ভারতীয় রাজনীতিবিদরা বরাবরই জ্যোতিষে আস্থা রেখেছেন। জ্যোতিষের ওপর তাঁদের অগাধ ভরসা। গডম্যান এবং জ্যোতিষীরা তাই খামের গায়ে ডাক টিকিটের মতো ইন্ডিয়ান পলিটিসিয়্যানদের সঙ্গে এঁটে রয়েছেন বলা যায়। ভারতীয় রাজনীতিতে এই মুহুর্তে আলোচিত নাম দুইটি। একটি বিজেপি'র নরেন্দ্র মোদি অন্যটি কংগ্রেসের রাহুল গান্ধী। আগামীতে দেশটির প্রধানমন্ত্রীত্বের মূল দাবীদারও এই দুইজন। উন্নত টেকনোলজি রয়েছে, সেই প্রযুক্তির হাতও ধরছেন রাজনীতিবিদরা কিন্তু তার পাশাপাশি জ্যোতিষেও আস্থা রাখছেন তাঁরা।
এসএমএস, ফেসবুক, ইন্টারনেট, টু্ইটার, চ্যাট অন, ভিডিও কনফারেন্সিং-এ প্রচন্ড পেশাদার নরেন্দ্র মোদি রীতিমতো হাঁচি, কাশি, টিকটিকি মেনে চলেনে। এব্যাপারে তিনি ভারতীয় প্রচীন দর্শণেরই অনুসারী। সেই কারণেই তাঁর সহযোগীরা নরেন্দ্র মোদির ছকটিকে গড়িয়েছেন অভিজ্ঞ পন্ডিতের দ্বারা।
৬৩ বছর বয়স্ক মোদির লগ্নদৃষ্টি মঙ্গল ও চন্দ্র দ্বারা প্রভাবিত। তাই জন্মকুন্ডলীতে মঙ্গলের অবস্থান এই মুহুর্তে এমন জায়গায় পৌঁছেছে যা পঞ্চম মহাপুরুষ রাজযোগ তৈরি করেছে, যার পরিভাষীক নাম রূচক। এর দ্বারা একসময়ের সামান্য একজন চা বিক্রেতাও হয়তো বা দেশের দন্ডমুন্ডের কর্তা হয়ে উঠতে পারেন। মোদির চন্দ্র এবং রাহু অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রচন্ড সক্রিয় থাকবে। ফলে তাঁর খ্যাতি সর্বোচ্চ চূড়ায় পৌঁছবে। চন্দ্র এবং রাহু পরস্পরকে তুষ্ট করায় মোদির সৌভাগ্য তাঁকে সাফল্যের মিনারে পৌঁছে দিতে পারে। তবে মোদির লক্ষ্যপূরণে একমাত্র বাধা হয়ে দেখা দিতে পারে রাহু। যদিও সেই রাহু কতটা সক্রিয় থাকবে তা জ্যোতিষিরাও বলতে পরছেন না।
মোদির প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে যিনি চিহ্নিত সেই রাহুল গান্ধী বয়সে বেশ নবীন। তাহলে এমনটা মনে করার কোন কারণে নেই যে জ্যোতিষে রাহুলের কোন আস্থা নেই। তাই পলিটিক্যাল ম্যানেজারারাও রাহুলের লগ্ন বিচার করে কোষ্ঠী তৈরি করিয়েছেন।
রাহুলের লগ্ন বৃষ। নক্ষত্র লগ্ন বিচারে রাহুলের কোষ্ঠীতে রাজযোগ থাকলেও তার পূর্ণ সদব্যবহার করতে পারবেন কি না তাতে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। স্বভাবতই রাহুল প্রথম দর্শনেই নিজেকে মানুষের মনে প্রতিষ্টিত করতে পারলেও বৃহস্পতির প্রকোপে দীর্ঘক্ষণ প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। ঠিক এই মুহুর্তে চন্দ্র এবং বুধ রাহুলের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারী পর্যন্ত এই চন্দ্র ও বুধের প্রভাব জারি থাকবে রাহুলের ওপর। বুধের অবস্থান রাহুলের জীবনে এমনই, সেটা তাঁর পতনের কারণ পর্যন্ত হতে পারে।
জ্যোতিষীদের এই বিচার মাথায় রেখে রাজনীতিবিদরা চলেন। কিন্তু ভবিষ্যত বাণী যে সবসময় মেলেনা তা তারাও ভালই জানেন। আসলে যে ভারতবর্ষে ইনস্যাট উপগ্রহ লঞ্চ করার আগে তার শুভক্ষণ গণনার ক্ষেত্রে ইসরো'র মতো একটি বৈজ্ঞানিক সংস্থা জ্যোতিষীর আশ্রয় নেন সেখানে চরম অনিশ্চিত রাজনীতির ময়দানে ভোট প্রার্থীরা জ্যোতিষের উপর আস্থা রাখবেন না এটাই আশ্চর্যের।