শনিবার, ২৭ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

হারিকেনের আলোয় ৫০ বছর ধরে চিকিৎসাসেবা

মেঘ, বৃষ্টি, ঝড়-তুফানেও তিনি হারিকেন জ্বালিয়ে নিজ এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছেন। চিকিৎসায় হাতযশ ভালো হওয়ায় তিনি এলাকায় খুবই জনপ্রিয় বলে জানান স্থানীয়রা

ফারুক আল শারাহ, লাকসাম

হারিকেনের আলোয় ৫০ বছর ধরে চিকিৎসাসেবা

হারিকেন গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রতীকগুলোর মধ্যে অন্যতম। শৈশবে বিদ্যুৎবিহীন গ্রামের আলোর চাহিদা মিটানো বা অন্ধকার দূর করার একমাত্র অবলম্বন ছিল হারিকেন। সময়ের ব্যবধানে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় সেই হারিকেন আজ বিলুপ্তির পথে। বর্তমান প্রজন্মের কাছে আশ্চর্য এক প্রতীক হারিকেন। বর্তমান ডিজিটাল যুগের সব অত্যাধুনিক আবিষ্কারকে তোয়াক্কা না করে পুরনো দিনের সেই ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন পল্লী চিকিৎসক আবদুল মান্নান (৭০)। হারিকেন জ্বালিয়ে অর্ধশতাধিক বছর ধরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সেবা করে যাচ্ছেন তিনি। আবদুল মান্নান মনোহরগঞ্জ উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের বাসিন্দা। এলাকায় তিনি মান্নান ডাক্তার নামে পরিচিত। মেঘ, বৃষ্টি, ঝড়-তুফানেও তিনি হারিকেন জ্বালিয়ে নিজ এলাকার কয়েকটি গ্রামের মানুষকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসায় হাতযশ ভালো হওয়ায় তিনি এলাকায় খুবই জনপ্রিয় বলে স্থানীয়রা জানান।

পল্লী চিকিৎসক আবদুল মান্নান বলেন, আমি পুরনো মানুষ। রোগী দেখি পুরাতন পদ্ধতিতে; যা আমার ওস্তাদ (শ্বশুর) কালা মিয়া ডাক্তার শিখিয়েছেন। বিদ্যুৎ আর সোলারের প্রতি আমার বিশ্বাস নেই। কারণ এগুলো কখন যায় আর কখন আসে তার কোনো গ্যারান্টি নেই। আমার হারিকেনের গ্যারান্টি আছে। একবার তেল ঢুকালে দুই রাত জ্বলবে নিশ্চিত। আর এটি জ্বালালে আলো চলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তাই তো হারিকেনের প্রতিই আমার শতভাগ আস্থা। পল্লী চিকিৎসক আবদুল মান্নানের পুরনো ঐতিহ্য ধরে রাখার প্রশংসা করেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, বর্তমান সময়ে এসেও হারিকেন জ্বালিয়ে অর্ধশত বছর ধরে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ঘটনা বিরল। তাঁর মাধ্যমে অনেক মানুষ চিকিৎসাসেবা পেয়ে উপকৃত হয়েছেন যা প্রশংসার দাবিদার।

সর্বশেষ খবর