অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসূতির তলপেটের একটি অংশ কেটে গর্ভস্থ সন্তানকে জন্ম দেওয়াকে সিজারিয়ান ডেলিভারি কেন বলা হয়, এই নিয়ে সবার মনেই প্রশ্ন।
প্রচলিত ধারণা হল, প্রাচীন রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার যেহেতু ছিলেন পৃথিবীর প্রথম সন্তান, যাকে এই ধরনের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জন্ম দেওয়া হয়। তাই একে বলা হয় সিজারিয়ান ডেলিভারি।
কিন্তু আদতে মোটেই এমন কিছু ঘটেনি। সিজারের জন্মের সময় থেকেই প্রসূতির পেট কেটে সন্তানের জন্ম দেওয়ার চল ছিল রোমান সাম্রাজ্যে তবে যেহেতু অ্যানাস্থেশিয়া এবং আধুনিক সরঞ্জাম ছিল না, তাই এই প্রক্রিয়াটি শুধুমাত্র সেই নারীদের উপরেই প্রয়োগ করা হতো, যারা হয় মৃত নয়তো মৃতপ্রায়। প্রসূতি মারা গেলেও যাতে গর্ভস্থ সন্তানকে বাঁচানো যায়, সেই উদ্দেশ্যেই এই ধরনের পদ্ধতি অবলম্বন করা হতো। খুব স্বাভাবিকভাবেই তাই যদি প্রসূতির পেট কেটে কোন সন্তানের জন্ম হতো, তবে সেই প্রসূতির বেঁচে থাকার কোনও সম্ভাবনা থাকত না।
অর্থাৎ যদি সত্যি সত্যিই সিজারিয়ান সেকশনের মাধ্যমে জুলিয়াস সিজারের জন্ম হতো, তবে তার মা সেখানেই মারা যেতেনন। কিন্তু সিজারের মা অরেলিয়া সিজারের জন্মের পরেও অন্তত বছর পঞ্চাশেক বেঁচে ছিলেন।
তবে ‘সিজার’-এর নাম এমন কেন হল? অনেক ঐতিহাসিকের মতে, সিজারের পূর্বসূরি ‘সেজাস’-এর নাম অনুসারেই ‘সিজার’ শব্দটির জন্ম। শোনা যায়, এই ‘সেজাস’-কেই নাকি তাঁর মায়ের পেট কেটে জন্ম দেওয়া হয়েছিল। আবার অন্য একটি মত অনুযায়ী, জুলিয়াসের পরিবারের সকলেই লম্বা লম্বা চুল রাখতেন, রোমানে যাকে বলা হতো ‘সেজারিজ’। এই সেজারিজ থেকেই সিজার শব্দটির উদ্ভব। কিন্তু জুলিয়াস সিজারের যে ক’টি প্রতিকৃতি পাওয়া যায়, তার সবক’টিতেই তার কদমছাঁট চুল।
বিডি প্রতিদিন/ ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন