২০১৫ সালের এপ্রিলে দুবাইয়ে পৌঁছায় বাংলাদেশের দুই কিশোরী। বিউটি স্যালনে কাজ দেয়ার হবে বলে তাদের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলেও তাদের পতিতাপল্লীতে বিক্রি করে দেয়া হয়। সম্প্রতি তাদের একজন পালিয়ে স্থানীয় পুলিশের কাছে অভিযোগ করায় বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই বাংলাদেশি পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যার মধ্যে একজনকে সম্প্রতি সাত বছরের জেল দিয়েছে দুবাইয়ের একটি আদালত। প্রমাণ না পাওয়ায় অন্যজনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম গাল্ফ নিউজ বৃহস্পতিবার এ খবর প্রকাশ করেছে।
এ ঘটনায় ৬২ বছর বয়সী এক চীনা নাগরিককেও বুধবার আদালতে বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি পতিতাবৃত্তি চালানোর জন্য ফ্ল্যাট ভাড়া দিতেন বলে অভিযোগ করেছে গ্রেফতার হওয়া বাংলাদেশিরা। যদিও ওই চীনা নাগরিক আদালতের বিচারক আহমাদ মোহাম্মদকে বলেছেন, 'আমি পতিতাপল্লী চালাই না।'
১৫ ও ১৬ বছরের ওই দুই কিশোরী আলাদা সময়ে দুবাই উপস্থিত হয়। পরে তাদের দু'জনকে একটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৬ বছরের ওই কিশোরী আইনজীবীকে বলেন, যখন আমি দুবাই পৌঁছাই, তারা আমার পাসপোর্ট নিয়ে যায় এবং ম্যাঙ্খলে (দুবাইয়ের পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা) একটি ফ্ল্যাটে পৌঁছে দেয়া হয়। সেখানে চীন ও এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলের নারীও (যুবতী ও মহিলা) ছিল। পরে অন্য নারীদের কাছে শুনেছি চীনের ওই নারী আমাদের নেত্রী এবং অন্যরা সবাই তার হুকুমমতো পতিতাবৃত্তি করে। আমি তা করতে অস্বীকৃতি জানালে বাংলাদেশি পাচারকারীরা আমাকে মারধর করা হয় এবং পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করা হয়। তারা আমাকে হুমকি দেয় কথামতো না চললে আমাকে ১০ বছর জেল খাটতে হবে... তাই ইচ্ছের বিরুদ্ধে আমাকে সেসব করতে হয়েছে। পরে তারা আমাকে আরেকটি ফ্ল্যাটে নিয়ে যায় সেটি পতিতাপল্লী হিসেবে ব্যবহৃত হয়...একদিন আমি পালিয়ে যাই। একটি ট্যাক্সি নিয়ে সোজা থানায় চলে যাই এবং যৌন নিপীড়ন নিয়ে অভিযোগ করি।
১৬ বছরের ওই কিশোরীর তথ্য অনুসারেই ১৫ বছর বয়সী অপর বাংলাদেশি কিশোরী ও পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য হওয়া অন্য নারীদের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় এখনও বিচারকার্য চলছে।
বিডি প্রতিদিন/৪ মে, ২০১৭/ফারজানা