বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা
পর্দা নামল এশিয়ান সামিটের

এলপিজি প্রসারে বিপুল সম্ভাবনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশি-বিদেশি দর্শনার্থী সমাগমে শেষ হলো এশিয়া রিজিওনাল এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) সামিট। ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) আয়োজিত এ সামিটে ৩০টি দেশের প্রায় অর্ধশত প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে। দুই দিনব্যাপী এ আয়োজনে এক ডজনের বেশি সেমিনারে এলপিজি খাতের দেশি উদ্যোক্তা ছাড়াও অংশ নেন শতাধিক বিদেশি ডেলিগেট। সেমিনারে বাংলাদেশে তীব্র গ্যাস সংকটের মধ্যে নিরাপদ ও পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে এলপিজি প্রসারের বিপুল সম্ভাবনার কথা তুলে ধরেন বক্তারা।

বক্তারা বলেন, দেশের গৃহস্থালি কাজে দ্রুত বাড়ছে এলপিজির চাহিদা। দেশের মোট এলপিজির ৮৫ ভাগ ব্যবহার হচ্ছে গৃহস্থালি কাজে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলেও চলে গেছে এলপিজি সিলিন্ডার। গত আট বছরে বাসাবাড়িতে এলপিজির চাহিদা বেড়েছে প্রায় ১৪ গুণ। এতে গৃহিণীদের কষ্ট কমেছে। সেই সঙ্গে বৃক্ষ নিধন কমেছে। শিল্পেও বাড়ছে এলপিজির ব্যবহার। দ্রুত চাহিদা বাড়তে থাকায় এলপিজি খাতে রয়েছে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা। প্রয়োজন শুধু সরকারের নীতিগত সহায়তা।

গতকাল সকালে একটি সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান মো. নুরুল আমিন। তিনি বলেন, জ্বালানি একটি দেশের উন্নয়নের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এলপিজি ব্যবহারের ফলে গাছ কাটার পরিমাণ অনেক কমেছে। যে কারণে এলপিজি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এর প্রসার প্রয়োজন। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশনের সিইও এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জেমস রোক্যাল, এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (লোয়াব) সভাপতি আজম জে চৌধুরী, ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তানজীম চৌধুরী, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সের সাবেক মহাপরিচালক (অব.) ব্রিগে. জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান প্রমুখ।

বিকালে ‘ক্লিন এনার্জি ফুয়েল হিসেবে এলপিজি এশিয়ার জন্য একটি পরিষ্কার রান্নার সমাধান’ বিষয়ক প্যানেল ডিসকাশনে মূল প্রবন্ধে বসুন্ধরা গ্রুপের (সেক্টর-এ) পরিকল্পনা ও জনসংযোগ প্রধান এবং বিএলএনজি, বিপিপিএল-এর বিভাগীয় প্রধান মো. জাকারিয়া জালাল জানান, দক্ষিণ এশিয়ার মার্কেটে এলপিজি ব্যবহার সব থেকে বেশি হয় গৃহস্থালি কাজে। ভারতের মোট এলপিজির ৯১ শতাংশ, পাকিস্তানের ৮৪ শতাংশ ও বাংলাদেশের ৮৫ শতাংশ বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত হয়। দক্ষিণ এশিয়ায় গৃহস্থালি কাজে এলপিজির চাহিদা ৮০ মিলিয়ন মেট্রিক টন হলেও সব কোম্পানি মিলে চাহিদা পূরণ করতে পারছে ২৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন। প্যানেল আলোচনায় বসুন্ধরা এলপি গ্যাসের সিইও (ব্র্যান্ড অ্যান্ড মার্কেটিং, সেক্টর-এ) এম এম জসিম উদ্দিন বলেন, ভারত এলপিজিতে ভর্তুকি দেয়। আমরা ভর্তুকি চাচ্ছি না, শুধু এই খাতে সরকারের নীতিগত সহযোগিতা চাই। তাহলেই এলপিজিতে বিনিয়োগ আসবে। এলপিজির প্রসার হবে। আলোচনায় মডারেটর হিসেবে ছিলেন ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশনের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর মাইকেল কেলি। আলোচনায় আরও অংশ নেন আইওসি এলপিজির নির্বাহী পরিচালক শৈলেন্দ্র কুরুমাদ্দালী। ওয়ার্ল্ড এলপিজি অ্যাসোসিয়েশন এই সামিটের আয়োজন করে। প্লাটিনাম পার্টনার ও ভেনু হোস্ট হিসেবে ছিল বসুন্ধরা এলপিজি লি.।

সর্বশেষ খবর