হোয়াইট হাউজে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার ইফতার পার্টিতে দেড় শতাধিক অতিথির মধ্যে দুই বাংলাদেশি ছিলেন। এর মধ্যে একজন হলেন ওয়াশিংটনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং অপরজন ১৬ বছর বয়সী তরুণ জিয়াদ আহমেদ।
মানুষে মানুষে হিংসা-বিদ্বেষ দূর করতে জিয়াদের একটি ওয়েবসাইটের প্রশংসা করেন ওবামা। নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যে বসবাসরত জিয়াদ আহমেদ অনুধাবনে সক্ষম হয়েছেন যে, মানুষের মধ্যে বোঝাপড়ার বিস্তর অভাব থাকায় হরহামেশা ঝগড়া-বিবাদ থেকে মারদাঙ্গা পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে। তাই পরস্পরের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক যত বৃদ্ধি পাবে, অন্যের ধর্মীয় অথবা সামাজিক মূল্যবোধের ব্যাপারে অজ্ঞতা যত দ্রুত কেটে যাবে ততই শান্তি ও স্বস্তির বিষয়টি ত্বরান্বিত হবে। এ ধরনের উদাত্ত আহ্বান সংবলিত একটি ওয়েবসাইট (রিডিফাই ডট অর্গ) চালু করেছেন জিয়াদ আহমেদ। জিয়াদের মতে সামাজিক তথা রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার মূল প্রেরণা হতে পারে যথার্থ জ্ঞান আহরণ এবং এভাবেই অন্যের ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পর্কে ‘অজ্ঞতা দূর হতে পারে শিক্ষার মধ্য দিয়ে’। ওবামা সে কথাই সকলকে স্মরণ করিয়ে বিদ্যমান অস্থিরতা, হানাহানির অবসান ঘটানোর উদাত্ত আহ্বান জানাতে জিয়াদের উদাহরণ টানেন।
সোমবার সন্ধ্যায় হোয়াইট হাউজের ইস্ট রুমে মনোরম পরিবেশের এ ইফতার মাহফিলে ওবামা বলেন, রমজান মাসে মুসলমানেরা তাদের ধর্মীয় চেতনার প্রতি আস্থাবোধকে উজ্জীবিত করেন। পবিত্র কোরআন আমাদের শিখিয়েছে যে, এ ধরায় সৃষ্টির সকল স্রষ্টাই ভদ্র ব্যবহার কামনা করেন। আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস যাই হউক না কেন, আমরা একই পরিবারের সদস্য এবং আমরা সকল মানুষ যে সমান সেই চেতনার প্রতি অবিচল আস্থার প্রকাশ ঘটাচ্ছি।
চার্লস্টনে কৃষ্ণাঙ্গদের গির্জায় শ্বেতাঙ্গ যুবক কর্তৃক ৯ জনকে গুলি করে হত্যা প্রসঙ্গে প্রেসিডেন্ট ওবামা বলেন, আমরা এখনও চার্লস্টনের নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং তাদের আত্মার শান্তি কামনা করছি। আমরা বলতে চাই যে, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগোষ্ঠীর কারণে কেউ যেন হত্যার শিকার না হয়।
ওবামা উল্লেখ করেন, রমজান হচ্ছে ত্যাগ, শৃঙ্খলাবোধ এবং সংযমের প্রতীক। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবেই উগ্রপন্থী এবং অন্যায়-অবিচারকে রোধ করতে পারবো।
প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আমল থেকেই হোয়াইট হাউজে প্রতি বছরই ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। মাহফিলে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে অত্যন্ত হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে কথা বলেন ওবামা। কুশল বিনিময়ের সাথে সাথে প্রত্যেকের দেশের কথাও জানতে চান।
মাহফিলে অংশ নেন ৩ কংগ্রেসম্যান আন্দ্রে কারসন ((Andre Carson, United States Representative, Indiana), রিচার্ড ডারবিন (Richard Durbin, United States Senator, Illinois) এবং কিথ এলিসন (Keith Ellison, United States Representative, Minnesota), ৪২ মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূত, ইসলামিক স্কলার, অধিকার আদায়ে নিবেদিত কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী।
বিডি-প্রতিদিন/ ২৩ জুন, ২০১৫/ রশিদা