১. মুক্তিযুদ্ধে গৌরবময় ভূমিকা রাখার জন্য বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত আমাদের বাহিনীর ডেপুটি চিফ এ কে খন্দকার শেখ হাসিনার সরকারের পাঁচটি বছর পরিকল্পনামন্ত্রী হিসেবে খেয়ে দেয়ে হাত মুখ মুছে আরাম করে একখানি বই লিখেছেন। সম্প্রতি ‘প্রথমা’ থেকে প্রকাশিত এ বইটির নাম ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’। ১৯৭১ সালের এপ্রিলে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেওয়া তৎকালীন বিমানবাহিনীর গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ কে খন্দকারের এ বইটি বিতর্কের ঝড় তুলেছে। সুমহান স্বাধীনতা সংগ্রামে ও মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত নেতারাও বৃহস্পতিবার সংসদে এ নিয়ে তুমুল ক্ষোভ প্রকাশ করে যুক্তিনির্ভর বক্তব্য রেখেছেন। বইখানি পূর্ণ সত্য নয়, অর্ধসত্য। ইতিহাস নয়, ইতিহাস নিয়ে নির্জলা মিথ্যাচারের দলিল। আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব ও ইতিহাসকে কেমন করে খাটো করা যায় তা তো বটেই, রীতিমতো ধর্ষণ করা যায় তার চেষ্টা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ থেকে ২৫ মার্চ রাতের ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়ে বইটির পরতে পরতে লেখকের রেখে যাওয়া মন্তব্য ও মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে। রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার প্রাণান্তকর চেষ্টা হয়েছে। বইটি পড়ে কখনো কখনো মনে হয়েছে লেখক নিজেই বিভ্রান্ত, অথবা বয়সের ভারে ইতিহাসবিস্মৃত কিংবা সেই অগ্নিঝরা রক্তাত স্বাধিকার-স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলো না দেখা এক আত্মস্বীকৃত মানুষের কোনো এক অদৃশ্য শক্তির ইন্ধনে সৃষ্ট মুক্তিযুদ্ধের গৌরবকে ধুলোয় মিশিয়ে দেওয়ার প্রয়াস। মুক্তিযুদ্ধের একজন উপ-প্রধান যিনি আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং শেখ হাসিনা সরকারের সদ্যবিদায়ী মন্ত্রী তাকে দিয়ে ইতিহাসের বুকে ছুরি চালালে যতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে অন্য কাউকে দিয়ে চালালে পাওয়া যাবে না সেই মতলব থেকে এটি লেখানো হয়েছে।
২. এ কে খন্দকার বইটির ভূমিকায় লিখেছেন- ‘আমি রাজনীতিবিদ ছিলাম না, বরং কুড়ি বছর পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে নিষ্ঠার সঙ্গে চাকরি করেছি। তার পরও দেশ ও জাতির ক্রান্তিলগ্নে আমি সিদ্ধান্ত নিতে একটুও ভুল করিনি। যথাসময়ে আমি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিই এবং যুদ্ধ শেষে বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরে আসি।’ তিনি রাজনীতিবিদ ছিলেন না, এ দেশের রাজনৈতিক সংগ্রামের ভিতর দিয়ে একটি জাতি কীভাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এক মোহনায় মিলিত হয়েছে তা তিনি দেখেননি। রণাঙ্গনে যুদ্ধ পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বিমানবাহিনীর অফিসার হিসেবে দাবি করতে পারেন না তিনি একজন ইতিহাসবিদ। কিন্তু তিনি মুক্তিযুদ্ধের, স্বাধীনতা সংগ্রামের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আমাদের রাজনৈতিক নেতৃত্বের বীরত্ব ও স্বাধীনতা সংগ্রামকে এতটাই খাটো করেছেন যে, তা পাঠ করলে একাত্তরের পরাজিত পাকিস্তানি শাসক ইয়াহিয়া খান কবরে শুয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়বেন। বাঙালি জাতি, মাটি এবং স্বাধীনতার প্রতি আনুগত্যের প্রশ্নে অবিচল থাকায় আমাদের মহান নেতা শেখ মুজিবকে জল্লাদ ইয়াহিয়া খান ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মারতে চেয়েছিলেন কিন্তু নিজের জন্য খোদাই করা কবরের পাশে দাঁড়িয়েও যে বঙ্গবন্ধু একজন দুনিয়া কাঁপানো জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতা হিসেবেই নয়, বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে বীরত্ব দেখিয়েছেন, যাকে পাকিস্তানি শাসকরা এবং তাদের বিশ্বমোড়লরা নত করতে পারেনি সেই মহান নেতাটিকে কী অনায়াসেই না এ কে খন্দকার মাটিতে শুইয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন! পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী, শাসকগোষ্ঠী এমনকি তাদের সমর্থনকারী সেদিনের মার্কিন প্রশাসনের নথিপত্রে যা নেই তাই আছে এ কে খন্দকারের ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ গ্রন্থখানিতে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর জামায়াতের নেতারাও দাবি করেন তারা অখণ্ড পাকিস্তান চেয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মুকুটহীন সম্রাট ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি! যুদ্ধাপরাধের অপরাধে অভিযুক্ত কারাবন্দী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীও বিএনপির রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে বারবার বলেছেন, ‘শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের ইমাম’। আর এ কে খন্দকার তার ভূমিকায় লিখেছেন- ‘বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেই যে মুক্তিযুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল তা আমি মনে করি না।’ তিনি লিখেছেন- “৭ মার্চের ভাষণটি আমি শুনেছি। এর মধ্যে যে কথাগুলো আমার ভালো লেগেছিল তা হলো ‘দুর্গ গড়ে তোলো’, ‘তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকো’, ‘শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে’, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এ সময় সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ তার কাছ থেকে এ ধরনের কথা আশা করছিল। ওই কথাগুলো শক্তিশালী ছিল বটে, তবে তা বাস্তবে রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা আওয়ামী লীগের নেতাদের ছিল না।... ভাষণে চূড়ান্ত কোনো দিকনির্দেশনা পাওয়া গেল না। ভাষণটির পর মানুষজন ভাবতে শুরু করল এরপর কী হবে? আওয়ামী লীগের পূর্বপ্রস্তুতি না থাকায় যুদ্ধ শুরু করার কথা বলাও একেবারে বোকামি হতো। সম্ভবত এ কারণেই বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা করা থেকে বিরত থাকেন। তা ছাড়া ইয়াহিয়া খান নিজেও ওই ধরনের ঘোষণা না দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে অনুরোধ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু হয়তো ঢাকায় ইয়াহিয়ার উপস্থিতিতে একটি রাজনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছিলেন...। যদি আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো যুদ্ধ পরিকল্পনা থাকত... তাহলে আমার মনে হয় যুদ্ধটি হয়তো অল্প সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যেত এবং আমাদের বিজয় নিশ্চিত হতো। কিন্তু পরিতাপের বিষয় সেটা করা হয়নি।”
৩. এ কে খন্দকারের এ বক্তব্য গভীরভাবে পাঠ করলে দেখা যায় তিনি ৭ মার্চের ভাষণ শুনলেও শোনেননি বঙ্গবন্ধুর সেই কথাটি ‘আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করো, ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল...। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পাড়া-মহল্লায় সংগ্রাম কমিটি গঠন করো।’ বঙ্গবন্ধুর এই নির্দেশনার মধ্যেই কি প্রস্তুতি ছিল না? বঙ্গবন্ধু একদিকে যেমন ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে তার আলোচনা অব্যাহত রেখেছিলেন তেমনি তিনি তার নেতৃবৃন্দ মরহুম তাজউদ্দীন আহমদসহ জাতীয় নেতাদের অবহিত রেখেছেন। মুজিববাহিনীর চার প্রধান- শেখ ফজলুল হক মণি, সিরাজুল আলম খান, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদকে প্রতিনিয়ত জানিয়েছেন, আলোচনার নামে ওরা কালক্ষেপণ করছে, তোমরা তোমাদের প্রস্তুতি রাখো। জনগণকে যদি স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সত্তরের গণরায় নিয়ে একাত্তরের ৭ মার্চ এক মোহনায় মিলিত করে অভূতপূর্ব, বিস্ময়কর অসহযোগ আন্দোলনের সাফল্যের মধ্য দিয়ে নিজের শাসন প্রতিষ্ঠা না করতেন তাহলে এ কে খন্দকার মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন খুঁজে পেতেন না। ২৫ মার্চের রাতে পাকিস্তানি বাহিনীর গণহত্যা ও আক্রমণের পর জনগণ যদি প্রতিরোধযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে না পড়ত তাহলে তারা কোথায় গিয়ে দাঁড়াতেন। ভারতের গণতন্ত্রের মহান নেত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে পূর্ব বাংলার অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবের যদি পূর্ব সমঝোতা না-ই থাকত তাহলে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ ও পাকিস্তান বাহিনী ত্যাগ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া সামরিক বাহিনীসহ বিভিন্ন সিভিল প্রশাসনের লোকজন কীভাবে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন?
৭ মার্চ বেলা দেড়টায় বাঙালি জাতির ঐক্যের স্মারক ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িটিতে সিরাজুল আলম খান ও তোফায়েল আহমেদ যখন বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে গিয়েছিলেন তখন তিনি তাদের কাঁধে হাত রেখে কথা বলছিলেন। সিরাজুল আলম খান বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, আজ আপনি পূর্ণ স্বাধীনতা ঘোষণা না করলে মানুষ মেনে নেবে না। বঙ্গবন্ধু জবাবে বলেছিলেন, আমার জনগণের নির্বাচিত নেতা হিসেবে কী মেসেজ দিতে হবে তা আমি জানি। সেইদিন জাতির নেতৃত্বের আসনে ছিলেন শেখ মুজিব। পাকিস্তান সৃষ্টির পর পরই যিনি তার অভীষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে হাঁটি হাঁটি পা পা করে জাতিকে ও নিজেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত করেছিলেন। তার দূরদর্শিতার কারণে জনগণের মনোভাব বুঝতে পেরে অনেকের আপত্তির মুখেও তিনি সত্তরের নির্বাচনে অংশ নেন এবং বিজয় অর্জন করেন। ১ মার্চ যখন হোটেল পূর্বাণীতে তিনি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন তখন ইয়াহিয়া খান ৩ মার্চের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণা করেন। সঙ্গে সঙ্গে মানুষ বারুদের মতো জ্বলে উঠেছিল। পাকিস্তানের পতাকা দিকে দিকে পুড়ছিল। পল্টনে তিনি তোফায়েলকে পাঠিয়েছিলেন, তোফায়েল কী বলেছিলেন সেখানে তা এ কে খন্দকার জানেন না। কারণ তিনি স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের কোনো পর্বেরই সাক্ষী ছিলেন না। তিনি ছিলেন পাকিস্তান বিমানবাহিনীর কর্মরত একজন অফিসার। সেদিন ছাত্রলীগ ও ডাকসুর সমন্বয়ে স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়েছিল। সেই স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের মানুষ চার খলিফা বলে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় অভিষিক্ত করেছিল। চার নেতা ছিলেন নূরে আলম সিদ্দিকী, আ স ম আবদুর রব, শাজাহান সিরাজ ও আবদুল কুদ্দুস মাখন। ২ মার্চ পতাকা উত্তোলিত হয়েছিল। ৩ মার্চ পল্টনে স্বাধীনতার ইশতেহার পাঠ হয়েছিল। সেই দিন বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের স্থপতি বা জাতির জনক ও স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা ঘোষণা করা হয়েছিল। এ কে খন্দকার কীভাবে একজন শেখ মুজিব আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জড়ালেন, কীভাবে কারাগার থেকে মুক্ত হলেন, কীভাবে জাতির জীবনে আসাদের রক্তভেজা শার্ট, মতিউরের গুলিবিদ্ধ নিথর দেহ নিয়ে ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এলো তার কিছুই জানেন না। জানবেন কী করে?
৪. তিনি তার বইয়ের ভূমিকায় নিজেই বলেছেন, ‘বাহান্ন সালের সেপ্টেম্বর মাসে কমিশনপ্রাপ্ত হই। এর পর থেকেই ঊনসত্তর সাল পর্যন্ত আমি পশ্চিম পাকিস্তানে ছিলাম। একান্ন থেকে ঊনসত্তর সাল পর্যন্ত ১৮ বছর পাকিস্তানে অবস্থানকালে পাকিস্তানি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ভালো ব্যবহার পেয়েছি। পশ্চিম পাকিস্তানে আমার অনেক ভালো বন্ধুও ছিলেন। তারা সব সময় আমার ও আমার পরিবারের প্রতি খুব যত্নবান ছিলেন। যেমন রাতে বাসায় বিশ্রাম নিচ্ছি, হঠাৎ খবর এলো ফ্লাইংয়ে যেতে হবে। ব্যস, অফিসের কাজে বের হয়ে যেতাম। এ সময় আমার স্ত্রী একদম একা থাকতো। কিন্তু আশপাশের পরিবারগুলো ছিল অত্যন্ত বন্ধুসুলভ। তারা আমার স্ত্রীর দেখাশোনা করত, সবসময় খেয়াল রাখতো, যেন আমার অনুপস্থিতিতে ওর কোনো অসুবিধা না হয়, যেন ভয় না পায়। ঊনসত্তর সালের ৪ মার্চ আমি পাকিস্তান বিমানবাহিনীর ঢাকা ঘাঁটিতে উইং কমান্ডার হিসেবে বদলি হয়ে আসি। পঁয়ষট্টি থেকে ঊনসত্তর সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানে যেসব ঘটনা ঘটেছিল, বিশেষত ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, পশ্চিম পাকিস্তানে থাকার ফলে আমি তা জানতে পারিনি।’ ঊনসত্তর যিনি জানেননি তিনি ছয় দফার সংগ্রাম ও তা ঘিরে শেখ মুজিব ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের কপালে কী ঘটেছে তা জানবেন কী করে? আর বঙ্গবন্ধুসহ স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যেখানে বৈরী স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে বলতেন পূর্ব বাংলা সেখানে নিজের কমিটি থেকে বীরউত্তম খেতাব নেওয়া এ কে খন্দকার এখনো বলছেন পূর্ব পাকিস্তান। এখনো যেখানে প্রজন্ম শাহবাগে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানের পণ্য বর্জনের ডাক দেয়, একাত্তরের নৃশংসতা স্মরণ করে সেখানে তিনি বলছেন, তিনি ও তার স্ত্রী যৌবনে পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছে কতই না আরাম আর শান্তিতে ছিলেন! এ কে খন্দকার ইস্কান্দার মির্জা, আইয়ুব খান, ইয়াহিয়া খান সব আমলেই নিশ্চিন্তে নিরাপদে চাকরি করেছেন। তার জবানিতেই সেটি ফুটে উঠেছে। সশস্ত্র বাহিনীতে বাঙালি অফিসারদের পশ্চিমারা কী নজরে দেখত তা সবাই মোটামুটি জাতির সামনে উন্মোচন করেছেন। সেখানে তিনি এক ধরনের তৃপ্তি ও কৃতজ্ঞতার ঢেঁকুর তুলছেন। মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েও ডেপুটি চিফের পদবি পেয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধের পর বিমানবাহিনীর প্রধান হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর রক্ত মাড়িয়ে খুনি মোশতাকের প্রতি আনুগত্য দেখিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদে তিনি বিমানবাহিনীর প্রধান থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে যে দাবি করেছেন তা তার মিথ্যাচারের প্রথম দফা। তাকে বিমানবাহিনীর প্রধান থেকে সরে যেতে বাধ্য করা হয়েছিল। যেমন করা হয়েছিল সেনাবাহিনী থেকে জেনারেল সফিউল্লাহকে। তিনি সেনাশাসক জিয়াউর রহমানের আমলে ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া এবং সেনাশাসক এরশাদের জমানায় ১৯৮২ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত ভারতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। এরশাদের পরিকল্পনামন্ত্রীও ছিলেন। এমন কোনো আমল নেই তিনি রাষ্ট্রীয় পদ-পদবির বাইরে ছিলেন। আসলে তিনি সব শাসকের সঙ্গেই ছিলেন। সামরিক, বেসামরিক, গণতান্ত্রিক- সব সরকারের অনুকম্পা ও অনুগ্রহ লাভে তার পাশে কেউ দাঁড়াতে পারেননি। ১৯৯৮ ও ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ থেকে সংসদে নির্বাচিত হয়ে আসেন। শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠন করলে দলে অনেক পরীক্ষিত ত্যাগী নেতাদের বাদ দিলেও মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের দিকে তাকিয়ে পাকিস্তানি ও বাংলাদেশের সেনাশাসকদের আজ্ঞাবহ এ কে খন্দকারকে পরিকল্পনামন্ত্রী করেছিলেন। সংবিধানে বিসমিল্লাহ ও রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রাখায় তিনি মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রশ্ন তুলেছিলেন। জবাবে শেখ হাসিনা জানতে চেয়েছিলেন রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম তো এরশাদ করেছিলেন, সেদিন তো আপনি তার মন্ত্রী ছিলেন। ঠেকালেন না কেন? নীতির প্রশ্নে যদি অবিচল থাকতেন এ কে খন্দকার সেদিন পদত্যাগ করতেন। আত্মসম্মানহীন মানুষেরা বীরদের অনুসরণ করে না, মীরজাফর, মোশতাকদের অনুসরণ করে। মন্ত্রিত্বের লোভে, মোহে তিনি মন্ত্রিসভায় রয়ে যান। এবার তিনি সংসদ ও সরকারে ঠাঁই না পেয়ে অন্তর্জ্বালা থেকে একজন হতাশ, ক্ষুব্ধ মানুষের প্রতিহিংসাসুলভ চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন মিথ্যাচারের খোয়াবনামা ‘ভেতরে বাইরে’ লিখে। এ বইয়ের পরতে পরতে সাজানো কল্পকাহিনী দিয়ে তিনি কী মন্ত্রিত্ব হারানোর দুঃখ ঘুচিয়েছেন। তা না হলে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণে ইয়াহিয়া খান ‘জয় পাকিস্তান’ শুনলেন না, তিনি শুনেছেন। এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের সঙ্গে এমন বিশ্বাসঘাতকতা নজিরবিহীন।
তিনি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে গিয়ে একটি জাতির বীরত্বের সংগ্রামকে অবমাননা করেছেন। স্রোতস্বিনী নদীর মতো কলকল করে ছুটে চলা ইতিহাসের পথ আগলে দাঁড়িয়েছেন। লন্ডনে বসে বিএনপির হতাশাক্ষুব্ধ সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান যে আর্তনাদ করছেন, যেভাবে ইতিহাস বিকৃতির পথ নিয়েছেন, এ কে খন্দকার বিবেক, বিচারবোধ পদদলিত করে সেই পথ অনুসরণ করেছেন মাত্র। তার স্ববিরোধী বইয়ের ৩২ পৃষ্ঠায় লিখেছেন- ‘মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই সামরিক বাহিনীতে পাকিস্তানিরা কৌশলে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ডে বাঙালিদের এড়িয়ে যেতে শুরু করে। ফলে বাঙালি ও পশ্চিম পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস ক্রমেই বাড়তে থাকে। সরকারি এবং বেসরকারি অফিসেও বাঙালি ও পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের মধ্যে পারস্পরিক আস্থার অভাব দেখা দেয়। এ সময় বাঙালি সৈনিকদের রাইফেল নিয়ে কুচকাওয়াজ থেকে বিরত রাখা হয়।’ এখানেই বোঝা যায় পাকিস্তানি শাসকরাও বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রস্তুতি জেনে গিয়েছিল। বঙ্গবন্ধু বরাবরই চেয়েছিলেন আঘাত প্রতিপক্ষের কাছ থেকে আসুক। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী হতে চাননি। তিনি যেমন করে ২৪ বছরের সংগ্রামে তার জাতিকে তৈরি করেছেন তেমনিভাবে স্বাধীনতাযুদ্ধের দিকে অগ্রসর করেছেন। এ কে খন্দকারের সেই ইতিহাস জানার কথা নয়। জেনারেল ওসমানীর সঙ্গে ইন্দিরা রোডের সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর বাসভবনে প্রথম বঙ্গবন্ধুর দেখা হয়। সেভাবেই তিনি সেনাবাহিনীতে কর্মরত বাঙালি অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করেছিলেন। জেনারেল ওসমানী আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সত্তরের নির্বাচনে এমএনএ নির্বাচিত হন। মুক্তিযুদ্ধে তাকে প্রধান সেনাপতি আকস্মিক করা হয়নি। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও গতিপথ রাজনীতির পথেই সেদিন অগ্রসর হয়েছে এবং তার চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করেছে। সেই দীর্ঘ পথপরিক্রমায় একটি চূড়ান্ত অধ্যায় মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে এ কে খন্দকার ভূমিকা রেখেছেন মাত্র। তিনি রণাঙ্গনের যুদ্ধ নিয়ে লিখলে বা কথা বললে কোনো প্রশ্ন ছিল না। যুদ্ধের কাহিনী লিখতে গিয়ে তিনিও ইতিহাসের কলিজার ভিতর হাত দিয়ে বসেছেন। তিনি যে ভাষায় লিখছেন সেই ভাষায় তারেক রহমানও কথা বলেননি। তিনি হয়তো চাচ্ছেন মুক্তিযোদ্ধা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম তো রয়েছেই, আওয়ামী লীগবিরোধী বা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির কাছে জীবনের পড়ন্তবেলায় নিজের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করে আগামী দিনে কোনো অসাংবিধানিক পরিবর্তন ঘটলে নিজেকে রাষ্ট্রের উচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত করতে। আর না হয় বয়সের ভারে এতটাই বিস্মৃত যে, কী লিখতে গিয়ে কী লিখেছেন তা তিনি নিজেই জানেন না। আর না হয় অনেকের মতোই জীবনের পড়ন্তবেলায় ফরমায়েশি লেখা লিখেছেন। বিনিময়ে কী পেয়েছেন বা পাবেন তা তিনি নিজেই জানেন। সেটি অনুসন্ধানের বিষয়।
৫. চট্টগ্রাম বেতার থেকে আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নানের ২৬ মার্চের বঙ্গবন্ধুর হয়ে স্বাধীনতা ঘোষণার কথাটি উল্লেখ করেছেন। বঙ্গবন্ধু যদি নির্দেশনা না-ই দিতেন এম এ হান্নান কীসের ওপর ভিত্তি করে সেই ঘোষণা দিয়েছিলেন? ২৭ মার্চ কোন প্রেক্ষাপটে সেদিনের মেজর জিয়াউর রহমানই বা বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন? ১৯৭১ সালের ১৮ মার্চ বঙ্গবন্ধু তাজউদ্দীনের সামনে মুজিববাহিনীর চার প্রধানকে একখানি ঠিকানা মুখস্ত করিয়েছিলেন। সেটি হচ্ছে- চন্দ্রশীল ২১, রাজেন্দ্র রোড, নর্দান পার্ক, ভবানীপুর। বরিশাল অঞ্চল থেকে নৌকা নিয়ে নির্বাচিত ষাটের জেলখাটা চিত্তরঞ্জন সুতার আগেই সেখানে চলে গিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তরুণ নেতাদের বলেছিলেন, তোমরা সেখানে গেলেই সব পেয়ে যাবে। এমনকি আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দসহ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এবং সেক্টর কমান্ডাররা ভারতে গিয়ে যে আশ্রয়, ট্রেনিং, সাহায্য পেয়েছিলেন সেটিও আকস্মিক ঘটনা ছিল না। বঙ্গবন্ধুর পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সব ছিল। এমনকি তাজউদ্দীন আহমদের ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং ভারত সরকারের ভূমিকাও। ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা নিয়ে এ কে খন্দকার মিথ্যাচার নয়, রীতিমতো পাগলের প্রলাপ বকেছেন। বঙ্গবন্ধু জানতেন তিনি আত্মগোপনে যাওয়ার মতো নেতা ছিলেন না। তিনি ৩২ নম্বর থেকে বেরোলে পাকিস্তানি ঘাতকেরা হত্যা করে দুষ্কৃতকারীদের ওপর দোষ চাপিয়ে দিত। তাকে খুঁজতে গিয়ে আরও বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞে লিপ্ত হতো। এমনকি ৭ মার্চের ভাষণ ৪৩ বছর পরও বিশ্ব ইতিহাসে হাতে গোনা ভাষণগুলোর শীর্ষে স্থান পেয়েছে। সেই ভাষণকে সব গবেষকই দিকনির্দেশনামূলক বলে চিহ্নিত করেছেন। ৭ মার্চের সেই মহাকাব্যকে মেজর জিয়াউর রহমান (পরবর্তীতে সেনাপ্রধান ও রাষ্ট্রপতি) গ্রিন সিগন্যাল বলে মূল্যায়ন করেছেন।
৬. ১৯৭৪ সালের ২৬ মার্চ সংখ্যা সাপ্তাহিক বিচিত্রায় ‘একটি জাতির জন্ম’ শিরোনামে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের যে নিবন্ধ ছাপা হয়েছে সেখানে তিনি পরিষ্কার লিখেছেন- ‘তারপর এলো ১ মার্চ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সারা দেশে শুরু হলো ব্যাপক অসহযোগ আন্দোলন।... ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ঘোষণা আমাদের কাছে এক গ্রিন সিগন্যাল বলে মনে হলো। আমরা আমাদের পরিকল্পনাকে চূড়ান্ত রূপ দিলাম। কিন্তু তৃতীয় কোনো ব্যক্তিকে তা জানালাম না।’ সবাই দিকনির্দেশনা দেখে প্রতিরোধযুদ্ধে নামলেও একজন শুধু ৪৩ বছর পর এসে দেখেন না, তিনি শেখ হাসিনার আগের মন্ত্রিসভার পাঁচ বছর আরাম আয়েশে খেয়ে পরা সদস্য এ কে খন্দকার। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু সরাসরি স্বাধীনতা ঘোষণা করলে সেদিনের রেসকোর্স ময়দানই নয়, গোটা বাংলাদেশ রক্তাক্ত হয়ে যেত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণে। শেখ হাসিনা সরকারের পাঁচ বছর ক্ষমতার স্বাদ নিয়ে খেয়ে দেয়ে মুখ মুছে থালাখানি কীভাবে ফুটো করে দিতে হয় এ কে খন্দকারের চেয়ে আর কেউ দেখাতে পারেননি। তবে তিনি ভুল করেছেন যে, ইতিহাসের হৃৎপিণ্ডে বিষাক্ত ছুরি চালিয়ে বসেছেন। এখন কোথায় সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম? কোথায় শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ? কোথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সেইসব অধ্যাপক যারা ছুটে এসেছিলেন শাহবাগের মঞ্চে? আজ তারা কী করবেন? ইতিহাসের মীমাংসিত সত্যকে বিতর্কিত করার অপরাধে একজন এ কে খন্দকারের কি আজ বিচার চাইবেন? নাকি বোবা দর্শক হয়ে এড়িয়ে যাবেন? ভলতেয়ারের সেই উক্তিকে চিন্তা ও মননে লালন করি ‘আমি তোমার মতের সঙ্গে একমত না-ও হতে পারি, কিন্তু তোমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিতে পারি’। কিন্তু এখানে মতপ্রকাশের নামে ইতিহাসের মীমাংসিত সত্যকে অস্বীকার করা হয়েছে। ইতিহাসকে নির্জলা মিথ্যাচারে বিকৃত করা হয়েছে। একজন নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন তার আত্মজীবনীতে সাহসিকতার সঙ্গে অনেক সত্য তুলে ধরেছিলেন। সেটি ইতিহাসের সঙ্গে, একটি রাষ্ট্রের জন্ম ও সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কিছু ছিল না। তার জীবনের সঙ্গে জড়ানো কিছু চরিত্র উন্মোচন করেছিলেন। পাঠক যা বোঝার সব ঠিকঠাকমতো বুঝলেও অনেকে মানহানির মামলা নিয়ে আদালতে ছুটেছিলেন। তসলিমার সেই ‘ক’-তে ঠাঁই পাওয়া চরিত্রগুলো বড়র মতো দেখালেও বড় যে হতে পারেননি সেটি যেমন পাঠক বুঝতে ভুল করেনি, তেমনি আজ ভুল করবে না মুক্তিযুদ্ধের আমাদের বাহিনীর উপ-প্রধান হলেও এমনকি পাকিস্তানের পরাজিত বাহিনীর আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও সব সরকারের খেয়ে পরা এ কে খন্দকার স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে একাত্মা হতে পারেননি। তাকে বড়র মতো দেখালেও শেখ হাসিনার এবারের সরকারে ঠাঁই না পাওয়ার অন্তর্জ্বালায় দগ্ধ হয়ে বামন হয়ে বসে আছেন। তসলিমার আত্মজীবনীমূলক ‘ক’ যদি নিষিদ্ধ হতে পারে ইতিহাস বিকৃতির দায়ে, সংবিধান লঙ্ঘনের অপরাধে কেন এ কে খন্দকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না? কেনই বা মিথ্যাচারের দলিল ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ বাজেয়াপ্ত করা হবে না। লেখক রবার্ট পেইন লিখেছিলেন- ২৫ মার্চ রাতে বঙ্গবন্ধু সবাইকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে বলেছিলেন, ‘আজ আমি সুখী। বাংলাদেশ স্বাধীন হতে চলেছে। আমাকে হত্যা করলেও লাভ হবে না। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে যাবে।’
শিরোনাম
- শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠাই হবে মে দিবসের অঙ্গীকার : শিমুল বিশ্বাস
- লিবিয়া থেকে কাল দেশে ফিরছেন ১৭৭ বাংলাদেশি
- চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
- প্রাক-প্রাথমিকে ১৫০০ বিদ্যালয়ে স্মার্ট টিভি-ল্যাপটপ দেবে সরকার
- জ্বালানি তেলের নতুন দাম নির্ধারণ
- দাবানলে জ্বলছে ইসরায়েল, হন্য হয়ে পালাচ্ছেন বাসিন্দারা
- দেশব্যাপী শব্দদূষণবিরোধী অভিযানে ২৬৫ হাইড্রোলিক হর্ন জব্দ
- তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
- পুঁজিবাজারে সূচক কমলেও লেনদেন বেড়েছে
- গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মৃত্যু নেই, হাসপাতালে ভর্তি ২৯
- দেশের রিজার্ভ বেড়ে ২৭ বিলিয়ন ডলার
- মুহুর্মুহু রকেট হামলায় বিপর্যস্ত মার্কিন রণতরী, বাধ্য হলো পিছু হটতে
- ছাত্রলীগের নির্যাতনের সহযোগী শিক্ষক-কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে ঢাবি ছাত্রদলের বিক্ষোভ
- মিরাজের ঘূর্ণিতে তিনদিনেই জিতল বাংলাদেশ
- প্রিপেইড গ্যাস মিটার নিয়ে প্রতারণা এড়াতে তিতাসের সতর্কবার্তা
- শিল্পীদের মেধাসম্পদ সংরক্ষণে কাজ করছে সরকার : শিল্প উপদেষ্টা
- সাবেক প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
- ১১৯তম প্রাইজ বন্ডের ড্র, প্রথম বিজয়ী নম্বর ০২৬৪২৫৫
- রাজধানীর উত্তরায় ঢাবির বাসে হামলা, গ্রেফতার ৫
- প্রথম আলোর বিরুদ্ধে মামলার আবেদনকারীকে হুমকির অভিযোগ
মিথ্যাচারের দলিল ভেতরে বাইরে, বাজেয়াপ্ত নয় কেন
জিয়া এরশাদসহ সব সরকারের সুবিধাভোগী এ কে খন্দকার
পীর হাবিবুর রহমান
অনলাইন ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর

চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ ত্বরান্বিত করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ
১৭ মিনিট আগে | জাতীয়

সাবেক সংসদ সদস্য শাহরিন ইসলাম তুহিনের মুক্তির দাবিতে নীলফামারীতে আইনজীবীদের বিক্ষোভ
৩৬ মিনিট আগে | দেশগ্রাম