহাট পুলিশ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি জ্ঞানেন্দ্র প্রতাপ সিংয়ের কাছেও ন্যায়বিচারের দাবি জানান তিনি। বিষয়টি সামনে আসার পর পুলিশ নড়েচড়ে বসে। প্রতারিত ব্যক্তির অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের পাশাপাশি কীভাবে ভুয়া পরিচয়পত্র এলো, কারা কারা এ ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। ওই ঘটনার পর থেকেই পলাতক মূল অভিযুক্ত আজমল হোসেন। এদিকে গোটা ঘটনার একটি বর্ণনা ফেসবুকে পোস্ট করেন মোহাম্মদ কায়েস আহমেদ নামে আলমগীরের সিলেটের এক বন্ধু। সেখানে আলমগীরের একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ভিডিওতে আলমগীর জানান, ‘তিন বছর থেকে ওই পরিবারের সঙ্গে আমার সম্পর্ক।’ এরপর গোটা ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর