১০ জুন, ২০১৯ ১৭:৪৭

তাহলে কি বিএনপি ভুল পথে হাঁটছে?

বিদিশা

তাহলে কি বিএনপি ভুল পথে হাঁটছে?

বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার শপথের মধ্য দিয়ে বিএনপি আরও একটি নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিল। বিএনপি কেন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিলো? কেনই বা উপজেলা নির্বাচন বর্জন করলো? কেনই বা শপথ নিয়ে নাটক করলো? তা এখন বিএনপির তৃণমূলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ বিষয়। বিএনপির নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা যদি সময়মতো শপথ নিতেন, সংসদকে কার্যকর করে বর্তমান সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা করতেন তাহলে তৃণমূল আরো শক্তিশালী হতো। এর ফলে দলে একটি আস্থার জায়গা তৈরি হতো এবং একটা সময় আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে হয়তোবা নেত্রীকে মুক্ত করার পথ সুগম হতো। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কৌশলের কাছে পরাস্ত হলো বিএনপি। কেননা তারা নির্বাচনে আসবে না আসবে না বলে কালক্ষেপণ করলেও শেষ পর্যন্ত তাদেরকে নির্বাচনে নিয়ে আসতে বাধ্য করেছে আওয়ামী লীগ।

আরেকটি বিষয় হচ্ছে মির্জা ফখরুল যদি শপথই না নেবেন তাহলে কেন তিনি নির্বাচন করলেন। আর নির্বাচন যেহেতু করলেন তাহলে কেন উনি শপথ নিলেন না। তাহলে কি একই দলের দ্বৈত নীতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না? শপথ না নিয়ে তারা যে আসনকে শূন্য ঘোষণা করলেন সেখানে আবার বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশিতদের ভিড়। তারপর সেখানে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে দলের হাই কমান্ড নতুন প্রার্থী দিলেন, এখন কি বোঝা যাচ্ছে? আসলে বিএনপি কার নেতৃত্বে চলছে, কে চালাচ্ছে, কিভাবে চলছে, কার নির্দেশে সমস্ত কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে? তৃণমূল আজকে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে ফিরছে। যদি বিএনপির হাই কমান্ডরা এই প্রশ্নের উত্তরগুলি স্বচ্ছভাবে উপস্থাপন করতে না পারে দলীয় কর্মীদের কাছে তাহলে হয়তোবা কোন একটা সময় বিভ্রান্তকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি সৃষ্টির মাধ্যমে শীর্ষ নেতাদের নিজেদের মধ্যে এবং তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়বে। পাশাপাশি দল ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। আসলে বিএনপির এই সিদ্ধান্তের কারণে ভবিষ্যতে তাদেরকে চরম মূল্য দিতে হতে পারে। পাশাপাশি বর্তমান সরকার যদি একটি শক্তিশালী বিরোধী দল তৈরি করতে না পারে তাহলে হয়তোবা ভবিষ্যতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি বিরাট শূন্যতা তৈরি হয়ে যাবে। যারা আমরা রাজনীতি করি দেশকে ভালোবাসি, দলকে ভালোবাসি, এই ধরনের অসহনীয় পরিবেশ আমাদের কারো কাম্য নয়। প্রত্যেককে বাক স্বাধীনতা দিতে হবে। প্রত্যেককে রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকার সহায়ক পরিবেশ তৈরি করে দিতে হবে। তা না হলে আজকে আমি যে অবস্থানে আছি কালকে আমি সেই অবস্থানে নাও থাকতে পারি। যখন আমি এই অবস্থানে থাকবো না তখন হয়তোবা আমার করা কর্মকাণ্ডগুলোই বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে আমাদের কাছে।

লেখক: চেয়ারম্যান, বিদিশা ফাউন্ডেশন।

বিডি-প্রতিদিন/১০ জুন, ২০১৯/মাহবুব

সর্বশেষ খবর