নাফ নদী অতিক্রম করতে দুঃসাহসিক হয়ে উঠেছে রোহিঙ্গারা। গত কয়েকদিন ধরে প্লাস্টিক-বাঁশ ও কাঠ দিয়ে ভেলা তৈরি করে নাফ নদী পাড়ি দিয়ে এপারে চলে আসছে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুরা।
নাফ নদীর পাশাপাশি ফের সাগর পথেও ঝুঁকি নিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। কোন ভাবেই থামছেই না রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ। এক শ্রেণির দেশীয় দালালরা ফিশিং বোট করে এসব রোহিঙ্গাদের নিয়ে আসছে। এছাড়া নৌকা না পেয়ে ও বোট ভাড়া না থাকায় অনেকে ভেলা ভাসিয়ে এপারে এসেছে। সাবরাংয়ের নয়াপাড়ার নাফ নদী সীমান্তে পয়েন্ট দিয়ে আজ বিকালে দু'টি রোহিঙ্গা বোঝাই ভেলা ভিড়েছে। দু'টি ভেলায় ৮৮ জন রোহিঙ্গা রয়েছে। গত বুধবার একটি ভেলায় ৫২ জন, বৃহস্পতিবার ৩ টি ভেলায় ১৩০ জন ও শুক্রবার ১০ টি ভেলায় ৫৪৪ জন রোহিঙ্গা এপারে এসেছিল। এছাড়াও প্লাস্টিকের জার নিয়ে নাফ নদী সাঁতরিয়ে প্রায় ৩৫ জন রোহিঙ্গা যুবক আসে।
এসব দুঃসাহসিক রোহিঙ্গারা জানিয়েছেন, তাদের কাছে নৌকা ভাড়ার প্রয়োজনীয় অর্থ নেই। রাখাইনের ধংখালী বালুচরে রোহিঙ্গারা এপারে আসতে জড়ো হয়ে আছে। সেখানে দুর্ভোগ ও নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ায় খবর পৌঁছাতে এভাবে চলে আসছে। জানা গেছে, উখিয়া-টেকনাফে বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে দেড় হাজারের অধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। আজ বিকাল ৩টার দিকে দু'টি ভেলায় ৮৮ জন ও ভোর রাত থেকে পালংখালীর আন্জুমান সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এক হাজার ও টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে আরও ৫’শ এর বেশি রোহিঙ্গা নৌকায় এপারে ঢুকেছে। মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে শাহপরীরদ্বীপের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে দলেদলে রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকলেও আজকে কমছে বলে জানিয়েছেন আইওএম'র গননাকারি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন। তিনি আরও বলেন, সকাল থেকে ২০ জনের মতো রোহিঙ্গাদের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এদিকে, রুট পরিবর্তন করে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের মহেশখালীয়া পাড়া সাগর পয়েন্ট দিয়ে ৫ শতাধিক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
পালংখালী ইউনিয়নের মেম্বার সোলতান আহমদ জানান, রাতের বেলায় এক হাজার মতো রোহিঙ্গা নাফ নদীর আনজুমান সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে এপারে ঢুকেছে।
সাবরাং নয়াপাড়া বিজিবি বিওপির কোম্পানি কমান্ডার আতিকুর রহমান জানান, অনুপ্রবেশকৃত এসব রোহিঙ্গাদের তল্লাশি শেষে বিভিন্ন ক্যাম্পে পাঠানো প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার