বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থী সাবেকুন নাহার সনি হত্যা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত মুশফিক উদ্দীন টগরকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে র্যাব। কারাভোগ শেষ হওয়ার পর টগর আন্ডার গ্রাউন্ডে চলে গিয়েছিলেন। এরপর তিনি অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন। তিনি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে সন্ত্রাসীদের সরবরাহ করতেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর আজিমপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে-৩২ মিলিমিটারের একটি রিভলবার, একটি ম্যাগাজিন, একটি কাঠের পিস্তলের গ্রিপ, ১৫৫ রাউন্ড (২২ রাইফেল) গুলি, একটি ৭.৬২ মিলিমিটারের মিসফায়ার গুলি, একটি শটগানের খালি কার্তুজ, দুটি মুখোশ ও দুটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
গতকাল রাজধানীর র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র?্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন। তিনি জানান, আমরা অস্ত্র উদ্ধারে গিয়ে তার পরিচয় পাই। তখন জানতে পারি তিনি বুয়েট শিক্ষার্থী সনি হত্যা মামলার অন্যতম আসামি। সনি হত্যা মামলায় ২০০২ সালে ২৪ জুন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন টগর। একই বছরের ২০ আগস্ট তৎকালীন সরকারের বিশেষ বিবেচনায় কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। কর্নেল ফায়েজুল আরেফীন জানান, টগরের নামে একটি মাদক মামলাও রয়েছে। তিনি সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধভাবে অস্ত্র সংগ্রহ করে ঢাকায় এনে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে সরবরাহ করেন। টগর কার কাছে এসব অস্ত্র সরবরাহ করতেন তা এখনো জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। ২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েট ক্যাম্পাসে দরপত্রকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষের সময় ক্লাস শেষে হলে ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রাসায়নিক কৌশল বিভাগের ১৯৯৯ ব্যাচের ছাত্রী সাবেকুন নাহার সনি। ঘটনার পর দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। গ্রেপ্তার হন টগর, মোকাম্মেল হায়াত খান ও নুরুল ইসলাম সাগরসহ আরও পাঁচজন। ২০০৩ সালের ২৯ জুন ঢাকার বিচারিক আদালত টগর, মোকাম্মেল হায়াত খান ও নুরুল ইসলাম সাগরকে মৃত্যুদণ্ড এবং অপর পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তবে ২০০৬ সালের ১০ মার্চ উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন এবং যাবজ্জীবন পাওয়া দুই আসামিকে খালাস দেন। বর্তমানে দণ্ডপ্রাপ্ত ছয়জনের মধ্যে চারজন কারাগারে আছেন।