প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকার ও বিরোধী দলের এমপিরা বলেছেন, দুর্নীতি, অর্থ লুণ্ঠন ও পাচার বন্ধ করা না গেলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব হবে না। এজন্য আর্থিক খাতে বিশৃক্সখলা ও ব্যাংক থেকে অর্থ লুন্ঠন বন্ধ এবং বিদেশে অর্থ পাচারের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান এমপিরা।
একইসঙ্গে জঙ্গী ও সন্ত্রাসীদের কোমর ভেঙ্গে দেওয়া না পর্যন্ত সারাদেশে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রাখারও প্রতি সমর্থন জানান তারা।
ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে বাজেট আলোচনায় অংশ নিয়ে এভাবেই নিজেদের উদ্বেগ উৎকন্ঠা প্রকাশ করলেন সংসদ সদস্যরা। আলোচনায় অংশ নেন সরকারি দলের সদস্য সাবেক পানি সম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, আফছারুল আমীন, সাধন চন্দ্র মজুমদার, আবদুল মজিদ খান, ডা. এনামুর রহমান, তালুকদার মোহাম্মদ ইউনুস, আবদুর রউফ, আবুল কালাম, সেলিনা জাহান রিটা, বেগম কামরুন লায়লা জলি ও সেলিনা বেগম, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য ডা. রুস্তম আলী ফরাজী এবং জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার ও শাহনারা বেগম।
জাসদের একাংশের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান বলেন, বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ আবার ফেনা তুলেছে। জঙ্গীদের অভয়াশ্রম হচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত। মুক্তিযুদ্ধের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে জঙ্গীবাদ নির্মূলে ধারাবাহিক আন্দোলনে নামতে হবে। জঙ্গী-সন্ত্রাসীদের কোমর ভেঙ্গে দেওয়া না পর্যন্ত সারাদেশে পুলিশের এই অভিযান অব্যাহত রাখতে হবে। বাজেট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে বিশৃক্সখলা রয়েছে। অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন ব্যাংক থেকে সাগর চুরি হয়েছে। এসব বন্ধ করা না গেলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মান সম্ভব হবে না। কঠোরহস্তে দুর্নীতি বন্ধ না করলে, বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি না করলে অর্থ পাচার হতেই থাকবে।
জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম তালুকদার বলেন, এ বাজেট একপেশে। দেশের একটি অংশকে অন্ধকারে রেখে অন্য অংশকে আলোকিত করার বাজেট দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী পূর্বাঞ্চল নিয়ে ব্যস্ত, উত্তরাঞ্চলের দিকে তাঁর কোনই নজর নেই। বাজেটেও এই বৈষম্য প্রকট। অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেন আর্থীক প্রতিষ্ঠানে পুকুর নয়, সাগর চুরি হয়েছে। তবে চোরদের ধরেন না কেন? চোর ধরতে কেন এতো দ্বিধা-দ্বন্দ্ব জাতি তা জানতে চায়।
ডা. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ লুন্ঠন হলো। ব্যাংক থেকে অর্থ নিয়ে দেশে বিনিয়োগ না করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন ঘুষ-দুর্নীতি চলছে। এসব কঠোরহস্তে বন্ধ করতে হবে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে বাজেটে বরাদ্দের অপ্রতুলতার সমালোচনা করে বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতকে বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে।
রমেশ চন্দ্র সেন বলেন, নির্বাচন প্রতিহত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি-জামায়াত জোট। তারা এখন উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করতে ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু তারা আবারো ব্যর্থ হবে। উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে তিনি দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, পরিকল্পিত হত্যাকান্ড ঘটিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এদের দ্রুত গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। তিনি দক্ষিণাঞ্চলের স্বপ্নের পদ্মা সেতুর নাম ‘শেখ হাসিনা সেতু’ করার দাবি জানান।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৮ জুন, ২০১৬/ আফরোজ