শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বার্ষিক অডিট রিপোর্টে প্রদর্শিত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের অনৈতিক আচরণ ও ৩৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকির ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সংসদীয় কমিটি। কমিটিতে উপস্থাপিত অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী বিধি বর্হিভূতভাবে কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিল থেকে ব্যক্তি আয়কর পরিশোধ, বাসা-বাড়ির বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসা/ডরমেটরিতে থাকার পরও ভাড়া পরিশোধ না করা, আবার বই ক্রয় ভাতা গ্রহণ, ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রি ও পরীক্ষা খাতে অর্জিত অর্থ তহবিলে জমা না করার বিবরণে চরম হতাশা ব্যক্ত করেন কমিটি সদস্যরা। একইসঙ্গে বিষয়গুলো অনিয়ম হিসেবে চিহ্নিত করে দায়ী ব্যক্তির কাছ থেকে অনধিক দুই মাসের মধ্যে এসব টাকা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়য়ের প্রতি সুপারিশ করেছে।
সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে আজ অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠককে এ সুপারিশ করা হয়।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মোঃ রুস্তম আলী ফরাজী। কমিটির সদস্য ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, আবুল কালাম আজাদ, উপাধক্ষ মো. আব্দুস শহীদ, মো. শহীদুজ্জামান সরকার, সালমান ফজলুর রহমান, মনজুর হোসেন, আহসানুল ইসলাম (টিটু), মুস্তফা লুৎফুল্লাহ এবং মোঃ জাহিদুর রহমান বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেন।
সংসদের গণসংযোগ বিভাগ জানায়, বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০০৯ থেকে ১২-১৩ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের ২০০৭-২০১২ অর্থ বছরের অডিট অডিট আপত্তিগুলো পর্যালোচনা করে কমিটির দেওয়া নির্দেশনার আলোকে নিষ্পত্তির সুপারিশ করা হয়।
কমিটিতে উপস্থাপিত সাত বছর আগের রাজস্ব ফাঁকির প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তহবিল হতে বিধি বহির্ভূতভাবে ব্যক্তি আয়কর পরিশোধ করায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ১১ কোটি ১৮লাখ ৬৮ হাজার ৭ শত ৩৫ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসায় ও ডরমেটরীতে বসবাস করা সত্ত্বেও নির্ধারিত হারে বাড়ি ভাড়া এবং ডরমেটরি ভাড়া না দেওয়ায় বা কর্তন না করায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি ১০ কোটি ১৬ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮ শত ৪৯ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় / কলেজের তহবিল হতে শিক্ষক করমচারীদের আবাসিক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করায় আর্থিক ক্ষতি ২ কোটি ২ লক্ষ ১৮ হাজার ৬ শত ৪৮ টাকা। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ভর্তি পরীক্ষার ফরম বিক্রয়লব্ধ অর্থের ৪০% বিধি মোতাবেক সংস্থার তহবিলে জমা না করায় ক্ষতি ৯ কোটি ৪৫ লক্ষ ৪৫ হাজার ১শত ৭৪ টাকা। পরীক্ষা খাতে আদায়কৃত অর্থের ১৫% সরকারি কোষাগারে জমা না করায় রাজস্ব ক্ষতি ১১ লক্ষ ৮হাজার ৩ শত ৮৫ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের বিধি বহির্ভূতভাবে বই ভাতা পরিশোধ করায় আর্থিক ক্ষতি ৩১ লক্ষ ৮২ হাজার ৯শত ৩২ টাকা। কমিটি অনধিক দুই মাসের মধ্যে এসব টাকা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করে।
বৈঠকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, মাদ্রাসা ও কারিগরী বিভাগের সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় সমূহের ভাইস চ্যান্সেলরগণ, মহাহিসাব নিরীক্ষা অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার