গত দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন সিটিতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর কমপক্ষে ৮৫ হাজার অফিসারের বিরুদ্ধে অশালিন আচরণ, চুরি, ছিনতাই, নেশাগ্রস্ত হয়ে ড্রাইভিং, পুলিশের পরিচয় দিয়ে যৌন হামলা কিংবা কর্তব্য পালনে গড়িমসির অভিযোগে তদন্ত হয়েছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় লোকজনের সাথে মিথ্যাচারের অভিযোগ এবং মাদক বহনের অভিযোগও ছিল অনেকের বিরুদ্ধে।
দায়েরকৃত মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তদন্তে পাওয়া তথ্য বিনষ্ট অথবা গোপন করার সাথে জড়িত থাকার ব্যাপারেও উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হয়েছে অসংখ্য অফিসারের বিরুদ্ধে। উদ্বেগজনক এসব তথ্য উদঘাটিত হয়েছে ‘ইউএসএ টুডে’র নেটওয়ার্কের অনুসন্ধানী জরিপে।
জননিরাপত্তা নিশ্চিত এবং জনসাধারণের বন্ধু হিসেবে কাজের শপথ গ্রহণকারী পুলিশ অফিসার কর্তৃক এহেন অসাদাচরণের অভিযোগগুলোর নিষ্পত্তি কীভাবে হয়েছে সে ব্যাপারেও গবেষণা চালিয়েছে ইউএসএ টুডে নামক জাতীয়ভিত্তিক এই গণমাধ্যম। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, উপরোক্ত তদন্তের নথি অধিকাংশ সময়েই গায়েব হয়ে গেছে। আর এসব নথি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যতিত অন্য কোনো দফতরের কেউ খুব কম সময়েই দেখার সুযোগ পেয়েছে।
পুলিশ ইউনিয়ন এবং তাদের রাজনৈতিক মিত্ররা অত্যন্ত যত্নের সাথে এসব তদন্ত রিপোর্ট গোপন করেছেন অথবা সর্বসাধারণের নজরে না আসার প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছেন বলেও ইউএসএ টুডে অবহিত হয়েছে।
শিকাগোভিত্তিক এনজিও ‘ইনভিজিবল ইনস্টিটিউট’ এবং ইউএসএ টুডের দেশব্যাপী শতাধিক বার্তা কক্ষের সাংবাদিকরা গত এক বছরে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোকজনের অসাদারণ এবং সর্বসাধারণের সাথে অশালিন আচরণের এসব তথ্য উদ্ধার করেছে।
অঙ্গরাজ্য, সিটি প্রশাসন, প্রসিকিউটর, পুলিশ ডিপার্টমেন্ট এবং শেরিফ থেকে সংগৃহিত দুই লক্ষাধিক অফিসারের বিরুদ্ধে তদন্তের নথি তারা পেয়েছেন। এর অধিকাংশই গোপন রাখা হয়েছে। এর মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার অভিযোগের তদন্ত হয়েছে শতাধিক ডিপার্টমেন্টের মাধ্যমে। ৪৪ অঙ্গরাজ্যের ৩০ সহস্রাধিক অফিসারকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
অনুসন্ধানে উদঘাটিত হয় যে, ক্ষমতার অপব্যবহারের ২২,৯২৪, ধর্ষণের অভিযোগ ছিল ৩১৪৫টি, ২৩০৭টি পারিবারিক সহিংসতা এবং শিশু নির্যাতন ও যৌন হামলার হাজারো অভিযোগে ওই সব তদন্ত হয়েছে। দায়িত্ব পালনকালে মিথ্যা এবং অসততার অভিযোগ ছিল অগণিত। বিচারে বিঘ্ন ঘটানো, তদন্ত রিপোর্ট পরিবর্তন, মিথ্যা রিপোর্ট তৈরির হদিসও উদঘাটিত হয় ডিপার্টমেন্টাল তদন্তে। ৪১৮ জন অফিসার ব্যক্তিস্বার্থে তদন্তে বাধা দিয়েছেন। ক্ষেত্র বিশেষে তারা নিরাপরাধ এবং নিরীহ লোকজনকে টার্গেট করে তদন্ত চালিয়েছেন। ১৪ মে প্রকাশিত হয়েছে এসব তথ্য।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম