ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে কানাডায় ব্যবসা ও প্রযুক্তি জীবনের কেন্দ্রে অবস্থান করছে টরন্টো। এখানে তরুণরা নানা উদ্ভাবনী ধারণা, উদ্ভাবনী উদ্যোগ (স্টার্টআপ) নিয়ে কাজ করছেন, যা ভবিষ্যৎ দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেবে।
বিখ্যাত বিজনেস জার্নাল ফোর্বস ‘৩০ অনূর্ধ্ব ৩০’ তরুণ সফল ব্যক্তিত্বের তালিকা প্রকাশ করে। ব্যবসা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখা ৩০ বছরের কম বয়সী ৩০ জনকে নিয়ে তালিকাটি তৈরি করা হয়। এতে কানাডা প্রবাসী বাংলাদেশি গবেষক ও উদ্যোক্তা নবনীতা নাওয়ার স্থান পেয়েছেন। এই তালিকায় একমাত্র বাংলাদেশি নবনীতা। গত বুধবার এক প্রতিবেদনে তালিকাটি প্রকাশ করে ফোর্বস। এ তালিকা সম্পর্কে ফোর্বসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, ৩০ বছরের কম বয়সী টরন্টোর ৩০ তরুণ নেতার সঙ্গে পরিচিত হয়ে নিন। তাদের কেউ শহরে নিরাপদ ড্রোন চলাচলে সহায়তা করেন, কেউ উচ্ছিষ্ট খাবার প্লাস্টিকের বিকল্প বানান, কেউবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে লেখা শনাক্তকারী নির্মাণসামগ্রী তৈরি করেন। টরন্টোকেন্দ্রিক প্রথম এই তালিকায় আর্থিক, প্রযুক্তি, বিজ্ঞান, ক্রীড়া ও কলা ক্ষেত্রে সফল তরুণদের নির্বাচিত করা হয়েছে।
এইচড্যাক্স থেরাপিউটিকস নামে টরন্টোভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার নবনীতা নাওয়ার। ২৮ বছর বয়সী নবনীতা প্রতিষ্ঠানটির সহপ্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া তার সঙ্গে আছেন আরেক সহপ্রতিষ্ঠাতা থাই বংশো™ূ¢ত পিমুয়াপা মানসিয়ংকুল। ২৮ বছর বয়সী দুজনকেই তরুণ গবেষক ও উদ্যোক্তার তালিকায় রেখেছে ফোর্বস। এতে তালিকার ২৩ নম্বরে রাখা হয়েছে দুই তরুণ গবেষককে।
১৯৯৪ সালের ১১ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন নবনীতা। কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পড়তে যান এক দশক আগে। বর্তমানে এইচডিএক্স থেরাপিউটিকসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নবনীতা। ঢাকার আগা খান স্কুল থেকে এ-লেভেল উত্তীর্ণ হয়ে নবনীতা ২০১৩ সালে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে আংশিক বৃত্তি নিয়ে স্নাতক পড়তে যান। তার বিষয় ছিল বায়োমেডিকেল কেমিস্ট্রি। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মেডিসিনাল কেমিস্ট্রিতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পাশাপাশি গবেষণা কাজ চালিয়ে যান তিনি। ২০২১ সালে গড়ে তোলেন এইচড্যাক্স থেরাপিউটিকস।
ফোর্বসের তালিকায় নবনীতা ও পিমুয়াপার নাম ও ছবি উল্লেখ করে এইচড্যাক্স থেরাপিউটিকস সম্পর্কে লেখা হয়েছে- এইচড্যাক্স থেরাপিউটিকস এই প্রথমবারের মতো পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির (পিএন) চিকিৎসা বা ওষুধের উন্নয়ন করছে, যা বিশ্বের ৩ কোটির বেশি মানুষের কাজে আসবে। ক্যান্সার চিকিৎসার জন্য নেওয়া কেমোথেরাপি, ডায়াবেটিস, কোনো আঘাত বা জিনগত কারণে ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুর কারণে ব্যথা, বোধহীনতা, পক্ষাঘাত ও চলনহীনতায় ভোগেন পিএন রোগীরা। এই রোগের এখনো কোনো ওষুধ নেই, যা এই রোগের বেড়ে ওঠাকে ঠেকাতে পারে।
ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে কানাডায় ব্যবসা ও প্রযুক্তিজীবনের কেন্দ্রে অবস্থান করছে টরন্টো। এখানে তরুণরা নানা উদ্ভাবনী ধারণা, উদ্ভাবনী উদ্যোগ (স্টার্টআপ) নিয়ে কাজ করছেন, যা ভবিষ্যৎ দুনিয়াকে তাক লাগিয়ে দেবে। সে কারণেই টরন্টোর জন্য আলাদা তালিকা করেছে ফোর্বস।
উল্লেখ্য, পাঁচ বছরের গবেষণার পর ইউনিভার্সিটি অব টরন্টোতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এইচডিএক্স। যা পিএচডি ডিগ্রিধারী উদ্যোক্তাদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। এরই মধ্যে নতুন ওষুধ আবিষ্কারের জন্য ৮ লাখ মার্কিন ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি।