উত্তপ্ত নেপচুনের মতো নতুন এক এক্সোপ্ল্যানেট বা আামাদের সৌরজগতের বাইরের গ্রহ আবিষ্কার করেছেন নাসা’র জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা, যেটি এক বামন তারা এর আশপাশের কক্ষপথে ঘুরছে বলে দাবি তাদের।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র স্পেস টেলিস্কোপ ট্রানজিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট বা টেস ব্যবহার করে ‘টিওআই-৩২৬১ বি’ নামের এক্সোপ্ল্যানেটটি আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে।
গবেষকরা বলছেন, এখন পর্যন্ত এ ধরনের যতগুলো এক্সোপ্ল্যানেট আবিষ্কৃত হয়েছে তার মধ্যে ‘টিওআই-৩২৬১ বি’-এর অবস্থান চতুর্থ। আর এ ধরনের এক্সোপ্ল্যানেট কীভাবে তৈরি হয়েছে তা গবেষণার জন্য আদর্শ প্রার্থী হতে পারে এটি।
গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল’-এ, যেখানে এক্সোপ্ল্যানেটের আচরণ সম্পর্কে বিশদ বর্ণনা করেছেন গবেষকরা।
গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ‘অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ডের জ্যোতির্বিজ্ঞানী এমা নাবি।
পৃথিবী থেকে ৯৭৯ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত এই এক্সোপ্ল্যানেট। প্রতি ২১ ঘণ্টায় নিজের থেকে ২৫ লাখ কিলোমিটার দূরে থাকা এক কমলা রঙের বামন তারা’কে প্রদক্ষিণ করে চলেছে এটি। আকারে আমাদের সৌরজগতের গ্রহ নেপচুনের সমান ‘টিওআই-৩২৬১ বি’। তবে নেপচুনের চেয়ে এটি দ্বিগুণ ঘন এবং পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৩০ গুণ ভারী বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট কসমস।
এ ধরনের ‘ইউএসপি’ বা বর্ণহীন, অদাহ্য ও সামান্য অম্লীয় গ্যাস দিয়ে তৈরি দানবাকার বিভিন্ন গ্রহ কীভাবে তৈরি হয় তা বোঝার ক্ষেত্রে চাবিকাঠি হতে পারে এই এক্সোপ্ল্যানেট। কম্পিউটার মডেলিং থেকে জানা গেছে, এক্সোপ্ল্যানেট ও এর তারার বয়স প্রায় ৬৫০ কোটি বছর, যা আমাদের সৌরজগতের চেয়ে ২০০ কোটি বছর পুরোনো।
সম্ভবত অনেক বড় আকারের গ্যাসের দানব হিসাবে এক্সোপ্ল্যানেটির জীবন শুরু হলেও এর হালকা বিভিন্ন স্তর পরে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে এর কাছ থেকে। দুটি কারণে এমনটি ঘটতে পারে বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। প্রথমত, এর তারা থেকে শক্তির কারণে এক্সোপ্ল্যানেটির আলোক-বাষ্পীভবন ঘটার কারণে এমনটি হতে পারে। দ্বিতীয়ত, তারা থেকে মহাকর্ষীয় শক্তির কারণে গ্রহটিতে জোয়ার ভাটা তৈরি হওয়ার কারণেও এমন ঘটতে পারে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, সম্ভবত কাছাকাছি যাওয়ার আগে এক্সোপ্ল্যানেটটি এর তারা থেকে আরও দূরে তৈরি হয়েছিল। এ কারণেই নিজের বায়ুমণ্ডল ধরে রাখতে পেরেছে এক্সোপ্ল্যানেটটি। তবে এ নিয়ে এখনও বিশদ গবেষণা করেননি বিজ্ঞানীরা। উত্তপ্ত নেপচুনের মতো বিভিন্ন এক্সোপ্ল্যানেট বিরল হলেও প্রত্যেক গ্রহ’ই নিজেদের বিবর্তন ও চরম পরিবেশে টিকে থাকার রহস্য সম্পর্কে দিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ নানা সূত্র।
তথ্য সূত্র- নাসা সায়েন্স।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ