জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য সুপারিশগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। প্রথম ধাপে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে আটটি সুপারিশ। আগামী এক মাসের মধ্যে সব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এ ব্যাপারে তাদের সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এবং প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়কে অবহিত করবে।
গতকাল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- পাঁচটি সংস্কার কমিশনের আশু বাস্তবায়নযোগ্য মোট ১২১টি প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের নয়টি, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ৩৮টি, দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের ৪৩টি, পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৩টি এবং জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি প্রস্তাব আশু বাস্তবায়নযোগ্য হিসেবে বাছাই করা হয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮টি প্রস্তাবের মধ্যে অপেক্ষাকৃত সহজে বাস্তবায়নযোগ্য আটটি প্রস্তাব নিয়ে সভায় বিস্তারিত আলোচনা ও দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবগুলো হলো- ১. মহাসড়কের পেট্রোল-পাম্পগুলোতে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ, ২. মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট ডায়নামিক ও নিয়মিত হালনাগাদের ব্যবস্থা করা, ৩. সরকারি কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে কলেজ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন, ৪. বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিচালনা, ৫. সব সরকারি দপ্তরে নির্দিষ্ট বিরতিতে গণশুনানি নিশ্চিত করা, ৬. তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ পর্যালোচনা ও সংশোধন, ৭. বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকে ‘বাংলাদেশ পরিসংখ্যান কমিশন’ হিসেবে রূপান্তর করা, ৮. ডিজিটাল রূপান্তর সম্পন্ন করা এবং ই-গভর্নমেন্ট ও ই-সার্ভিস ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ। সভায় জানানো হয়, জন আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে গঠিত প্রধান ছয়টি কমিশনসহ অন্য সংস্কার কমিশনগুলো সরকারের কাছে সংস্কার প্রস্তাব দাখিল করেছে। সংবিধান সংশ্লিষ্ট ও বড় সংস্কারের বিষয়ে ঐকমত্যের জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কাজ করছে। তবে যে সব সংস্কার প্রশাসনিক ক্ষমতায় মন্ত্রণালয় নিজ উদ্যোগে বাস্তবায়ন করতে পারে, সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গত ২৫ মে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পত্র পাঠিয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া বলেন, প্রতিটি মন্ত্রণালয় বা বিভাগ নিজস্ব বাস্তবায়ন টিম গঠন করবে এবং সময়াবদ্ধ কার্যক্রম গ্রহণ করবে। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিবের তত্ত্বাবধানে গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিটের (জিআইইউ) আওতায় একটি তদারকি টিম থাকবে, যা মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখবে এবং প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগও এই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন তদারকি করবে। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য সংস্কার কার্যক্রমও এগিয়ে নিতে নিয়মিত সভা আয়োজন করা হবে।