বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ২৫ মার্চ সারা দেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা দিবস পালন করা হবে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হবে শহীদদের। গতকাল বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন। প্রজন্ম ’৭১ ‘একাত্তরের গণহত্যার স্বীকৃতি দাও’ শীর্ষক এ গোলটেবিলের আয়োজন করে। এতে আলোচক হিসেবে আরও বক্তব্য দেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশিদ, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, প্রখ্যাত অভিনেতা ও নাট্যব্যক্তিত্ব পীযূষ বন্দোপাধ্যায়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গোলাম কুদ্দুস, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির প্রধান ডা. এম এ হাসান, অভিনেত্রী ও শহীদ সন্তান শমী কায়সার, ডা. নুজহাত চৌধুরী, আসিফ মুনির প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহীন রেজা নূর।
তোফায়েল আহমেদ আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশের নেতৃত্বে থাকায় দেরিতে হলেও গণহত্যা দিবস ঘোষণা সম্ভব হয়েছে। ২৫ মার্চ টার্গেট করে গণহত্যা চালানো হয়েছে। আরও আগে এ দিবস ঘোষণা হওয়া উচিত ছিল। প্রধানমন্ত্রীর কারণেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও সম্ভব হয়েছে।
এবার বিভিন্ন দেশের কাছ থেকে গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি আদায় করতে হবে। এজন্য দূতাবাসগুলোকে কাজ করতে হবে। অনেক বিসর্জন, ত্যাগ, তিতিক্ষার পরই আমাদের স্বাধীনতা। এ দেশ অসাম্প্রদায়িক। এ নিয়ে কোনো আপস করা যাবে না। উন্নয়নের পথে দেশ সঠিকভাবেই এগোচ্ছে।আবদুর রশিদ বলেন, গণহত্যাকে ভুলিয়ে দিতে বারবার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা গণহত্যা চালিয়েছে, গণহত্যার পক্ষে ছিল তারাই এ চেষ্টা করেছে। আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী যারা মানুষ হত্যা করেছে আর যারা হত্যায় সাহায্য করেছে উভয়েই অপরাধী। রাষ্ট্রকে অনুরোধ করব যাতে প্রতিবেশী বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলোর কাছ থেকে দ্রুত স্বীকৃতি আদায় করা যায় গণহত্যা দিবসের।
শ্যামল দত্ত বলেন, গণহত্যা ছিল পরিকল্পিত। এ গণহত্যার কথা পাকিস্তান আজও স্বীকার করে না। দেশের ভিতরেও দেশ বিরোধীরা এ গণহত্যার কথা স্বীকার করতে চায় না।
পীযূষ বন্দোপাধ্যায় বলেন, দেশে গণহত্যা চালানো হলেও এটি নিয়ে এতদিন বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল। বিভ্রান্তি ছড়ানো হয়েছিল মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়েও।
তুরিন আফরোজ বলেন, অনেক দেরিতে হলেও গণহত্যা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছি। এবার আমরা শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে পারব। মুক্তিযুদ্ধবিরোধীরা ইতিহাস বিকৃতিতে ব্যস্ত। দীর্ঘ সময়ে ক্ষমতায় থাকাকালে ইতিহাস বিকৃত করেছে তারা। তরুণ প্রজন্মের কাছে গণহত্যার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা জরুরি।