যুক্তরাষ্ট্রের ছয় কংগ্রেস সদস্যের নামে ভুয়া বিবৃতি পাঠানোর পর বিএনপির বৈদেশিক দূতের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পরও দলের নামে এই ধরনের তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন জাহিদ এফ সর্দার সাদী। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাইয়ের সঙ্গে ২০ মে তার এক ‘জরুরি বৈঠক’ হয়েছে বলে জাহিদ এফ সর্দারের নামে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে, যার সঙ্গে দুজনের একটি ছবি সংযুক্ত করা হয়েছে।
‘ক্যাপ্টেন (অব.) মারুফ রাজু’ নামে এক ব্যক্তির পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “ওই বৈঠকে নিশা দেশাই বলেছেন, বাংলাদেশের ‘উদ্ভূত অচলাবস্থা’ নিরসনে তিনি এবং মার্কিন সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। অচিরেই বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার উত্তরণ ঘটবে।”
জরুরি বৈঠক নিয়ে এই বিজ্ঞপ্তিটি ঢাকার গণমাধ্যমে প্রকাশের পর খোঁজ নিয়ে জানা যায় এধরনের কোনো বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী বিএনপি নেতা ডা. মজিবর রহমান মজুমদারের সঙ্গে মিলে ছয় কংগ্রেস সদস্যের নামে ভুয়া বিবৃতি পাঠিয়েছিলেন তিনি, যাতে গত জানুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ করা এবং তার ছেলে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নিন্দা জানানোর কথা বলা হয়েছিল।
বাংলাদেশের কয়েকটি সংবাদ মাধ্যম এবং যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক দুটি অনলাইন সংবাদ পোর্টালে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের নামে ওই বিবৃতির খবর প্রকাশ হলে বিবৃতি পাঠিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই কংগ্রেস সদস্য।
এরপর জাহিদ এফ সর্দার সাদী ও মজিবর রহমান মজুমদারকে বিএনপির বৈদেশিক দূত ও বিশেষ উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা ১৩ জানুয়ারি নিউ ইয়র্কে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের দল থেকে বাদ দেওয়ার কথা জানান।
অব্যাহতির ওই ঘোষণাকে পাত্তা না দিয়ে নিজের ফেইসবুকসহ নানা মাধ্যমে জাহিদ এফ সর্দার সাদী দাবি করেছে, ‘লন্ডনে বসবাসরত তারেক রহমানের নির্দেশেই তিনি সবকিছু করেছেন এবং ভবিষ্যতেও করবেন।’
নিজেকে খ্রিস্টান দাবিদার বরিশালের সন্তান সাদী যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলেও আবেদন মঞ্জুর হয়নি। এর মধ্যে তিনি ফ্লোরিডার বিভিন্ন অপরাধে অন্তত ২৯ বার গ্রেফতার হয়েছেন। ব্যাংকের চেক নিয়ে প্রতারণা ও মানুষের কাছে অর্থ ধার করে আত্মসাতসহ বিভিন্ন মামলায় তাকে গ্রেফতারের মুচলেকা দিয়ে তিনি মুক্তি পান।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৪ মে, ২০১৫/ রশিদা