সোমবার রাতের মধ্যেই প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘ইয়াস’। ক্রমশ শক্তি আরও বাড়াচ্ছে। দ্রুতগতিতে স্থলভাগের দিকে ধেয়ে আসছে এটি। মঙ্গলবারের মধ্যে এটি আরও শক্তিশালী হয়ে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ প্রবল আকার ধারণ করে সমুদ্রে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এমন অবস্থায় বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরগুলোর জন্য দুই নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করেছে আবহাওয়া অধিদফতর।
সকাল সাড়ে সাতটার দিকে আবহাওয়াবিদ এ কে এম রুহুল কুদ্দুস জানিয়েছেন, গত ছয় ঘণ্টায় ঘূর্ণিঝড়টি নয় কিলোমিটার গতিতে এগিয়েছে এবং এটি আরও শক্তি সঞ্চয় করবে।
তবে এই ঘূর্ণিঝড় বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস।
“এখনও পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে, এই ঘূর্ণিঝড়ের পুরো গতিপথ ভারতের উড়িষ্যা এবং পশ্চিমবঙ্গের দিকে। উপকূলে আসার পর ভারতের দিকে যাওয়ার পথে বাংলাদেশের খুলনা এবং সাতক্ষীরা উপকূলে কিছু বৃষ্টিপাত হবে,” বলেন আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার থেকে ৫২০ কিলোমিটার, মংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। ঝড়ো হাওয়ার আকারে এর গতি ১১৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
কোথায় আঘাত হানতে পারে ‘ইয়াস’
ভারতের আবহাওয়া ভবনের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, শেষ ছয় ঘণ্টায় (স্থানীয় সময় রাত ১১ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত) প্রায় ১০ কিলোমিটার বেগে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়েছে ‘ইয়াস’, যা আগের থেকে অনেকটাই বেশি গতি। আপাতত সেটি পারাদ্বীপের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ৩৯০ কিলোমিটার, বালাসোরের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে ৪৯০ কিলোমিটার, দিঘার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ৪৭০ কিলোমিটার এবং বাংলাদেশের খেপুপাড়ার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দূরে অবস্থান করছে, যা ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে আগামীকাল বুধবার ভোরের দিকে উত্তর উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছে পৌঁছাবে। তারপর দুপুরে পারাদ্বীপ এবং সাগরের মাঝখানে বালাসোরের কাছাকাছি স্থলভাগে আছড়ে পড়বে।
উড়িষ্যার তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে ‘ইয়াস’-এর দাপট অনেকটাই কম থাকছে। মূলত উড়িষ্যা লাগোয়া পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকা নিয়ে চিন্তা বেশি। তাছাড়া দুই ২৪ পরগনা এবং ভারতের দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলায় ‘ইয়াস’-এর দাপট মারাত্মক হবে না। ঝড়ের বেগ আমফানের মতো তীব্র হবে না। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস ও বিবিসি বাংলা
বিডি প্রতিদিন/কালাম