শনিবার, ২৯ মে, ২০২১ ০০:০০ টা
ভারতের সম্মানজনক ‘সায়েন্টিস্ট অব দ্য ইয়ার’ পেলেন

বর্ষসেরা বিজ্ঞানী বাংলাদেশি কাওছার

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে এটি আমার সপ্তম আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড এবং এ নিয়ে মোট ১১টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আমার মোট ৪১টি গবেষণাপত্র বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে...

জামশেদ আলম রনি

বর্ষসেরা বিজ্ঞানী বাংলাদেশি কাওছার

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও তরুণ বিজ্ঞানী আহমেদ কাওছার ‘সায়েন্টিস্ট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন। সম্প্রতি ভারতের ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট আয়োজিত ‘সায়েন্স, রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন’ ক্যাটাগরিতে তিনি এই অ্যাওয়ার্ড পান। মোট ২০টি ক্যাটাগরির মধ্যে ‘সায়েন্স, রিসার্চ ও ইনোভেশন’ ক্যাটাগরিতে বর্ষসেরা গবেষক নির্বাচিত হয়েছেন কাওছার। চলতি বছরের পাশাপাশি গত বছর তাঁর করা সব গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তাঁকে ‘সাইন্টিস্ট অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত করা হয়।

বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বিষয়টি নিজেই নিশ্চিত করে আহমেদ কাওছার জানান, করোনা পরিস্থিতির জন্য ভার্চুয়াল সেমিনারের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে এ বছরের ‘গ্লোবাল ইনোভেশন অ্যান্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ডের’ ফলাফল জানানো হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে এর নমিনেশন শুরু হয়। ১০০ প্রতিযোগীকে তাদের ফিল্ডে ২০টি ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠ অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার কথা জানিয়ে এক মাস আগে অন্য সবার সঙ্গে তাঁকেও নমিনেশন দেন আয়োজকরা। নির্দেশনা অনুযায়ী তিনিও অন্যান্য প্রতিযোগীর সঙ্গে যোগ দেন। এর মধ্যে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করায় সায়েন্স, রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন ক্যাটাগরিতে এই অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন কাওছার। তিনি আরও বলেন, প্রায় কয়েক হাজার লোককে নমিনেশন দেন আয়োজকরা। তবে তিনি কখনো ভাবেননি যে তিনি ‘সায়েন্টিস্ট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড’ পাবেন। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। এর কারণ হিসেবে তিনি জানান, সেখানে যারা প্রতিযোগী হিসেবে অংশগ্রহণ করেছিলেন তাঁদের বেশির ভাগই সায়েন্টিস্ট, প্রফেসর ও গবেষক। এ ছাড়া তাঁদের অনেকের ২০-৩০ বছরেরও এক্সপেরিমেন্ট রয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিবছর এই অ্যাওয়ার্ডটি আন্তর্জাতিক একটি সেমিনারের মাধ্যমে দেওয়া হয়। এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে বিলম্বিত হওয়ায় ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা করা হয়েছে। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আন্তর্জাতিক সেমিনারের মাধ্যমে সবাইকে অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন কাওছার। এমন অসাধারণ অর্জনে কাওছার আরও বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সহস্রাধিক গবেষক এতে অংশ নেন। গত ২৫ মে তারা চূড়ান্তভাবে ফলাফল জানায়। এই অ্যাওয়ার্ড পেয়ে আমি খুব আনন্দিত।

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করে এটি আমার সপ্তম আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড এবং এটি নিয়ে মোট ১১টি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আমার মোট ৪১টি গবেষণাপত্র বিভিন্ন জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।’ বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপকালে তিনি তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানান। তরুণ এ বিজ্ঞানী বলেন, ভবিষ্যতে আমি দেশের জন্য অনেক কিছু করতে চাই। দেশকে আরও ডিজিটাল করার জন্য ভূমিকা রাখতে চাই, যাতে আমাদের দেশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারে। মনে হচ্ছে পরিশ্রম কখনো বৃথা যায় না। সামনে অনেক ভালো কিছু করতে চাই যাতে দেশকে ভালোভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি। সবার সহযোগিতা ও দোয়া নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। পরিবার বন্ধু, শিক্ষকদের কৃতজ্ঞতা জানাই। কাওছার নোবিপ্রবির ফলিত গণিত বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। তিনি পিএইচডির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের স্টিভেন্স ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এসআইটি) থেকে প্রভোস্ট ডক্টরাল ফেলোশিপ অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি হিসাব লিমিটেডে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সায়েন্টিস্ট হিসেবে কাজ করছেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের এসআইটিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নোবিপ্রবির সাবেক এই শিক্ষার্থী এর আগেও সিঙ্গাপুর, মরক্কো, ভারত ও বাংলাদেশ থেকে বেস্ট রিসার্চার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন। রবি আর ভেঞ্জার ২ তে হয়েছিলেন চ্যাম্পিয়ন। ২০১৯ সালে আয়োজিত  ন্যাশনাল বেসিস আইসিটি অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি।

সর্বশেষ খবর