‘কংগ্রেসম্যানদের স্বাক্ষর জাল করে বিবৃতি প্রদানকারীদের বিএনপি থেকে অব্যাহতি প্রদানের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো যে, ক্রিমিনালদের ঠাঁই নেই বিএনপিতে। বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ ফের এমন অপকর্মে লিপ্ত হয় তাহলে তাদের পরিণতি আরও ভয়াবহ হবে।’ এসব মন্তব্য করা হয় শুক্রবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে গরমেট রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কমিটির যৌথ এক সংবাদ সম্মেলন থেকে।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি নেতা এবং তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কমিটির চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বাদল স্বীকার করেন যে, ‘৬ কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জালিয়াতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিএনপির ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তিলে তিলে গড়া যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় প্রবাসীদের অবস্থানকেও নড়বড়ে করা হয়েছে। এহেন অবস্থার অবসান ঘটাতে আমাদের অনেক কষ্ট করতে হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, ‘বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ ও পুলিশের আইজি শহীদুল হক এখন আর সরকারি কর্মচারি নন, তারা যেন আওয়ামী লীগের ক্যাডারে পরিণত হয়েছেন। সরকার তাদের সন্ত্রাসী হিসাবে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। জনগণের বুকে গুলি করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। এ অবস্থায় শেখ হাসিনা সরকার এবং তার এই তিন দলীয় কর্মকর্তা অবিলম্বে পদত্যাগ না করলে দেশে রেমিটেন্স না পাঠানোর হুমকি দেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি এবং তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করে রাখা এবং বিজিবি, র্যাব এবং পুলিশের আইজির প্রজাতন্ত্রের নিয়মনীতি ভেঙ্গে উসকানিমূলক বক্তব্যের প্রতিবাদে ও বর্তমান সরকার বিরোধী আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। তারেক পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মিজানুর রহমানের পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে অতিথি ছিলেন লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শওকত আলী এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা মোহাম্মদ বশির। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শহীদুলাহ পাটোয়ারি, মোহাম্মদ আলী, নিজামুল শাহীন, সাইফুল ইসলাম, মোহাম্মদ আহাদ প্রমুখ।
মোহাম্মদ বশির বলেন, এতদিন রাজনীতিবিদদের মুখে রাজনীতির কথা শুনেছি কিন্তু গত কয়েক দিন থেকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মুখে রাজনৈতিক বক্তব্য শুনছি। তারা মানুষকে গুলি করে মারার হুমকি দিচ্ছেন, বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসাবে আখ্যায়িত করছেন, আরেকজন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করছেন। মনে হচ্ছে এরা সরকারি কর্মচারী নয়, আওয়ামী লীগের মস্ত বড় নেতা। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যাদের অর্থে আপনাদের বেতন চলে, সংসার চলে, তাদের গুলি করার ঘোষণা দেন কোন সাহসে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আকতার হোসেন বাদল এবং মোহাম্মদ বশির আমেরিকার কংগ্রেসম্যানের স্বাক্ষর জালকারী বিএনপির সাবেক দুই কর্মকর্তা ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার এবং জাহিদ এফ সর্দার সাদীর সমালোচনা করে বলেন, তাদের কারণে দেশ এবং প্রবাসীদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। বাদল বলেন, এই ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। মোহাম্মদ বশির বলেন, বিএনপিতে কোন ক্রিমিনালের স্থান নেই। তাদের অব্যাহতি দেয়ার মাধ্যমেই তা প্রমাণ হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৮ জানুয়ারি, ২০১৫/ রশিদা