৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ০৪:২৯

টানা ৭৭ বছর খাদ্য ও পানি ছাড়াই সুস্থ এই সন্ন্যাসী!

অনলাইন ডেস্ক

টানা ৭৭ বছর খাদ্য ও পানি ছাড়াই সুস্থ এই সন্ন্যাসী!

একটানা ৬৩ দিন অনশন করার পরে মৃত্যুবরণ করেছিলেন শহীদ যতীন দাস। বিজ্ঞান বলে, সাধারণভাবে পানি ও খাবার ছাড়া কোন মানুষের পক্ষে মাস দু'য়েকের বেশি জীবনধারণ করা সম্ভবও নয়। কিন্তু হিন্দু সন্ন্যাসী প্রহ্লাদ জানি, ওরফে মাতাজির দাবি, তিনি বিগত ৭৭ বছর ধরে পানি বা খাবার কিছুই মুখে তোলেননি। তবুও মৃত্যুতো দূরের কথা দুর্বলতা পর্যন্ত স্পর্শ করতে পারেনি তাকে।

১৯২৯ সালে গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেন প্রহ্লাদ। মাত্র সাত বছর বয়সেই আধ্যাত্মিক অনুসন্ধিৎসার তাগিদে নিজেদের রাজস্থানের বাড়ি ছেড়ে প্রহ্লাদ জঙ্গলে গিয়ে থাকতে শুরু করেন। প্রহ্লাদের বক্তব্য, মাত্র ১১ বছর বয়সেই দেবী অম্বার কৃপা লাভ করেন তিনি। তারপরে অম্বার মতোই লাল শাড়ি আর অলংকারে নিজেকে সজ্জিত করেন তিনি। দেবী অ‌ম্বাই নাকি প্রহ্লাদকে পানি ও খাদ্য ছাড়া জীবিত থাকার শক্তি প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেন।
 
প্রহ্লাদের বিশ্বাস, স্বয়ং দেবীই তার শিরস্থ ব্রহ্মরন্ধ্র দ্বারা এমন কিছু দ্রবণ তার শরীরে প্রবিষ্ট করিয়ে দেন যে অন্য কোন পানীয় বা খাদ্যের প্রয়োজনই হয় না তার। বর্তমানে প্রহ্লাদ গু‌জরাটের অম্বাজি মন্দিরের কাছে একটি জঙ্গলের অভ্যন্তরে একটি গুহার মধ্যে বসবাস করেন। রোজ ভোর ৪ টের সময় ঘুম থেকে উঠে পড়েন তিনি, এবং দিনের বেশিরভাগ সময়টা ধ্যানের মাধ্যমে কাটান।

কিন্তু প্রহ্লাদ কি সত্যিই অভুক্ত রয়েছেন ৭৭ বছর ধরে? তা কি আদৌ সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চ‌েষ্টা করেছিল বিজ্ঞান। ডাক্তার সুধীর শাহের নেতৃত্বে ডিফেন্স ইন্সটিটিউট অফ ফিজিওলজি অ্যান্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস এবং অন্যান্য ডাক্তারি সংস্থার সদস্যরা ২০১০ সালে একটি পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে প্রহ্লাদের না খেয়ে বেঁচে থাকার রহস্য ভেদ করার চেষ্টা করেন। আহমেদাবাদের স্টারলিং হাসপাতালের একটি ঘরে সিসিটিভি পর্যবেক্ষণের সামনে প্রহ্লাদকে রাখা হয় ১৫ দিন। সেই ১৫ দিন নাকি প্রহ্লাদ কিছুই খাননি বা পান করেননি। এমনকী টয়লেটেও জাননি। সেই অবস্থায় প্রহ্লাদের শরীরে নানা ডাক্তারি পরীক্ষা চালিয়ে দেখা যায়, তার শরীরী অবস্থা একেবারে স্বাভাবিক রয়েছে। এইসব দেখে ডাক্তাররা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছন যে, নিয়মিত ধ্যান এবং যোগাভ্যাসের ফলে সম্পূর্ণ খাদ্য ও পানিহীন অবস্থাতেও সুস্থ থাকার কোনও একটি কৌশল আয়ত্ত করে ফেলেছে প্রহ্লাদের শরীর। এহেন ক্ষমতা মানবসমাজে একেবারে তুলনারহিত বলে ব্যাখ্যা করেন ডাক্তাররা।

বিডি প্রতিদিন/  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬/ সালাহ উদ্দীন

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর