মানুষের মন বড় বিচিত্র। তাকে কাছ থেকেই ধরা যায় না। বোঝা যায় না কখন সেখানে হয় কোন রঙের বিচ্ছুরণ। তবে এবার নতুন দাবি নিয়ে হাজির এক দল বিজ্ঞানী। তারা বলছেন, এবার নাকি দূর থেকেও করা যাবে অন্যের মনের নিয়ন্ত্রণ।
দূর থেকে অন্যের মন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম যন্ত্র তৈরির দাবি করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার ইনস্টিটিউট ফর বেসিক সায়েন্সের (আইবিএস) বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, চৌম্বক ক্ষেত্র ব্যবহার করে দূর থেকে মস্তিষ্ককে নির্দিষ্ট কাজের নির্দেশনা দিতে পারে তাদের এই মন নিয়ন্ত্রণ বা মাইন্ড কন্ট্রোল যন্ত্রটি। এরই মধ্যে ইঁদুরের ওপরে যন্ত্রটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়েছে।
আইবিএসের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত যন্ত্রটি মূলত মস্তিষ্কের নিউরনকে চৌম্বক ক্ষেত্রের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে। এই কৌশলকে ম্যাগনেটো-মেকানিক্যাল জেনেটিকস (এমএমজি) বা ব্রেন-মডুলেটিং প্রযুক্তিও বলা হয়।
যন্ত্রটি কাজে লাগিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে নারী ইঁদুরের ওপর চুম্বকীয় উদ্দীপনা ব্যবহার করে একটি গোলকধাঁধার হারিয়ে যাওয়া ইঁদুর খুঁজতে সংকেত পাঠান। নির্দেশ পাওয়ার পর মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত ইঁদুর অন্য ইঁদুরের তুলনায় দ্রুত কাজটি করতে সক্ষম হয়। এছাড়া যন্ত্রের মাধ্যমে সংকেত পাঠিয়ে কিছু ইঁদুরকে কম খাওয়ার সংকেত পাঠান বিজ্ঞানীরা। কিছুদিন পর দেখা গেছে, সংকেত পাওয়া ইঁদুরগুলোর ওজন গড়ে ১০ শতাংশ কমেছে।
এ বিষয়ে রসায়ন ও ন্যানোমেডিসিন বিজ্ঞানী চিয়ন জিনউ বলেন, চুম্বক ক্ষেত্র ব্যবহার করে মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অঞ্চলকে অবাধে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এটি বিশ্বের প্রথম প্রযুক্তি। তার দাবি, মস্তিষ্কের বিভিন্ন কাজ বুঝে নিউরাল নেটওয়ার্ক উন্নয়নসহ বিভিন্ন স্নায়বিক রোগের চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে এই যন্ত্র ব্যবহার করা যাবে।
ডাক্তার চিয়ন এবং তার দল লিখেছেন, প্রযুক্তিটি স্বাস্থ্য গবেষকদের বুঝতে সাহায্য করার জন্য এটির সবচেয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবহারে খুঁজে পাবে মস্তিষ্কের কোন অংশ এবং বাকি স্নায়বিক সিস্টেম কোন মেজাজ এবং অন্যান্য আচরণের জন্য দায়ী।
কিন্তু ন্যানো-মাইন্ড উদ্ভাবন এবং এর জিন-প্রতিস্থাপনের দিক সম্পর্কে তার মতামতের অংশে, স্পেনের ডাঃ লেরয় মানুষের পরীক্ষায় খুব তাড়াতাড়ি না যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করেছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল