৬ আগস্ট, ২০১৬ ১০:০৭

বিমানে আগুন, তবুও ব্যাগ নামাতে ব্যস্ত যাত্রীরা!

অনলাইন ডেস্ক

বিমানে আগুন, তবুও ব্যাগ নামাতে ব্যস্ত যাত্রীরা!

প্রাণ যায় যাক। ব্যাগ যেন না হারায়! দুবাই বিমানবন্দরে ক্র্যাশ-ল্যান্ড করার কিছুক্ষণের মধ্যেই এমিরেটসের বিমানে বিস্ফোরণ হয়। পুড়ে ছাঁই হয়ে যায় বিমানটি। ভাগ্যের জোড়ে বেঁচে যান কর্মীসহ ৩০০ যাত্রী। যারা পরে বলছিলেন, সময়ের একটু এদিক-ওদিক হলেই প্রাণ হাতে নিয়ে ফিরতে হত না। কিন্তু বিমানের ভেতরে থাকার সময় প্রাণ নিয়ে কি আদৌ চিন্তিত ছিলেন যাত্রীদের একটা বড় অংশ? 

দুর্ঘটনার একদিন পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে একটি ভিডিও। ১ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডের সেই অ্যামেচার ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে , জীবন বাঁচানোর থেকেও সিটের উপর থেকে ব্যাগ নামাতে বেশি ব্যস্ত তারা। বিমানের ভিতরে তখন রীতিমতো হট্টগোল। বাচ্চারা কাঁদছে। সবাই উঠে পড়েছেন। সিটের উপর থেকে ঝুলছে অক্সিজেন মাস্ক। ভয়ে খুলে ফেলেছিলেন অনেকেই। একবার ক্যামেরায় ধরা পড়ল আগুনের ঝলক।

বিমানকর্মীদের চিৎকার শোনা যাচ্ছে ---জাম্প, জাম্প, জাম্প। জাম্প অন দ্য স্লাইড। যাত্রীরা তখনও ব্যাগ, সুটকেস খুঁজতে ব্যস্ত। একজন আবার ল্যাপটপ বলে চিৎকার করে উঠলেন! পরিস্থিতি বুঝে মহিলা কণ্ঠের এক বিমানকর্মীর আর্তনাদ--- কুইক, কুইক। লিভ, লিভ। বিমান ধ্বংস হয়ে গেলেও যে ভাবে বিনা আঁচড়ে যাত্রীরা লাউঞ্জে ফিরে আসতে পেরেছেন, তার জন্য এমিরেটসের বিমানকর্মীদের সকলেই দু'হাত তুলে প্রশংসা করেছেন। 

ভিডিয়োটি সামনে আসার পর বোঝা যাচ্ছে , মৃত্যুভয় উপেক্ষা করেও জিনিসপত্রের মোহে বিমান থেকে বেরোতে পারছিলেন না অনেকে। তাদের একপ্রকার ঠেলে-গুঁতিয়েই নামাতে হয় বিমান থেকে। আরেকটি ঘটনা হল, মহাবিপদের পরিস্থিতি দেখেও মোবাইলে ভিডিওটি তুলছিলেন এক যাত্রীই! অন্য একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে , ব্যাগ হাতে ট্যাক্সি বে থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসছেন যাত্রীরা। পিছনে কালো ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছে এমিরেটসের সেই বিমান। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ ঘটে।

ডানার একটি অংশ উড়ে যেতেও দেখা যায়। বিয়ের দাওয়াত খেতে দুবাইয়ে যাওয়া এক যাত্রী আব্রাহাম থমাস বলেন , 'বিমানটি মাটিতে ছোঁয়ার পর মনে হল, পাইলট আবার উড়ে যেতে চাইছেন। আমি জানলার সিটে বসেছিলাম। হঠাৎ দেখলাম, বিমান থেকে একটি ইঞ্জিন খুলে বেরিয়ে গেল! ওই অবস্থাতেই প্রায় পাঁচ মিনিট ঘষতে ঘষতে বিমানটি একসময় থামে। ইমার্জেন্সি গেট খুলে আমাদের লাফিয়ে বেরোতে বলা হয়। 'অনেক যাত্রী অবশ্য পাসপোর্ট, টাকা পয়সার ব্যাগ ফেলেই পালিয়ে এসেছেন। রানওয়ে ধরে খালি পায়ে হেঁটে এসেছেন অনেকে। আতঙ্কে জুতার কথা খেয়ালই হয়নি! কেন দুর্ঘটনা ঘটল, তা জানতে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার করা হয়েছে। ভয়েস এবং ডেটা রেকর্ডিং ঠিকঠাক ভাবে পাওয়ার আশায় রয়েছেন তদন্তকারীরা।

সূত্র: এই সময়

বিডি প্রতিদিন/৬ আগষ্ট ২০১৬/হিমেল-০৬

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর