বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনার বিচার না হলে, আগামীর নেতৃত্ব হত্যাকাণ্ডে উৎসাহ পাবে। তাই গণহত্যাকারী হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তাকে দ্রুত বিচরের আওতায় আনতে হবে। কোনোভাবেই তাকে ছাড়া যাবে না। পাশাপাশি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের প্রত্যাশিত সরকার গঠন করতে হবে। আগামী দিনে মানুষের চাওয়া-পাওয়া পূরণে আমাদের ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, হাসিনার অস্ত্রের সামনে একমাত্র বিএনপিই সেদিন সংস্কারের কথা বলেছিল, সেদিন মাঠে আর কেউ ছিল না।
ক্রসফায়ারে নিহত ফেনীর যুবদল নেতা মাসুদের পরিবারকে ঘর উপহার প্রদান উপলক্ষে আজ বিকালে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভার্চুয়ালি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার সাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সোনাগাজীর যুবদল নেতা মাসুদের পরিবার ছাড়াও গত আন্দোলন-সংগ্রামে নিহত বৃহত্তর নোয়াখালীর প্রায় অর্ধশত নিহতের পরিবারকে নগদ আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন। এছাড়া ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবেদীন ফারুক, দলের যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বিএনপির সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তারেক রহমান বলেন, ফেনীর সঙ্গে আমার রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলা আমার জন্য আনন্দের। হাজারো মানুষের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। তবে গত ১৬ বছর ধরে যারা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, সংস্কারের নামে কোনো ষড়যন্ত্র হলে দেশে অশান্তি সৃষ্টি হবে। যত দ্রুত জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হবে, তত দ্রুতই বাংলাদেশ সঠিক পথে হাঁটবে। বর্তমানে আমাদের ভেতর অনেক অনুচর প্রবেশ করে বিভ্রান্তি তৈরি করার নীলনকশা করছে বলেও জানান তিনি।
সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেন, উপদেষ্টারা আজ কাকে শত্রু পক্ষে দেখছে, সরকারের ভেতর এখনো হাসিনার দোসররা লুকিয়ে আছে। হাসিনা ইন্ডিয়ায় পাহাড়ের গুহায় বসে অনলাইন থেকে অবরোধ ডাকছে। আজকে অবাক হই সরকারি কর্মকর্তা হাসিনার জন্য লিফলেট বিতরণ করছে। এতো সাহস হয় কীভাবে। এর দায়ভার বর্তমান সরকারের।
তিনি বলেন, একটি দল আগে বলতো গণতন্ত্র হচ্ছে বিষ মাখানো দুধের মতো। কিন্তু তারা আজ যে খেলায় মেতেছে তা জনগণ বুঝে। শেখ হাসিনার আঁচল ধরে অতীতে অনেকেই রাজনীতিতে পুনর্বাসন হয়েছে।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আমরা তারেক রহমানের নানার বাড়িতে এসেছি, অতিথি হয়ে নয়। বেড়াতে এসেছি। ছাত্রদের রাজনৈতিক দলের বিষয়টি অস্বস্তির।
সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ন্যূনতম সংস্কার করে নির্বাচনের সুযোগ করে দিন। ১৭ বছরের বিএনপির শ্রম ঘাম ও রক্তের উপর আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন। বিএনপি শুধু বড় দল নয়, এই মুহূর্তে আজকের বাংলাদেশের বৃহত্তম দল।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, আমরা তারেক রহমানের অপেক্ষায় আছি। হাসিনা সরকারের হাতে একমাত্র ফেনীতেই ৩শত জন নিহত হয়েছেন। এর সবগুলো হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।
জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেন, জুলাই আগস্টের আন্দোলনকারীদের মূল শক্তি ছিলেন তারেক রহমান। যারা হাসিনাকে এখন ক্ষমা করতে চায়, তারাই তাকে অতীতেও পুনর্বাসন করেছে।
শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, ত্যাগ স্বীকার করা বিএনপির পরিবারের সঙ্গে আমাদের দল সব সময় রয়েছে। হাসিনার অত্যাচারের কাছে বিএনপি কখনো মাথা নত করেনি। ৫ তারিখের পরে অনেকেই হাসিনাকে ক্ষমা করে দিতে চায়। শুধু হাসিনাই নয়, তার দোসরাদেরও বিচার করতে হবে।
সাবেক এমপি রেহানা আক্তার রানু বলেন, আগে আমরা বলতাম চশমাওয়ালা বুবুজান, নৌকা লইয়া পালাই যান। আজ কিন্তু তাই হয়েছে। শেখ হাসিনা ভারতে গিয়ে রোহিঙ্গার মতো আশ্রয় নিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত