১৮ জুন, ২০১৯ ২১:২৬

বিদেশে অর্থ পাচারে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা নিয়ে কড়া সমালোচনা সংসদে

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশে অর্থ পাচারে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা নিয়ে কড়া সমালোচনা সংসদে

গত ১৩ জুন সংসদে উত্থাপিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়েছে। আলোচনায় অংশ নিয়ে বিদেশে অর্থ পাচারের বিষয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের ব্যর্থতা নিয়ে কড়া সমালোচনা করেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে সরকার দলের প্রবীণ সংসদ সদস্য অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে টাকা চুরি হয়ে গেল। আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলো না। এটা দুঃখের বিষয়। মানুষ আমাদের প্রশ্ন করে, জবাব দিতে পারি না। এ সময় তিনি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের টাকা আদায়ে প্রশাসন ও ব্যাংক কর্মকর্তাদেরকে সব প্রক্রিয়া প্রয়োগ করার তাগিদ দেন। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণের টাকা পাচার ঠেকানোর তাগিদ দেন তিনি।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বাজেট অধিবেশনে মঙ্গলবারের বৈঠকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

বাজেট আলোচনায় আরো অংশ নেন সরকারি দলের আবদুল মান্নান, সাইফুজ্জাম শেখর, পঙ্কজনাথ, হাবিবে মিল্লাত, মোছা. খালেদা খানম, আরমা দত্ত, রুবিনা আকতার মিরা, শেখ এ্যানি রহমান প্রমুখ।

অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধ্যাপক আলী আশরাফ বলেন, ঋণ আদায়ের যত প্রক্রিয়া আছে সব প্রয়োগ করুন। দুর্ঘটনাক্রমে কেউ ঋণ খেলাপি হলে একটা কথা থাকে। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণ খেলাপি করলে তাদের ধরতে হবে। কেউ খেলাপি ঋণের টাকা দেশ থেকে পাচার করলে সেটা যদি ধরা পড়ে, তাহলে তারও রেহাই নেই। এজন্য ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনায় জোরালো তদারকি দরকার। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর নানাভাবে প্রশ্ন আসতে পারে। ব্যাংক থেকে রিজার্ভ চুরি হয়ে গেছে। অথচ আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলো না, এটা দুর্ভাগ্যজনক। এটা জনগণের টাকা। ব্যাংকের নিশ্চয়তা কে দেয়? রাষ্ট্র। তাই এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসনে যারা আছেন, ব্যাংক কর্মকর্তা যারা আছেন তাদের বলছি, ব্যাংক ঋণ  খোলপিদের ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা নিন। যত প্রকার প্রক্রিয়া আছে তা প্রয়োগ করুন। 

অধ্যাপক আলী আশরাফ আরও বলেন, খেলাপি ঋণের টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে, যদি পাচার হয়ে যায় সেটার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি হয়ে গেলো। কিন্তু একজন কর্মকর্তা-কর্মচারীর জবাবদিহিতার আওতায় আনা হলো না, এটা মানুষ আমাদের প্রশ্ন করে। আমি অর্থমন্ত্রীকে বলবো দেশ থেকে নানাভাবে অর্থ পাচার হয়েছে। আশা করি, অর্থ পাচার রোধে ইস্পাত কঠিন সংকল্প নিয়ে আগাবেন। এনবিআরকে বলেন ট্যাক্স আদায়ে শক্ত হতে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, উপজেলা পর্যায়ে কর আদায়ের জন্য কর কর্মকর্তা নিয়োগ দেবেন। এখনও পর্যন্ত দফতরও নেই, কর্মকর্তাও নেই। কবে আদায় করবেন ট্যাক্স? 

তিনি আরও বলেন, অর্থমন্ত্রী যে বাজেট দিয়েছেন সেটা বাস্তবভিত্তিক, উচ্চাভিলাষী নয়। বাজেট বাস্তবায়নে সরকার পদক্ষেপ নিচ্ছে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দেশে খাদ্য উদ্বৃত্ত হয়েছে এটা সম্মানের বিষয়, মাথা উচু করে দাঁড়ানোর বিষয়। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগের উপরে। মূল্যস্ফীতি চরম সহনীয় পর্যায়ে চলে এসেছে। বিদ্যুৎ, শিক্ষা, কৃষি, যোগাযোগে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। বাজেটে যে লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে এটা বিশাল অংকের টাকা নয়। এ লক্ষ্য অর্জন করা যাবে। বাজেট আরও বড় করতে হবে। 


বিডি-প্রতিদিন/১৮ জুন, ২০১৯/মাহবুব

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর