র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) সদস্যদের মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে করা মামলায় অভিযুক্ত সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল প্রসঙ্গে বক্তব্য দিয়েছে র্যাব।
গতকাল রাতে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার সহকারী পরিচালক আ. ন. ম ইমরান খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গত ১১ মার্চ আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে র্যাব-১০ এর সিপিসি-৩ লালবাগ ক্যাম্পের একটি দল দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় (খাজে দেওয়ান লেন, চকবাজার) সরকারি কর্তব্য পালনকালে এ বি এম ইব্রাহীম খলিলসহ তার সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের বাধাপ্রদান ও তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। র্যাব সদস্যরা ওই এলাকায় একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীর সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। তখন এ বি এম ইব্রাহীম খলিল ও তার সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের পরিচয় জানতে চান। র্যাব সদস্যরা তাদের কাছে আইডি কার্ড, জ্যাকেট প্রদর্শন করে নিজেদের র্যাব-১০, সিপিসি-৩, লালবাগ ক্যাম্পের সদস্য পরিচয় দেন। এরপর এ বি এম ইব্রাহীম খলিল ও তার সহযোগীরা র্যাব সদস্যদের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করেন। র্যাব সদস্যরা ওই এলাকা ছেড়ে পার্শ্ববর্তী জায়গায় রাখা সরকারি মোটরসাইকেলের দিকে এগোতে থাকলে পেছন থেকে ওই ব্যক্তিরা ‘ভুয়া র্যাব’ বলে চিৎকার করে অতর্কিত আক্রমণ চালান। তারা র্যাব সদস্যদের কিল-ঘুষি মেরে জখম করেন। তখন র্যাব সদস্যদের চিৎকারে আশপাশের সাধারণ মানুষ সাহায্যের জন্য আসেন এবং তাদের উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় এ বি এম ইব্রাহীম খলিলকে গ্রেফতার করা হয়। তবে তার সহযোগীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।’
এতে আরও বলা হয়, ‘গ্রেফতারকালে ধস্তাধস্তি হওয়ায় সবাইকে সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে একই রাতে চকবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করে আসামি ইব্রাহীম খলিলকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। মামলার নম্বর-৩২/১৪৫, তারিখ ১২ মার্চ ২০২১, ফৌজদারি কার্যবিধির ১৮৬/৩৩২/৩৫৩ ধারায় এই মামলা হয়।’
‘১২ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গ্রেফতার এ বি এম ইব্রাহীম খলিলের একটি ভিডিও তাদের নজরে আসে। ভিডিওতে ইব্রাহীম খলিলের বক্তব্যের আলোকে র্যাবের বক্তব্য হলো- এ বি এম ইব্রাহীম খলিল দাবি করেন তাকে বুধবার (অর্থাৎ গত ১০ মার্চ) সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ১১ মার্চ বৃহস্পতিবার আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৫টায় সরকারি কর্তব্যে বাধা প্রদানের জন্য প্রকাশ্যে দিবালোকে জনসমাগমপূর্ণ এলাকা চকবাজারের খাজে দেওয়ান দ্বিতীয় লেনের চলাচলের রাস্তা থেকে উপস্থিত অনেক লোকের সামনে ইব্রাহীম খলিলকে গ্রেফতার করা হয়। ওই এলাকায় গ্রেফতারকৃতদের অবস্থান উপযুক্ত সাক্ষী ও উপস্থিত জনগণ ও প্রযুক্তি দ্বারা সন্দেহাতীতভাবে নিশ্চিত।’
র্যাবের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এ বি এম ইব্রাহীম খলিল চকবাজারের ঘটনাস্থলে আকস্মিকভাবে উপস্থিত হওয়ার তথ্যদাতা সম্পর্কে র্যাব মাঠপর্যায়ে ও প্রযুক্তিগতভাবে অনুসন্ধান করছে। এ ছাড়া র্যাব একটি পেশাদার বাহিনী ও প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। বর্ণিত ভিডিওটিতে এ বি এম ইব্রাহীম খলিল উসকানিমূলক আঙ্গিকে এলিট ফোর্স র্যাব সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করেছেন, যা একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে অনৈতিক ও অনাকাঙ্ক্ষিত।’
এদিকে, র্যাব সদস্যদের মারধর ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে করা মামলায় রবিবার জামিন পান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইব্রাহিম খলিল। ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী তার পক্ষে জামিন শুনানি করেন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ