মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বুধবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অপর তিন বিচারপতি হলেন- নাজমুন আরা সুলতানা, সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
মুক্তিযুদ্ধের সময় বুদ্ধিজীবী হত্যা, গণহত্যার দায়ে ২, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে নিজামীর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগে। এ ছাড়া ১, ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
এদিন, নিজামীর পক্ষে আদালতে উপস্থিত ছিলেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান, শিশির মনির, নিজামীর ছেলে ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা, চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ। এ ছাড়া আদালতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যমের বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
নিজামীর রায় মানবতাবিরোধী মামলায় আপিল বিভাগের ৬ষ্ঠ রায়। এর আগে আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির পর জামায়াতে ইসলামীর দুই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার, মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের সাকা চৌধুরীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে।
অন্যদিকে, আপিল বিভাগের রায়ে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী আমৃত্য কারাদণ্ড ভোগ করছেন। এছাড়া শুনানি চলার মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধকালীন জামায়াতে আমির গোলাম আযম ও বিএনপির প্রাক্তন মন্ত্রী আবদুল আলীমের মৃত্যুবরণ করায় আপিলের নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে মতিউর রহমানের আপিলের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার জন্য ৬ জানুয়ারি ধার্য করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের ২৯ অক্টোবর নিজামীকে ফাঁসির দণ্ড দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। রায়ের বিরুদ্ধে একই বছরের ২৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন তিনি। ৬ হাজার ২৫২ পৃষ্ঠার আপিলে ফাঁসির আদেশ বাতিল করে খালাস চান নিজামী। মোট ১৬৮টি কারণ দেখিয়ে এ আপিল করা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/০৬ জানুয়ারি, ২০১৫/মাহবুব