ছয় দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়ায় দিনব্যাপী রেলপথ অবরোধ করে রাখেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। অবরোধ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে অবস্থিত সব ব্যাংক ও আর্থিক লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠানে তারা তালা লাগিয়ে দেন।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টা থেকে ময়মনসিংহ-ঢাকা রেললাইনের আবদুল জব্বারের মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি শুরু করেন। বিভিন্ন আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে এতে যোগ দেন। দুপুর ১টার দিকে ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের পাশে অবস্থিত পূবালী ব্যাংকে প্রথমে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে নতুন প্রশাসনিক ভবন ও কোষাধ্যক্ষের দপ্তরেও তালা লাগিয়ে দেন তারা। তবে শিক্ষার্থীরা ভিতরে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বের হওয়ার সুযোগ দেন। আন্দোলনকারীরা জানান, দাবি না মানায় তারা বিশ্ববিদ্যালয় কার্যক্রম সম্পূর্ণ অচল করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের ভাষ্য, প্রশাসন এখনো কোনো আশ্বাস দেয়নি। দাবিগুলো দ্রুত না মানলে আন্দোলন আরও কঠোর করা হবে। এদিকে গত ৩১ আগস্ট একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে শিক্ষকদের প্রায় ৮ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখা ও পরবর্তীতে ঘটে যাওয়া ভাঙচুরসহ অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের শনাক্ত ও সার্বিক বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য গতকাল ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বাকৃবি প্রশাসন। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেদন বা সুপারিশ জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো- অবৈধভাবে দেওয়া হল ভ্যাকেন্টের নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হবে; হলগুলোর সব ধরনের সুবিধা নিরবচ্ছিন্ন রাখা; শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং শিক্ষকদের মদতে বহিরাগত হামলার দায়ে প্রক্টরিয়াল বডিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ; বহিরাগতদের ককটেল বিস্ফোরণ, লাইব্রেরি-স্থাপনা ভাঙচুর, নারী শিক্ষার্থী হেনস্তা ও হামলার ঘটনায় উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে; হামলায় জড়িত বহিরাগত সন্ত্রাসী ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অবিলম্বে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রি প্রদান করতে হবে, তিনটি ভিন্ন ডিগ্রি মেনে নেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীরা চাকরির ক্ষেত্র বিস্তৃতকরণ ও নিয়োগে নিশ্চয়তার দাবিতে কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর দাবি জানিয়ে উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি দেন। ১২ আগস্ট উপাচার্যের উদ্যোগে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে গত ৩১ আগস্ট একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় ২৫১ জন শিক্ষক সর্বসম্মতিক্রমে তিনটি পৃথক ডিগ্রি প্রদানের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু শিক্ষার্থীদের দাবি ভেটেরিনারি ও পশুপালন অনুষদকে একীভূত করে একটি ডিগ্রি দেওয়া।