চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোয় গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার বেইজিংয়ে ‘সাম্প্রতিক বছরে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক সাফল্য ও চীনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সাল থেকে চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার ও আমদানির উৎসে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এ বাণিজ্য খুবই ভারসাম্যহীন। বাংলাদেশ চীন থেকে ৬০০ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি করছে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ থেকে চীনে রপ্তানির পরিমাণ ৫০ কোটি ডলারেরও কম।
চায়না ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (সিআইআইএস) নিজস্ব কার্যালয়ে এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে বাণিজ্যিক ব্যবধান কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০০৯ সালে ২১ দশমিক ২৪ মিলিয়ন থেকে ২০১২ সালে ১৮১ দশমিক ৯৪ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বেড়েছে। ২০১৩ সালে চীনের ৪৯টি কোম্পানি বাংলাদেশের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলগুলোতে ৩১ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ চীনের অনুদান ও সহায়তা পেয়েছে ২৬৬ দশমিক দুই মিলিয়ন ডলার। একই সময় ঋণ পেয়েছে এক হাজার ৭৩১ দশমিক নয় মিলিয়ন ডলার। চীনের এসব অনুদান, সাহায্য ও সহজ শর্তের ঋণ বাংলাদেশে ১৭টি প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করেছে। এ ছাড়া আরও ছয়টি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। ১৪টি অগ্রাধিকার প্রকল্পে সহজ শর্তের ঋণ সহায়তা বিবেচনার জন্য চীন সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে।
বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে চীনের অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে এ দেশের জনগণের লড়াইয়ে চীন আরও সমর্থন ও সহযোগিতা দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার অর্থনৈতিক করিডোরের (বিসিআইএম-ইসি) ব্যাপারে চীনের সক্রিয় ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, এই গ্রুপের প্রথম স্টাডি বৈঠকে যোগাযোগ, পণ্য বাণিজ্য, সেবা ও বিনিয়োগ, পরিবেশের টেকসই উন্নয়ন এবং জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগকে সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ বছরের শেষ দিকে ঢাকায় এই গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের সঙ্গে আজ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ কয়েকটি প্রকল্পে অর্থায়নের আশ্বাস দিয়েছে চীন। এছাড়া বাংলাদেশ-চীন অর্থনৈতিক ও কারিগরি সহায়তা চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে।