অন্তর্বর্তী সরকারের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পাঁচ মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। গতকাল বিকালে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক অনুষ্ঠানে সমঝোতা স্মারকে সই করেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। এ সময় উপদেষ্টা বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিজ প্রতিষ্ঠানে উৎপাদিত সৌর বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে আনতে পারবে না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচির উদ্যোগ ‘ক’ (এই উদ্যোগের ফলে বাংলাদেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানে সরকারের অর্থায়নে এর নিজস্ব ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল স্থাপন করবে) আর উদ্যোগ ‘খ’ (শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও স্বাস্থ্য স্থাপনা : স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও হাসপাতালে ওপেক্স মডেলে বিনিয়োগ, যেখানে প্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো ব্যয় বহন করতে হবে না) বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ওই চুক্তি হয়। ‘ক’ এবং ‘খ’ শ্রেণির আওতায় দুই থেকে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ এবং মহিলা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগ এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেছে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, ‘বিদ্যুতের জন্য বিদেশ থেকে গ্যাস আমদানি করলে দাম অনেক বেড়ে যায়। এ থেকে মুক্তির জন্য নবায়নযোগ্য জ্বালানি সোলার কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচি আমাদের অস্তিত্বের প্রশ্ন, সফল করতেই হবে। ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যদি পাই, ব্যয়বহুল বিদ্যুৎ চালাতে হবে না। যারা নবায়নযোগ্য খাত থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যর্থ হবে সেই সংস্থাগুলোর প্রধানের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নেব। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে আনতে হবে।’ আর বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ বলেন, ‘সারা দেশে খ শ্রেণির তালিকাভুক্ত ৪৬ হাজার ৮৫৪টি প্রতিষ্ঠানের ছাদে ৩০৮ বর্গফুট জায়গা আছে। এসব ছাদে ১৪৫১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। এরই মধ্যে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ডিসেম্বরের আগেই প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হবে।’ বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়নে বিতরণ কোম্পানির মাধ্যমে স্থান নিশ্চিত করে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা জানান, তাদের আওতাভুক্ত এলাকার প্রতিষ্ঠানের ছাদে ১০৬৪ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব।