ডেগেনহ্যামের শেডওয়েল হীথে মেয়েকে হত্যার দায়ে মা ও মায়ের সমকামী বান্ধবীকে দায়ী করেছে আদালত। ২০১৩ সালের ১লা মার্চ থেকে ২৯ আগষ্টের ভেতরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিজ ঘরের বেডরুম থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল ৮ বছরের মেয়ে আয়েশা আলীর মৃতদেহ। আয়েশার শরীরে অন্তত ৫০টি গুরুতর জখমের চিহ্ন ছিল। ঘরের কার্পেট ছিল আগুনে পোড়া। রাতে পার্শ্ববর্তীরা একটি মেয়ের চিৎকার শুনেছে বলেও জানিয়েছেন।
এ হত্যাকাণ্ডের জন্য আয়েশা আলীর মা পলি চৌধুরী এবং মায়ের সমকামী বান্ধবী কিকি মুড্ডা দায়ী বলে রায় দিয়েছে ওল্ড বেইল আদালত। এ দু'জনের সম্পর্ক রীতিবিরুদ্ধ ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন মামলার প্রসিকিউটর রিচার্ড ডাব্লিউ কিউসি। যদিও তারা দু'জনেই হত্যাকাণ্ডের দায় অস্বীকার করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিসেস কিকি মুড্ডার ইলফোর্ডের গ্রিনলেইনের বাসিন্দা। তার বয়স ৪৩ বছর। অন্যদিকে শেওয়েলহীথের ব্রোমফিল্ড রোডের বাসিন্দা মিসেস পলি চৌধুরীর বয়স ৩৪। পলি চৌধুরী নিহত আয়েশার মা। এ দুই বান্ধবী এতটাই ঘনিষ্ট ছিলেন যে, এক পর্যায়ে বান্ধবী কিকি মুড্ডা পলি চৌধুরীর ঘরে বসবাস শুরু করেন। এ কারণে ২০১২ সালে আয়েশা আলীর বাবা আফসার আলীর সঙ্গে পলি চৌধুরীর বিয়েও ভেঙ্গে যায় বলে ওল্ড বেইলি আদালত জানিয়েছেন।
পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে শেডওয়েলহীথের এ ঘরে দুই বান্ধবী বসবাস শুরু করেন। ফেসবুকে জিমি চৌধুরী নামে এক কাল্পনিক পুরুষের সঙ্গে প্রেম করতে শুরু করেন পলি চৌধুরী। অপর দিকে স্কাইম্যান নামে আরেক চরিত্র আছে এখানে। বাস্তবে কিকি মুড্ডারই হলেন জিমি চৌধুরী ও স্কাইম্যান। ফেসবুকে ও মোবাইলে তাদের কয়েক হাজার টেক্সট মেসেজ আদান প্রদান হয়েছে বলে জানিয়েছেন আদালত।
জুরিরা বলেন, তাদের এ ফ্যান্টাসি প্রেমের মাঝে বাধা হয়ে দাঁড়াবার কারণেই আয়েশার প্রতি কিকির বিরক্তি বাড়তে থাকে। ঘটনার দিন থ্রিপল নাইনে কিকি কল করেছিলেন বলেও জানানো হয়েছে আদালতে। যে রুমে আয়েশা আলী নিহত হয়েছেন সে ঘরে পলি চৌধুরীর হাতে লেখা একটি চিঠিও উদ্ধার করা হয়েছে। চিঠিতে নিজের মেয়ে ও নিজের জীবন কেড়ে নিচ্ছেন বলে উল্লেখ করেছেন পলি চৌধুরী।
আদালত সূত্রে আরও জানা গেছে, রীতিবিরুদ্ধ এ প্রেমে পলি চৌধুরীর জীবনও বিষিয়ে উঠেছিল। তিনি নিজেও সেদিন আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। অন্যদিকে কিকি মুড্ডা পলি চৌধুরীকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতেন। এক্ষেত্রে মেয়ে আয়েশা আলী বাধা ছিল বলেই তাকে মর্মান্তিকভাবে সরিয়ে দেওয়া হয় বলে ধারণা করছে আদালত।
বিডি-প্রতিদিন/২২ জানুয়ারি ২০১৫/আহমেদ