গত ২৪ মার্চ রাতে ময়মনসিংহের ভালুকায় একটি ছয়তলা ভবনের তৃতীয় তলায় গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ হন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ছাত্র শাহীন মিয়া, হাফিজুর রহমান ও দীপ্ত সরকার। একই বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মারা যান আরেক সহপাঠী তাওহীদুল ইসলাম। ওই দিনই দগ্ধদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে টানা বেশ কয়েকদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে সবাই হেরে গেলেন। একে একে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।
টানা চারদিন পর বুধবার দিবাগত রাতে না ফেরার দেশে চলে যান শাহিন মিয়া। এরপর মৃত্যুর কাছে হেরে যান হাফিজ। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টায় তিনিও সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন। সর্বশেষ আজ সকাল সাড়ে ৯টায় দিকে মারা যান দীপ্ত সরকার।
এ বিষয়ে বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারির জাতীয় প্রধান সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, শুরু থেকেই তাদের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন ছিল। শাহিনের ৮৩ শতাংশ, দীপ্তের ৫৪ এবং হাফিজের ৫৮ শতাংশ বার্ন হয়েছিল। তাদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছিল। এ ধরনের রোগীকে বাঁচানো খুবই ক্রিটিকেল। তবুও অামরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। কিন্তুু তারা চলে গেলেন।
এদিকে বিস্ফোরণের পর তাৎক্ষণিকভাবে এর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের সদস্যরা পরে পরীক্ষা করে জানান, গ্যাস থেকেই ওই বিস্ফোরণ ঘটেছিল। পুলিশ জানায়, ওই ভবনে আগে থেকেই তিনটি সিলিন্ডার রাখা ছিল; এর বাইরে অবৈধভাবে গাস সংযোগ নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে লিক করে ওই বাসায় গ্যাস জমে যায়।
ওই ভবনের মালিক ঝুট ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারায় অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে অল্পদিনের ব্যবধানে চার সহপাঠীকে হারিয়ে স্তব্ধ খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট)। ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বিডি প্রতিদিন/৩০ মার্চ ২০১৮/হিমেল