ঘরে ঢুকে চৌকির নিচে ব্যাগ রাখার সঙ্গে সঙ্গে পল্টুর মনে হলো ইশশ... ভুল হয়ে গেল। এভাবে ফেসবুকে চাকরিজীবী বন্ধুদের পোস্ট দেখে ঝোঁকের মাথায় বাড়ি থেকে চলে আসাটা ঠিক হয়নি। লকডাউনে গ্রামের বাড়িতেই সে ভালো ছিল। শুয়ে-বসে দিন কাটানো। ঘুমায়, ফেসবুক মিম শেয়ার করে, সিনেমা দেখে, আবার মিম শেয়ার করে, ঘুমানো। তিন বেলা চাওয়ার আগেই গ্রাহকের মুখের সামনে ভাত-তরকারি চলে আসে, ঢাকায় সেই সৌভাগ্য নেই। সেখানে সকালে ঘুম থেকে জেগে আগে বুয়াকে ফোন দিতে হয়। অধিকাংশ সময়েই বুয়া কল রিসিভ করেন না। যেদিন বুয়া কল ধরেন না সেদিন নিজেদেরই রান্না চড়াতে হয়। কেউ কেউ হোটেল থেকে খেয়ে আসে। সেটাও খরচের বিষয়। খাবারের পেছনে সব খরচ করে ফেললে দৈনিক ইন্টারনেটের বিলের জোগান আসবে কীভাবে? একবেলা ভাত না খেয়ে কাটিয়ে দেওয়া সম্ভব কিন্তু মেগাবাইট ছাড়া এক মুহূর্ত টিকে থাকা সম্ভব নয়। বাকিরা কেউ আসেনি, সে একা চলে এসেছে। গত দুই দিন ধরে গ্রুপ চ্যাটে তার চাকরিজীবী বন্ধুরা আলোচনা করছিল, শহরে ফিরে আসবে। কারণ অধিকাংশ অফিস খুলে দেওয়া হয়েছে। ওদের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে পল্টুও শহরে চলে এলো। যদিও অন্যদের মতো পল্টুর শহরে কোনো কাজ নেই। অন্যদের অফিস আছে, কারও টিউশনি আছে অথবা গার্লফ্রেন্ডকে সময় দিতে হয়। পল্টুর এসব কিছুই করতে হয় না। সে পুরোদস্তুর বেকার। লকডাউনের আগে একটা অফিসে অবশ্য সে জয়েন করেছিল। দুই দিন সকাল সকাল অফিসে যাওয়ার পর অফিস কর্তৃপক্ষ বুঝেছে তার আসলে অফিস অপেক্ষা সকালের ঘুমটা জরুরি। তৃতীয় দিন তাকে বের করে দেওয়া হয়। আজ সকালে বুয়াকে ফোন দিয়ে পল্টু শুনল বুয়া বাড়িতে চলে গেছে। এক মাস আর ফিরবেন না। ওদিকে মোড়ে কালামের খাবারের হোটেলও বন্ধ। কালাম বাবুর্চি নিজেই শাটার ফেলে বাড়ি চলে গেছে। দুই রুমমেট মেসে না ওঠে আত্মীয়দের বাসায় উঠেছে। লকডাউন সময়টা তারা ওখানেই কাটাবে। পল্টু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। কিছু সময় চিৎ হয়ে শুয়ে থাকে আচমকা সে লাফ দিয়ে ওঠে বসল। লকডাউনের আগে মেসের বিপরীত দিকের বাড়ির জানালার ধারে এক তরুণীর সঙ্গে তার কয়েকবার চোখাচোখি হয়েছে। প্রতিদিন বিকালে সেই তরুণী বই নিয়ে জানালার কাছে টেবিলে পড়তে বসে। ঘটনা আগানোর আগেই লকডাউনের কারণে তাকে বাড়ি চলে যেতে হয়। এখন এসেই যখন পড়েছে সে ঠিক করল, প্রেমটা এবার করেই ফেলবে। উত্তেজিত পল্টু জানালার কাছে এসে দাঁড়ায়। কাউকে দেখা যাচ্ছে না। পল্টু চেয়ার টেনে জানালার ধারে বসেছে। এরই মধ্যে সে একটা কাগজে নিজের মোবাইল নম্বর লিখে এক টুকরো ইটের সঙ্গে কাগজটা বেঁধে ফেলেছে। তরুণীকে জানালার ধারে দেখলেই তার দিকে ইট ছুড়ে মারবে। তারপর ফোনে প্রেম। দুপুর গড়িয়ে বিকাল, বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা, তরুণীর দেখা নেই। ঘুমে তার চোখটা লেগে আসতে লাগল। সন্ধ্যার পর তরুণীদের বাসার ছাদে আলো জ্বলে ওঠে, ছাদভর্তি লোক, সেখানে স্টেজ সাজানো হচ্ছে, চার ধারে সাজ সাজ রব। সেই তরুণী বিয়ের সাজে স্টেজে বসে আছে। মুখে হাসির বন্যা। পাশেই জামাই বেশে এক লোক নাকে রুমাল চেপে ধরে আছে। তাদের পেছনে স্টেজের দেয়ালে বড় করে লেখা, ‘শুভ বিবাহ’। কিন্তু এ সময় তো জনসমাগম করা ঠিক না। কাজটা ঠিক হলো না। পল্টু স্বপ্ন দেখছে কিনা কে জানে? স্বপ্ন না দেখলে তার একটা মাইক নিয়ে বিষয়টা জানানো দরকার, তাই না?
শিরোনাম
- সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- হাসপাতালে ভর্তি খালেদা জিয়া
- সাদিয়া আয়মানের অভিনয়ে মুগ্ধ অনিরুদ্ধ রায়
- গাইবান্ধা কারাগারে অসুস্থ হয়ে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
- আদাবরের শীর্ষ ছিনতাইকারী ‘চোরা রুবেল’ গ্রেপ্তার
- জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষে ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
- শিক্ষার্থীদের বাড়ি পৌঁছে দিতে বিভাগীয় শহরে বাস দিল জবি
- ভূমিকম্প অনিশ্চিত তাই বিদ্যালয় বন্ধের সুযোগ নেই: প্রাথমিক শিক্ষা উপদেষ্টা
- ঢাকা মেডিকেলে একাডেমিক কার্যক্রম আগামী ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ
- বাগেরহাটে ৩ বান্ধবীকে শ্লীলতাহানি ও একজনকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা
- হাসিনা-কামালকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি দেওয়া হয়েছে : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
- পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটিতে বিবিএ কার্নিভাল-৩ অনুষ্ঠিত
- নভেম্বরের ২২ দিনে রেমিট্যান্স এলো ২১৩ কোটি ডলার
- ফ্যাসিজম সহ্য করা হবে না, নিজেরাও ফ্যাসিষ্ট হবো না: তানিয়া রব
- বন্ধ কারখানা চালুর দাবিতে শ্রমিকদের মানববন্ধন
- ৮১ দেশি পর্যবেক্ষকের সঙ্গে ইসির সংলাপ ২৫ নভেম্বর
- ‘ফ্যামিলি ম্যান থ্রি’: মনোজ নয়, জয়দীপের সিজন?
- টিকটক ইউজারদের জন্য চালু হলো টাইম অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং ফিচার
- পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেপ্তার দাবিতে মানববন্ধন
- বাংলাদেশের কাল ব্রুনাই চ্যালেঞ্জ
স্বপ্ন দেখতে গিয়ে
রাফিউজ্জামান সিফাত
প্রিন্ট ভার্সন
টপিক
সর্বশেষ খবর