শিরোনাম
শনিবার, ১ অক্টোবর, ২০২২ ০০:০০ টা
ফ্রিল্যান্সিং

দেড় হাজার তরুণের কর্মসংস্থান করলেন সায়েম

নজরুল মৃধা, রংপুর

দেড় হাজার তরুণের কর্মসংস্থান করলেন সায়েম

মুক্ত আয়ের মাধ্যমে প্রায় দেড় হাজার তরুণকে যুক্ত করেছেন আবু সায়েম। ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিংয়ের কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি পথ দেখিয়ে চলছেন সায়েম। তিনি প্রত্যন্ত এলাকায় থেকে ফ্রিল্যান্সিংয়ে অন্যদেরও প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। তার দেখানো পথে হেঁটে এলাকার অনেক তরুণ-তরুণী স্বাবলম্বী হয়েছেন। এখন তাদের অনেকেরই আয় মাসে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। আর সায়েমের নিজের বার্ষিক আয় দাঁড়িয়েছে ১০ লাখের কাছাকাছি।

সায়েম জানালেন, ২০১৬ সালে ইন্টারনেটে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করেন। নিভৃত গ্রামে একবুক স্বপ্ন নিয়ে নিজের নামে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেন। তখন প্রশিক্ষণার্থী সংখ্যা ছিল মাত্র পাঁচজন। নেটওয়ার্ক সমস্যাসহ প্রশিক্ষণার্থীর সংখ্যা কম থাকায় কিছুটা হোঁচট খান সায়েম। তবে হাল ছাড়েননি তিনি। পড়াশোনাসহ ব্যক্তিগত কারণে পরের বছরই রংপুর শহরে পা রাখেন সায়েম। এরপর তাকে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। দীর্ঘ ছয় বছরের কঠোর পরিশ্রম করে এখন তিনি সফল।

বেকারত্ব দূরীকরণে ভূমিকা রাখার আগ্রহের কথা জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বেকারত্ব একটা অভিশাপ। আমি চাই এ প্রজন্মের ছেলেমেয়েরা ফ্রিল্যান্সিং শিখুক। পড়ালেখার সঙ্গে সঙ্গে নিজেরা কিছু করতে চাইলে ফ্রিল্যান্সিং সুবিধা নেওয়া উচিত। প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে কাজ করতে পারলে বেকারত্ব ঘোচানো সম্ভব।

এখন শহরের পাশাপাশি সায়েম তার নিজের গ্রামের তরুণদের আবারও ফ্রিল্যান্সিং শেখাতে শুরু করেছেন। রংপুর বিভাগীয় নগরীতেও নিজের নামে গড়ে তুলেছেন দুটি ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এখান থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, এসইও (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন), লিড জেনারেশন, সিপিএ মার্কেটিং, কন্টেন্ট মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিংসহ আউটসোর্সিংয়ে বিভিন্ন মাধ্যম সম্পর্কে তরুণ-তরুণীরা উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। বর্তমানে সায়েমের একাডেমিতে অর্ধশত শিক্ষার্থী ফ্রিল্যান্সিং বা আউটসোর্সিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। আর গত ছয় বছরে তার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ৫ হাজার শিক্ষার্থী ফ্রিল্যান্সিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। কাজ শুরু করেছেন দেড় হাজারের বেশি তরুণ-তরুণী। যাদের অনেকেই এখন স্বাবলম্বী।

গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর সায়রাবাড়ি গ্রামের আবদুল গফুরের ছেলে সামিউল ইসলাম বলেন, ডিপ্লোমাতে পড়ছি। পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং করছি। শহরে থাকা খাওয়ার পরও মাসে ১০-১২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার আলমবিদিতর ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের মৃত আবদুল আউয়ালের ছেলে আবু সায়েম। ছয় ভাই-বোনের সংসারে সায়েম পঞ্চম। বাবা মারা যাওয়ার পর দিশাহারা ছিল পুরো পরিবার। তখনই কিছু করার ইচ্ছা থেকে সায়েম ঝুঁকে পড়েন ইন্টারনেটে। সারা দিন গুগল ও ইউটিউবসহ বিভিন্ন সাইট ঘেঁটে ঘেঁটে ফ্রিল্যান্সিংয়ের ধারণা রপ্ত করতে থাকেন তিনি। চলতি বছর রংপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পাস করেছেন।

সর্বশেষ খবর